London ০৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
রাণীনগরে মৌসুমীর দিনভর ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে ঘিরে নয় দিনের জন্য মাঠে থাকবে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হবিগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মোহাম্মদ ফয়সলের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠায় আটুলিয়ায় ওলামা সম্মেলন সন্তানকে হত্যার কারণে মামলা করলেন বাবা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জননীতি মাস্টার্স প্রোগ্রামে চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর ভর্তি টাওয়ার হ্যামলেটস মেয়র প্রার্থী সিরাজুল ইসলামের সা‌থে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা সফিপুর আইডিয়াল পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে শুরু হয়েছে ‘আইডিয়াল বইমেলা–২০২৫’ রাজশাহীতে ছরিকাঘাতে জজের ছেলের মৃত্যু সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল

সন্তানকে হত্যার কারণে মামলা করলেন বাবা

মো: গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আব্দুর রহমান তার ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৬) হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে তিনি মামলার এজাহারে সই দিয়ে ছেলের লাশ নিয়ে জামালপুরের গ্রামের বাড়ি রওনা হন। পরে রাজপাড়া থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গাজিউর রহমান শুক্রবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বিচারক নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি লিমন মিয়া (৩৪)। তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।চিকিৎসা শেষে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

আসামি লিমন মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদনেরপাড়া ভবানীগঞ্জ গ্রামে। তার বাবার নাম এসএম সোলায়মান শেখ। লিমন সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি করতেন।

২০১৮ সালে তার চাকরি চলে যায়। কয়েক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন লিমন। তবে সংসার টেকেনি। বিচারক আব্দুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীর (৪৪) সঙ্গে তার পূর্বপরিচয় ছিল। তার কাছ থেকে লিমন টাকা নিতেন।

পুলিশের ভাষ্য, টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন লিমন। দিয়েছিলেন প্রাণনাশের হুমকিও। এ নিয়ে গত ৬ নভেম্বর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তাসমিনা। মেয়ের বাসায় থাকা অবস্থায় সিলেটের জালালাবাদ থানায় জিডিটি করা হয়।

জজ আব্দুর রহমান প্রায় একবছর আগে শ্রম আদালতের বিচারক হয়ে রাজশাহী আসেন। গত মাসে তাকে মহানগর দায়রা জজ হিসেবে পদায়ন করা হয়। রাজশাহী আসার পর নগরের ডাবতলা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। সেখানে স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে তাওসিফকে নিয়ে থাকতেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় ওই বাসায় যান লিমন। সেখানে তাওসিফকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাসমিনা নাহারও। এ ছাড়া ধস্তাধস্তিতে হামলাকারী নিজেও আহত হন। পরে তিনজনকেই ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাওসিফকে মৃত ঘোষণা করা করে ।

শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে তাওসিফের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন ও একই বিভাগের প্রভাষক শারমিন সোবহান কাবেরী। ময়নাতদন্ত শেষে মর্গের ভেতরে ঢুকে ছেলের মরদেহ একনজর দেখতে যান তার বাবা বিচারক আবদুর রহমান। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ময়নাতদন্তের পর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের রাজশাহী সেন্টারের সদস্যরা রামেক হাসপাতালের নির্ধারিত কক্ষে মরদেহের গোসল করিয়ে দেন। পরে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ফ্রিজিং অ্যাম্বুল্যান্সেই মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। নিহত তাওসিফ রাজশাহী গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:১২:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
Translate »

সন্তানকে হত্যার কারণে মামলা করলেন বাবা

আপডেট : ০৩:১২:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আব্দুর রহমান তার ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৬) হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে তিনি মামলার এজাহারে সই দিয়ে ছেলের লাশ নিয়ে জামালপুরের গ্রামের বাড়ি রওনা হন। পরে রাজপাড়া থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গাজিউর রহমান শুক্রবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বিচারক নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি লিমন মিয়া (৩৪)। তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।চিকিৎসা শেষে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

আসামি লিমন মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদনেরপাড়া ভবানীগঞ্জ গ্রামে। তার বাবার নাম এসএম সোলায়মান শেখ। লিমন সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি করতেন।

২০১৮ সালে তার চাকরি চলে যায়। কয়েক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন লিমন। তবে সংসার টেকেনি। বিচারক আব্দুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীর (৪৪) সঙ্গে তার পূর্বপরিচয় ছিল। তার কাছ থেকে লিমন টাকা নিতেন।

পুলিশের ভাষ্য, টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন লিমন। দিয়েছিলেন প্রাণনাশের হুমকিও। এ নিয়ে গত ৬ নভেম্বর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তাসমিনা। মেয়ের বাসায় থাকা অবস্থায় সিলেটের জালালাবাদ থানায় জিডিটি করা হয়।

জজ আব্দুর রহমান প্রায় একবছর আগে শ্রম আদালতের বিচারক হয়ে রাজশাহী আসেন। গত মাসে তাকে মহানগর দায়রা জজ হিসেবে পদায়ন করা হয়। রাজশাহী আসার পর নগরের ডাবতলা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। সেখানে স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে তাওসিফকে নিয়ে থাকতেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় ওই বাসায় যান লিমন। সেখানে তাওসিফকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাসমিনা নাহারও। এ ছাড়া ধস্তাধস্তিতে হামলাকারী নিজেও আহত হন। পরে তিনজনকেই ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাওসিফকে মৃত ঘোষণা করা করে ।

শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে তাওসিফের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন ও একই বিভাগের প্রভাষক শারমিন সোবহান কাবেরী। ময়নাতদন্ত শেষে মর্গের ভেতরে ঢুকে ছেলের মরদেহ একনজর দেখতে যান তার বাবা বিচারক আবদুর রহমান। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ময়নাতদন্তের পর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের রাজশাহী সেন্টারের সদস্যরা রামেক হাসপাতালের নির্ধারিত কক্ষে মরদেহের গোসল করিয়ে দেন। পরে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ফ্রিজিং অ্যাম্বুল্যান্সেই মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। নিহত তাওসিফ রাজশাহী গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।