London ১২:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১ লাখ ৬০ হাজার বছর পর দেখা যেতে পারে বিরল ধূমকেতু

অনলাইন ডেস্ক

১ লাখ ৬০ হাজার বছর পর প্রথমবারের মতো একটি উজ্জ্বল ধূমকেতু পৃথিবীর আকাশে দেখা যেতে পারে। নাসা জানিয়েছে, ধূমকেতুর উজ্জ্বলতা আগে থেকেই নির্ধারণ করা কঠিন। তবে কমেট সি/২০২৪ জি৩ (অ্যাটলাস) নামের ধুমকেতুটি খালি চোখে দেখতে পাওয়ার মতো উজ্জ্বল থাকতে পারে।  সোমবার ধূমকেতুটি সূর্যের কাছে সর্বাধিক নিকটবর্তী অবস্থানে (পেরিহেলিওন) পৌঁছায়।

কাছাকাছি অবস্থানের ফলে এর উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সোমবার রাত থেকে দৃশ্যমান হতে পারে। ধূমকেতুটি শুক্র গ্রহের মতো উজ্জ্বল হতে পারে। সম্ভাব্য দৃশ্যমানতার সঠিক স্থান অজানা হলেও বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে সবচেয়ে ভালভাবে দেখা যেতে পারে।

গত বছর নাসার অ্যাস্টেরয়েড টেরেস্ট্রিয়াল-ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম (এটিএলএএস) এই ধূমকেতুটি দেখতে পেয়েছিল। কিংস কলেজ লন্ডনের জ্যোতির্কণা পদার্থবিদ্যা এবং মহাজাগতিক বিজ্ঞানের গবেষক ড. শ্যাম বালাজি বলেছেন, ‘বর্তমান কক্ষপথের হিসাব অনুযায়ী ধূমকেতুটি সূর্য থেকে প্রায় ৮৩ লাখ মাইল দূর দিয়ে অতিক্রম করবে।’

ফলে এটিকে এটিকে ‘সূর্যের কাছাকাছি ঘেঁষে চলা’ ধূমকেতু বলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ধূমকেতুটিকে ১ লাখ ৬০ হাজার বছরে একবার ঘটে, এমন একটি ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছে।

ড. বালাজি বলেন, ‘ধূমকেতুটিকে দেখার সুযোগ পেরিহেলিওনের আশেপাশের দিনগুলোতে হতে পারে। তবে এটি স্থানীয় পরিস্থিতি ও ধূমকেতুর আচরণের ওপর নির্ভর করবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সব ধূমকেতুর মতোই এটি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা ও এর উজ্জ্বলতা অনিশ্চিত।’

বালাজি বলেছেন, দক্ষিণ গোলার্ধে বসবাসকারী মানুষ যেখান থেকে ধূমকেতুটি সবচেয়ে ভালোভাবে দেখতে পারে। সূর্যোদয়ের আগে পূর্ব দিকের আকাশে এবং পেরিহেলিওনের পর সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম দিকের আকাশে তাকালে ধূমকেতুটি দেখতে পাওয়া যাবে।

কিন্তু বালাজি আরো বলেছেন, ‘ধূমকেতুটি খুব উজ্জ্বল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এর উজ্জ্বলতা সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া খুবই অনিশ্চিত এবং অনেক সময় ধূমকেতু প্রত্যাশার চেয়ে ম্লান হয়ে যায়।’ সূর্যের সঙ্গে ধূমকেতুর অবস্থানগত সম্পর্কের কারণে যুক্তরাজ্যসহ উত্তর গোলার্ধ থেকে এটি দেখা কঠিন হতে পারে।

বালাজি ধূমকেতুটি দেখতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের আলো দূষণ থেকে দূরে একটি অবস্থান খুঁজে বের করার এবং একজোড়া দূরবীন বা একটি ছোট টেলিস্কোপ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় সতর্ক থাকার জন্যও সতর্ক করেছেন। ধূমকেতুর অবস্থান ট্র্যাক করে আকাশে কোথায় এটি দেখা যেতে পারে তা নির্ধারণ করতে বলেছেন।

ইতিমধ্যেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধূমকেতুর পথ অনুসরণ করছেন। শনিবার নাসার মহাকাশচারী ডন পেটিট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে তোলা ধূমকেতুর একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কক্ষপথ থেকে ধূমকেতু দেখা সত্যিই বিস্ময়কর। অ্যাটলাস সি২০২৪-জি৩ আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে।’

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৮:৫৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
Translate »

১ লাখ ৬০ হাজার বছর পর দেখা যেতে পারে বিরল ধূমকেতু

আপডেট : ০৮:৫৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

১ লাখ ৬০ হাজার বছর পর প্রথমবারের মতো একটি উজ্জ্বল ধূমকেতু পৃথিবীর আকাশে দেখা যেতে পারে। নাসা জানিয়েছে, ধূমকেতুর উজ্জ্বলতা আগে থেকেই নির্ধারণ করা কঠিন। তবে কমেট সি/২০২৪ জি৩ (অ্যাটলাস) নামের ধুমকেতুটি খালি চোখে দেখতে পাওয়ার মতো উজ্জ্বল থাকতে পারে।  সোমবার ধূমকেতুটি সূর্যের কাছে সর্বাধিক নিকটবর্তী অবস্থানে (পেরিহেলিওন) পৌঁছায়।

কাছাকাছি অবস্থানের ফলে এর উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সোমবার রাত থেকে দৃশ্যমান হতে পারে। ধূমকেতুটি শুক্র গ্রহের মতো উজ্জ্বল হতে পারে। সম্ভাব্য দৃশ্যমানতার সঠিক স্থান অজানা হলেও বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে সবচেয়ে ভালভাবে দেখা যেতে পারে।

গত বছর নাসার অ্যাস্টেরয়েড টেরেস্ট্রিয়াল-ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম (এটিএলএএস) এই ধূমকেতুটি দেখতে পেয়েছিল। কিংস কলেজ লন্ডনের জ্যোতির্কণা পদার্থবিদ্যা এবং মহাজাগতিক বিজ্ঞানের গবেষক ড. শ্যাম বালাজি বলেছেন, ‘বর্তমান কক্ষপথের হিসাব অনুযায়ী ধূমকেতুটি সূর্য থেকে প্রায় ৮৩ লাখ মাইল দূর দিয়ে অতিক্রম করবে।’

ফলে এটিকে এটিকে ‘সূর্যের কাছাকাছি ঘেঁষে চলা’ ধূমকেতু বলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ধূমকেতুটিকে ১ লাখ ৬০ হাজার বছরে একবার ঘটে, এমন একটি ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছে।

ড. বালাজি বলেন, ‘ধূমকেতুটিকে দেখার সুযোগ পেরিহেলিওনের আশেপাশের দিনগুলোতে হতে পারে। তবে এটি স্থানীয় পরিস্থিতি ও ধূমকেতুর আচরণের ওপর নির্ভর করবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সব ধূমকেতুর মতোই এটি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা ও এর উজ্জ্বলতা অনিশ্চিত।’

বালাজি বলেছেন, দক্ষিণ গোলার্ধে বসবাসকারী মানুষ যেখান থেকে ধূমকেতুটি সবচেয়ে ভালোভাবে দেখতে পারে। সূর্যোদয়ের আগে পূর্ব দিকের আকাশে এবং পেরিহেলিওনের পর সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম দিকের আকাশে তাকালে ধূমকেতুটি দেখতে পাওয়া যাবে।

কিন্তু বালাজি আরো বলেছেন, ‘ধূমকেতুটি খুব উজ্জ্বল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এর উজ্জ্বলতা সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া খুবই অনিশ্চিত এবং অনেক সময় ধূমকেতু প্রত্যাশার চেয়ে ম্লান হয়ে যায়।’ সূর্যের সঙ্গে ধূমকেতুর অবস্থানগত সম্পর্কের কারণে যুক্তরাজ্যসহ উত্তর গোলার্ধ থেকে এটি দেখা কঠিন হতে পারে।

বালাজি ধূমকেতুটি দেখতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের আলো দূষণ থেকে দূরে একটি অবস্থান খুঁজে বের করার এবং একজোড়া দূরবীন বা একটি ছোট টেলিস্কোপ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় সতর্ক থাকার জন্যও সতর্ক করেছেন। ধূমকেতুর অবস্থান ট্র্যাক করে আকাশে কোথায় এটি দেখা যেতে পারে তা নির্ধারণ করতে বলেছেন।

ইতিমধ্যেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধূমকেতুর পথ অনুসরণ করছেন। শনিবার নাসার মহাকাশচারী ডন পেটিট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে তোলা ধূমকেতুর একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কক্ষপথ থেকে ধূমকেতু দেখা সত্যিই বিস্ময়কর। অ্যাটলাস সি২০২৪-জি৩ আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে।’