London ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮ মাসের বেতন নিয়ে ২০ লাখ কর্মীকে পদত্যাগের প্রস্তাব ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফেডারেল কর্মীদের জন্য একটি চমকপ্রদ প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। যেসব ফেডারেল কর্মী অফিসে ফিরতে চান না, তাদের জন্য স্বেচ্ছা পদত্যাগ প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মার্কিন সরকারের আকার ও ব্যয় কমানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) লক্ষাধিক কর্মীর ইমেইলে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ইমেইলে বলা হয়েছে, কর্মীদের ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা ‘পদত্যাগ প্রোগ্রামে’ অংশ নিতে চান কিনা। যদি তারা এই তারিখের মধ্যে পদত্যাগ করতে সম্মত হন, তাহলে তাদের প্রায় ৮ মাসের বেতন এককালীন প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হবে।

ট্রাম্প প্রশাসন আশা করছে, প্রায় ১০ শতাংশ কর্মী এই প্রস্তাব গ্রহণ করবেন, যা প্রায় ২ লাখ কর্মীর সমান। মার্কিন সরকারে বর্তমানে ২০ লাখেরও বেশি কর্মী কাজ করছেন। ট্রাম্পের সিনিয়র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবে।

যেসব কর্মী এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে চান, তাদের ইমেইলের সাবজেক্ট লাইনে ‘রিজাইন’ লিখে রিপ্লাই করতে বলা হয়েছে। এই প্রস্তাবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেতন ও অন্যান্য সুবিধা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে, পোস্টাল কর্মী, সেনা সদস্য, ইমিগ্রেশন অফিসার এবং কিছু জাতীয় নিরাপত্তা কর্মীদের এই প্রস্তাবের বাইরে রাখা হয়েছে।

মার্কিন সরকারের এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় বারবার সরকারের আকার ও ফেডারেল ব্যয় কমানোর অঙ্গীকার করেছিলেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি ইলন মাস্ক এবং ভিবেক রামাস্বামীকে ফেডারেল সরকারের নিয়ম, ব্যয় ও কর্মীসংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে একটি উপদেষ্টা বোর্ড গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন।

এই প্রস্তাবের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন সরকারের কর্মসংস্কৃতি ও দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে। তবে, এই সিদ্ধান্তের সমালোচনাও হয়েছে। ডেমোক্র্যাট নেতারা এই পরিকল্পনাকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।

এদিকে, মঙ্গলবারই যুবকদের লিঙ্গ পরিবর্তন সংক্রান্ত চিকিৎসা সীমিত করার লক্ষ্যে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আদেশের শিরোনাম হলো ‘ প্রোটেকটিং চিলড্রেন ফ্রম ক্যামিকেল এন্ড সার্জিক্যাল মাল্টিল্যাশন’। এতে ১৯ বছরের কম বয়সীদের ‘জীবন-পরিবর্তনকারী’ সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে, এই আদেশ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং আদালতে এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই ঘটনাগুলোর মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটনে এক উত্তপ্ত দিনের ইতি টেনেছে, যেখানে ট্রাম্পের জারি করা একটি মেমো এবং আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। এই মেমোতে ফেডারেল অনুদান, ঋণ ও অন্যান্য সহায়তা স্থগিত করার কথা বলা হয়েছিল, যা আদালত পরবর্তীতে স্থগিত করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তগুলো মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূচনা করেছে এবং আগামী দিনগুলোতে এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৭:০০:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
Translate »

৮ মাসের বেতন নিয়ে ২০ লাখ কর্মীকে পদত্যাগের প্রস্তাব ট্রাম্পের

আপডেট : ০৭:০০:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

ফেডারেল কর্মীদের জন্য একটি চমকপ্রদ প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। যেসব ফেডারেল কর্মী অফিসে ফিরতে চান না, তাদের জন্য স্বেচ্ছা পদত্যাগ প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মার্কিন সরকারের আকার ও ব্যয় কমানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) লক্ষাধিক কর্মীর ইমেইলে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ইমেইলে বলা হয়েছে, কর্মীদের ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা ‘পদত্যাগ প্রোগ্রামে’ অংশ নিতে চান কিনা। যদি তারা এই তারিখের মধ্যে পদত্যাগ করতে সম্মত হন, তাহলে তাদের প্রায় ৮ মাসের বেতন এককালীন প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হবে।

ট্রাম্প প্রশাসন আশা করছে, প্রায় ১০ শতাংশ কর্মী এই প্রস্তাব গ্রহণ করবেন, যা প্রায় ২ লাখ কর্মীর সমান। মার্কিন সরকারে বর্তমানে ২০ লাখেরও বেশি কর্মী কাজ করছেন। ট্রাম্পের সিনিয়র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবে।

যেসব কর্মী এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে চান, তাদের ইমেইলের সাবজেক্ট লাইনে ‘রিজাইন’ লিখে রিপ্লাই করতে বলা হয়েছে। এই প্রস্তাবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেতন ও অন্যান্য সুবিধা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে, পোস্টাল কর্মী, সেনা সদস্য, ইমিগ্রেশন অফিসার এবং কিছু জাতীয় নিরাপত্তা কর্মীদের এই প্রস্তাবের বাইরে রাখা হয়েছে।

মার্কিন সরকারের এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় বারবার সরকারের আকার ও ফেডারেল ব্যয় কমানোর অঙ্গীকার করেছিলেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি ইলন মাস্ক এবং ভিবেক রামাস্বামীকে ফেডারেল সরকারের নিয়ম, ব্যয় ও কর্মীসংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে একটি উপদেষ্টা বোর্ড গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন।

এই প্রস্তাবের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন সরকারের কর্মসংস্কৃতি ও দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে। তবে, এই সিদ্ধান্তের সমালোচনাও হয়েছে। ডেমোক্র্যাট নেতারা এই পরিকল্পনাকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।

এদিকে, মঙ্গলবারই যুবকদের লিঙ্গ পরিবর্তন সংক্রান্ত চিকিৎসা সীমিত করার লক্ষ্যে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আদেশের শিরোনাম হলো ‘ প্রোটেকটিং চিলড্রেন ফ্রম ক্যামিকেল এন্ড সার্জিক্যাল মাল্টিল্যাশন’। এতে ১৯ বছরের কম বয়সীদের ‘জীবন-পরিবর্তনকারী’ সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে, এই আদেশ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং আদালতে এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই ঘটনাগুলোর মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটনে এক উত্তপ্ত দিনের ইতি টেনেছে, যেখানে ট্রাম্পের জারি করা একটি মেমো এবং আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। এই মেমোতে ফেডারেল অনুদান, ঋণ ও অন্যান্য সহায়তা স্থগিত করার কথা বলা হয়েছিল, যা আদালত পরবর্তীতে স্থগিত করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তগুলো মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূচনা করেছে এবং আগামী দিনগুলোতে এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলবে বলে মনে করা হচ্ছে।