London ০২:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
সর্প দংশন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা পটুয়াখালীর নতুন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের খোঁজখবর নিলেন জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু ছোটবনগ্রামে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ পটুয়াখালীতে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে ৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ রাজশাহীতে কর্মচারি ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন সিরাজগঞ্জে মিথ্যা সংবাদ প্রচারে ডিলারশীপ বাতিলের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উল্লাপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে কষ্টি পাথরের মূর্তিসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার পাবনায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবদল নেতা নিহত, আহত ১ রাজশাহীতে সাবেক ডিবি হাসান কে গণপিটুনি

৩৮৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাই

মো: গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

রাজশাহী জেলার এক-তৃতীয়াংশের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়া। জেলার ১ হাজার ৫৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৮৯টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য আছে, এর মধ্যে ৬১টি বিদ্যালয়ের পদ মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে আছে।

বছরের পর বছর ধরে পদোন্নতি ও নিয়োগ বন্ধ থাকায় এই সংকট আরও গভীর হয়েছে। রাজশাহীর ৯টি উপজেলা এবং মহানগর এলাকার প্রায় প্রতিটি প্রান্তেই এই সংকট ছড়িয়ে পড়েছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক অবস্থা রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলায়, যেখানে সর্বোচ্চ ৯৭টি বিদ্যালয়ে কোনো প্রধান শিক্ষক নেই। এরপরই আছে গোদাগাড়ী, যেখানে ৭১টি বিদ্যালয়ে একই অবস্থা। এ ছাড়া তানোরে ৬২টি, চারঘাটে ৩৮টি, পুঠিয়ায় ২৭টি, বাঘায় ২২টি, পবায় ২১টি, দুর্গাপুরে ২১টি, মোহনপুরে ২০টি এবং বোয়ালিয়া থানা এলাকায় ১০টি বিদ্যালয়, যেখানে প্রধান শিক্ষক নাই । এই বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করছেন।
পবা উপজেলার ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নফুরা খাতুন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে আমরা যারা দায়িত্ব নিচ্ছি, তাদের হাতে ক্ষমতা নেই। অথচ মিড-ডে মিল, সরকারি ডেটা আপলোড, সভা, অভিভাবক সংযোগ-সবকিছু সামলাতে হচ্ছে। পাঠদানে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। ’ পবার কালুপাড়া মাধাইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুমা আক্তার বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি ঠিকই, কিন্তু একজন সহকারী শিক্ষকের পক্ষে প্রশাসনিক সব দায়িত্ব সামলানো অত্যন্ত কঠিন।

পূর্ণ ক্ষমতা না থাকায় অনেক জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। ’ রাজশাহী জেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘২০১০ সালের পর সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ২০১৮ সালে কিছু সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারাও এখন অবসরে গেছেন। ফলে প্রধান শিক্ষক পদে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। ’
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার বলেন, ‘আমরা নিয়মিতভাবে শূন্য পদের তালিকা পাঠাচ্ছি।

কিন্তু পদোন্নতি না হওয়ায় সংকট কাটছে না। ’ রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সরকার পদোন্নতি বা নিয়োগ না দিলে আমার কী করার আছে। এভাবেই চলছে হচ্ছে আমাদের।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:২৭:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
Translate »

৩৮৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাই

আপডেট : ০৪:২৭:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

রাজশাহী জেলার এক-তৃতীয়াংশের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়া। জেলার ১ হাজার ৫৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৮৯টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য আছে, এর মধ্যে ৬১টি বিদ্যালয়ের পদ মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে আছে।

বছরের পর বছর ধরে পদোন্নতি ও নিয়োগ বন্ধ থাকায় এই সংকট আরও গভীর হয়েছে। রাজশাহীর ৯টি উপজেলা এবং মহানগর এলাকার প্রায় প্রতিটি প্রান্তেই এই সংকট ছড়িয়ে পড়েছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক অবস্থা রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলায়, যেখানে সর্বোচ্চ ৯৭টি বিদ্যালয়ে কোনো প্রধান শিক্ষক নেই। এরপরই আছে গোদাগাড়ী, যেখানে ৭১টি বিদ্যালয়ে একই অবস্থা। এ ছাড়া তানোরে ৬২টি, চারঘাটে ৩৮টি, পুঠিয়ায় ২৭টি, বাঘায় ২২টি, পবায় ২১টি, দুর্গাপুরে ২১টি, মোহনপুরে ২০টি এবং বোয়ালিয়া থানা এলাকায় ১০টি বিদ্যালয়, যেখানে প্রধান শিক্ষক নাই । এই বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করছেন।
পবা উপজেলার ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নফুরা খাতুন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে আমরা যারা দায়িত্ব নিচ্ছি, তাদের হাতে ক্ষমতা নেই। অথচ মিড-ডে মিল, সরকারি ডেটা আপলোড, সভা, অভিভাবক সংযোগ-সবকিছু সামলাতে হচ্ছে। পাঠদানে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। ’ পবার কালুপাড়া মাধাইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুমা আক্তার বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি ঠিকই, কিন্তু একজন সহকারী শিক্ষকের পক্ষে প্রশাসনিক সব দায়িত্ব সামলানো অত্যন্ত কঠিন।

পূর্ণ ক্ষমতা না থাকায় অনেক জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। ’ রাজশাহী জেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘২০১০ সালের পর সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ২০১৮ সালে কিছু সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারাও এখন অবসরে গেছেন। ফলে প্রধান শিক্ষক পদে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। ’
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার বলেন, ‘আমরা নিয়মিতভাবে শূন্য পদের তালিকা পাঠাচ্ছি।

কিন্তু পদোন্নতি না হওয়ায় সংকট কাটছে না। ’ রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সরকার পদোন্নতি বা নিয়োগ না দিলে আমার কী করার আছে। এভাবেই চলছে হচ্ছে আমাদের।