London ০২:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
সর্প দংশন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা পটুয়াখালীর নতুন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের খোঁজখবর নিলেন জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু ছোটবনগ্রামে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ পটুয়াখালীতে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে ৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ রাজশাহীতে কর্মচারি ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন সিরাজগঞ্জে মিথ্যা সংবাদ প্রচারে ডিলারশীপ বাতিলের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উল্লাপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে কষ্টি পাথরের মূর্তিসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার পাবনায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবদল নেতা নিহত, আহত ১ রাজশাহীতে সাবেক ডিবি হাসান কে গণপিটুনি

সিরাজগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় এক আসামির যাবজ্জীবন, অন্যজন খালাস

ওয়াসিম সেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জে এক চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম সালমা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন রায়গঞ্জ উপজেলার মোজাফফরপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার ভুইয়ার ছেলে মোঃ আবু কাছির হাসান হিরা। তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। অনাদায়ে তাকে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

অপরদিকে, একই গ্রামের মোঃ ইমান আলীর ছেলে মোঃ নুরনবীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস প্রদান করেছেন।

রায়ে উল্লেখ করা হয়, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবু কাছির হাসান হিরার ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫(এ) ধারা অনুযায়ী তার হাজতবাসের সময়কাল মূল সাজা থেকে বাদ যাবে। এছাড়া আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী ভুক্তভোগী পরিবার আসামির সম্পদ থেকে জরিমানার অর্থ আদায় করতে পারবে। বর্তমান সম্পদ থেকে আদায় সম্ভব না হলে ভবিষ্যতের সম্পদ থেকেও তা আদায়যোগ্য হবে।

মামলার এজাহার ও আদালতের রায়ে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আসামি ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে। এর ফলে তার গর্ভে সন্তান জন্ম নেয়। সন্তান অস্বীকার করলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আসামির পিতৃত্ব প্রমাণিত হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে মীমাংসার জন্য তাদের বিয়ে হয় এবং দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু এরপরও আসামি ভুক্তভোগী ও সন্তানদের অস্বীকার করলে ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা দায়ের করে।

রায়ে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ১৩ ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশু প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়ভার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে বহন করতে হবে। এই অর্থও তার বর্তমান বা ভবিষ্যতের সম্পদ থেকে আদায় করা যাবে।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আবু কাছির হাসান হিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানামূলক তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান রায়ের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এই রায় সমাজে নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের জন্য একটি কঠোর বার্তা দেবে।”

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:৪৪:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
১০
Translate »

সিরাজগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় এক আসামির যাবজ্জীবন, অন্যজন খালাস

আপডেট : ০৪:৪৪:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

সিরাজগঞ্জে এক চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম সালমা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন রায়গঞ্জ উপজেলার মোজাফফরপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার ভুইয়ার ছেলে মোঃ আবু কাছির হাসান হিরা। তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। অনাদায়ে তাকে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

অপরদিকে, একই গ্রামের মোঃ ইমান আলীর ছেলে মোঃ নুরনবীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস প্রদান করেছেন।

রায়ে উল্লেখ করা হয়, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবু কাছির হাসান হিরার ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫(এ) ধারা অনুযায়ী তার হাজতবাসের সময়কাল মূল সাজা থেকে বাদ যাবে। এছাড়া আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী ভুক্তভোগী পরিবার আসামির সম্পদ থেকে জরিমানার অর্থ আদায় করতে পারবে। বর্তমান সম্পদ থেকে আদায় সম্ভব না হলে ভবিষ্যতের সম্পদ থেকেও তা আদায়যোগ্য হবে।

মামলার এজাহার ও আদালতের রায়ে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আসামি ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে। এর ফলে তার গর্ভে সন্তান জন্ম নেয়। সন্তান অস্বীকার করলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আসামির পিতৃত্ব প্রমাণিত হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে মীমাংসার জন্য তাদের বিয়ে হয় এবং দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু এরপরও আসামি ভুক্তভোগী ও সন্তানদের অস্বীকার করলে ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা দায়ের করে।

রায়ে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ১৩ ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশু প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়ভার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে বহন করতে হবে। এই অর্থও তার বর্তমান বা ভবিষ্যতের সম্পদ থেকে আদায় করা যাবে।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আবু কাছির হাসান হিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানামূলক তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান রায়ের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এই রায় সমাজে নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের জন্য একটি কঠোর বার্তা দেবে।”