London ০৯:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:

সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে বাড়িতে লুটপাট

অনলাইন ডেস্ক

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ‘চেতনানাশক স্প্রে’ ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সময় লুটেরাদের চিনে ফেলায় গৃহকর্তা আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম করে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা।

রোববার (১৬ মার্চ) ভোরে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের জয়পত্রকাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চেতনানাশকের ফলে ওই পরিবারের আরও দুজন মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের তিনজনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কুপিয়ে জখম ও অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়া তিনজন হলেন, কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জয়পত্রকাটি গ্রামের মৃত শহর আলী সরদারের ছেলে নুরুল হক (৬৩), তার স্ত্রী রওশানারা খাতুন (৫৪) ও তাদের ছেলে রাহিনুর হক (১৬)।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রওশানারা খাতুন জানান, সেহরি খেয়ে নামাজ পড়ার পর তিনি ও তার ছেলে রাহিনুর ঘুমিয়ে পড়েন। এর পরে কী হয়েছে তারা কিছু বুঝতে পারেন নি।

জয়পত্রকাটি গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে রিতু খাতুন জাগো নিউজকে জানান, রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি তার বাচ্চাকে নিয়ে দুধ নেওয়ার জন্য চাচা নুরুল হকের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে চৌমুহুনীর পাগল শিলুকে দেখতে পান। শিলু ঈদের জন্য জাকাত আনতে নুরুল হকের কাছে যান। তারা বাড়ির কাউকে বাইরে না দেখে ঘরে প্রবেশ করেন। এসময় নুরুল হককে ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। রান্নাঘরের এক কোণায় অনেক রক্ত পড়ে থাকতে দেখেন তারা। এছাড়া রওশানারা ও রাহিনুরকে পৃথক স্থানে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

সামান্য চেতনা থাকা নূরুল হক তাকে বলেন, অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা তার ঘরের সিন্ধুক ভাঙার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। একজনকে তিনি চিনতেও পারেন। এসময় তাকে পেছন দিক থেকে মাথায় কোপ দিলে তিনি পড়ে যান। পরে তারা বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।

রিতু জানান, তারা ধারণা করছেন অজ্ঞানপার্টি চেতনানাশক স্প্রে করে পরিবারের সদস্যদের অচেতন করে রাখে।

নুরুল হকের চাচাতো ভাই আব্দুস সামাদ রোববার রাতে জাগো নিউজকে জানান, নুরুল হকের বাড়িতে সিন্দুক ভেঙে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুকুর পাড়ে এনে ফেলে রাখা হয়। এছাড়া একটি লিচু গাছের তলায় পলিথিন বিছিয়ে কোন ব্যক্তি বা কতিপয় ব্যক্তি সেখানে অপেক্ষা করেছে বলে মনে হয়েছে। সেখানে একটি ব্যাগ পড়ে ছিল। বাড়ি থেকে কী কী জিনিস লুটপাট করা হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। নুরুল হকসহ তিনজনকে দুপুর ২টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অধিক রক্তক্ষরণের ফলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নুরুল হককে রাত ৮টার দিকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:৩৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
১৫
Translate »

সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে বাড়িতে লুটপাট

আপডেট : ০৪:৩৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ‘চেতনানাশক স্প্রে’ ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সময় লুটেরাদের চিনে ফেলায় গৃহকর্তা আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম করে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা।

রোববার (১৬ মার্চ) ভোরে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের জয়পত্রকাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চেতনানাশকের ফলে ওই পরিবারের আরও দুজন মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের তিনজনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কুপিয়ে জখম ও অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়া তিনজন হলেন, কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জয়পত্রকাটি গ্রামের মৃত শহর আলী সরদারের ছেলে নুরুল হক (৬৩), তার স্ত্রী রওশানারা খাতুন (৫৪) ও তাদের ছেলে রাহিনুর হক (১৬)।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রওশানারা খাতুন জানান, সেহরি খেয়ে নামাজ পড়ার পর তিনি ও তার ছেলে রাহিনুর ঘুমিয়ে পড়েন। এর পরে কী হয়েছে তারা কিছু বুঝতে পারেন নি।

জয়পত্রকাটি গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে রিতু খাতুন জাগো নিউজকে জানান, রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি তার বাচ্চাকে নিয়ে দুধ নেওয়ার জন্য চাচা নুরুল হকের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে চৌমুহুনীর পাগল শিলুকে দেখতে পান। শিলু ঈদের জন্য জাকাত আনতে নুরুল হকের কাছে যান। তারা বাড়ির কাউকে বাইরে না দেখে ঘরে প্রবেশ করেন। এসময় নুরুল হককে ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। রান্নাঘরের এক কোণায় অনেক রক্ত পড়ে থাকতে দেখেন তারা। এছাড়া রওশানারা ও রাহিনুরকে পৃথক স্থানে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

সামান্য চেতনা থাকা নূরুল হক তাকে বলেন, অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা তার ঘরের সিন্ধুক ভাঙার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। একজনকে তিনি চিনতেও পারেন। এসময় তাকে পেছন দিক থেকে মাথায় কোপ দিলে তিনি পড়ে যান। পরে তারা বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।

রিতু জানান, তারা ধারণা করছেন অজ্ঞানপার্টি চেতনানাশক স্প্রে করে পরিবারের সদস্যদের অচেতন করে রাখে।

নুরুল হকের চাচাতো ভাই আব্দুস সামাদ রোববার রাতে জাগো নিউজকে জানান, নুরুল হকের বাড়িতে সিন্দুক ভেঙে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুকুর পাড়ে এনে ফেলে রাখা হয়। এছাড়া একটি লিচু গাছের তলায় পলিথিন বিছিয়ে কোন ব্যক্তি বা কতিপয় ব্যক্তি সেখানে অপেক্ষা করেছে বলে মনে হয়েছে। সেখানে একটি ব্যাগ পড়ে ছিল। বাড়ি থেকে কী কী জিনিস লুটপাট করা হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। নুরুল হকসহ তিনজনকে দুপুর ২টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অধিক রক্তক্ষরণের ফলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নুরুল হককে রাত ৮টার দিকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।