London ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেরপুরে মিথ্যে অভিযোগের প্রতিবাদে আদিবাসী সেনা সদস্যের সংবাদ সম্মেলন

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরে মিথ্যে অভিযোগের প্রতিবাদে অবসরপ্রাপ্ত সনেন্দ্র সিমসাং নামে এক আদিবাসী সেনা সদস্য সংবাদ সম্মেলন করেছেন।(২০জানুয়ারি) সোমবার রাতে শহরের খরমপুরস্থ নির্ঝর রেস্তোরাঁ হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সেনাবাহিনী ইঞ্জিনিয়ার কোর এর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট সনেন্দ্র সিমসাং।

এসময় তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি সনেন্দ্র সিমসাং ২০১৩ সালে সেনাবাহিনী ইঞ্জিনিয়ার কোর থেকে সার্জেন্ট পদে অবসর নিয়েছি। আমার সাবেক স্ত্রী আর্নিকা দাংগ একটি গণমাধ্যমে তার বক্তব্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। যাহা আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে। এ সংবাদে আমার সাবেক স্ত্রী আর্নিকা দাংগ যে অভিযোগ গুলো আনয়ন করেছেন তা মিথ্যা বানোয়াট উদ্দেশ্য প্রনোদিত। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আমার প্রথম স্ত্রী ৩ সন্তান রেখে মারা যাওয়ার পরে-২০০৬ সালে আর্নিকা দাংগকে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করি। আমি চাকুরীরত অবস্থায় মিশনের টাকা দিয়ে শেরপুর শহরের বাগবাড়ী মহল্লায় ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করি। কিছুদিন আমাদের দাম্পত্য জীবন ভালোভাবেই চললেও ২০১৩ সালে চাকুরী হইতে অবসর নেওয়ার পর পরই পেনশনের টাকা নিয়ে এবং আমায় ক্রয়কৃত জায়গাতে বাসা করার বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। তারপরও আমি পেনশনের টাকা দিয়ে বাসা বাড়ি করি। এদিকে অর্নিকা দাংগক আমার তিন লক্ষ সত্তর হাজার টাকা বাবার বাড়ি জমি কিনবে বলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আমার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর্নিকা দাংগ বাসা থেকে আমাকে তাড়িয়ে বের করে দেয় এবং বিভিন্ন ভাবে হুমকিও দেয়। ওইসময় আওয়ামীলীগের সাংসদ ফজলুল হক চাঁন ও আওআমীলীগের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দদের সহযোগিতায় আমাকে তিনবার জেল খাটায় এবং দুই বছর আমাকে যৌতুক মামলায় সাজা দেওয়া হয়। যাহা আমাদের গারো আদিবাসিদের আইনে নেই, উক্ত মামলাটি এখনো চলমান। তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে আর্নিকা দাংগুকে ডির্ভোস দেই। পরবর্তীতে আমার অংশ টুকু আমার মেয়ে স্বর্ণালী ডিওকে ১.৬৭ শতাংশ আমার এতিম মেয়েকে দলিল করে দেই। আমার অংশ টুকু দলিল করে দেওয়ার পরও বেদখল দিয়ে রেখেছে আর্নিকা দাংগ।

এরপর ৫-ই আগষ্ট দেশের পট পরিবর্তেনের পর বেদখল হওয়া জমিটি উদ্ধারের জন্য শেরপুর সেনা ক্যাম্পে এবং সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে সেনাক্যাম্প কর্তৃপক্ষ আমাকে শেরপুর জেলা বিএনপি সাবেক আহবায়ক হযরত আলীর কাছে প্রেরণ করেন। হযরত আলী আমার জমির বিস্তারিত ঘটনা শোনার পর, বাগবাড়ী মহুলার গন্যমান্য ব্যাক্তিদেরকে আমার জমির বিষয়টি সমাধান করার জন্য অনুরোধ করেন।

পরবর্তীতে থানায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের দু-পক্ষকেই পুলিশ ফাঁড়িতে এসআই শাহ আলম ঢেকে আনে। তারপর স্বর্ণালীর অংশ টুকু জানুয়ারী মাসের মধ্যে বায়না পত্র করবে বলে আমার সাবেক স্ত্রী মুছলেকা দিয়ে আসে, এই সুবাধে গত জানুয়ারী ৪ তারিখে ৫০ হাজার টাকা বায়নাপত্র করেন। এরপরও অযথা হয়রানি করার উদ্দেশ্য জেলা বিএনপি সাবেক আহবায়ক হযরত আলী এবং বিএনপি অন্যান্য নেতৃবৃন্ধের বিরুদ্ধে আর্নিকা দাংগ যে অভিযোগ করেছে এবং ভিডিও ভাইরাল করেছে তা পুরোটাই উদ্দেশ্য প্রনোদিত মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমাদের এই পারিবারিক ঘটনায় বিএনপি সাবেক আহবায়ক মো: হযরত আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃদ্ধ সম্পৃক্ততা নেই। হযরত আলীর মতো একজন গন্যমান্য ব্যাক্তিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন আমি এর নিন্দা ও ধিক্কার জানাই।

উল্লেখ্য, একটি গণমাধ্যমে আর্নিকা দাংগ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. হযরত আলী তার জমি দখলের মিথ্যে অভিযোগ এনে বক্তব্য রাখেন। এই প্রেক্ষিতে আর্নিকা দাংগ এর সাবেক স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সনেন্দ্র সিমসাং সত্য ঘটনা উন্মোচনের জন্য এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:২১:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
Translate »

শেরপুরে মিথ্যে অভিযোগের প্রতিবাদে আদিবাসী সেনা সদস্যের সংবাদ সম্মেলন

আপডেট : ১২:২১:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

শেরপুরে মিথ্যে অভিযোগের প্রতিবাদে অবসরপ্রাপ্ত সনেন্দ্র সিমসাং নামে এক আদিবাসী সেনা সদস্য সংবাদ সম্মেলন করেছেন।(২০জানুয়ারি) সোমবার রাতে শহরের খরমপুরস্থ নির্ঝর রেস্তোরাঁ হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সেনাবাহিনী ইঞ্জিনিয়ার কোর এর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট সনেন্দ্র সিমসাং।

এসময় তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি সনেন্দ্র সিমসাং ২০১৩ সালে সেনাবাহিনী ইঞ্জিনিয়ার কোর থেকে সার্জেন্ট পদে অবসর নিয়েছি। আমার সাবেক স্ত্রী আর্নিকা দাংগ একটি গণমাধ্যমে তার বক্তব্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। যাহা আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে। এ সংবাদে আমার সাবেক স্ত্রী আর্নিকা দাংগ যে অভিযোগ গুলো আনয়ন করেছেন তা মিথ্যা বানোয়াট উদ্দেশ্য প্রনোদিত। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আমার প্রথম স্ত্রী ৩ সন্তান রেখে মারা যাওয়ার পরে-২০০৬ সালে আর্নিকা দাংগকে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করি। আমি চাকুরীরত অবস্থায় মিশনের টাকা দিয়ে শেরপুর শহরের বাগবাড়ী মহল্লায় ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করি। কিছুদিন আমাদের দাম্পত্য জীবন ভালোভাবেই চললেও ২০১৩ সালে চাকুরী হইতে অবসর নেওয়ার পর পরই পেনশনের টাকা নিয়ে এবং আমায় ক্রয়কৃত জায়গাতে বাসা করার বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। তারপরও আমি পেনশনের টাকা দিয়ে বাসা বাড়ি করি। এদিকে অর্নিকা দাংগক আমার তিন লক্ষ সত্তর হাজার টাকা বাবার বাড়ি জমি কিনবে বলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আমার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর্নিকা দাংগ বাসা থেকে আমাকে তাড়িয়ে বের করে দেয় এবং বিভিন্ন ভাবে হুমকিও দেয়। ওইসময় আওয়ামীলীগের সাংসদ ফজলুল হক চাঁন ও আওআমীলীগের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দদের সহযোগিতায় আমাকে তিনবার জেল খাটায় এবং দুই বছর আমাকে যৌতুক মামলায় সাজা দেওয়া হয়। যাহা আমাদের গারো আদিবাসিদের আইনে নেই, উক্ত মামলাটি এখনো চলমান। তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে আর্নিকা দাংগুকে ডির্ভোস দেই। পরবর্তীতে আমার অংশ টুকু আমার মেয়ে স্বর্ণালী ডিওকে ১.৬৭ শতাংশ আমার এতিম মেয়েকে দলিল করে দেই। আমার অংশ টুকু দলিল করে দেওয়ার পরও বেদখল দিয়ে রেখেছে আর্নিকা দাংগ।

এরপর ৫-ই আগষ্ট দেশের পট পরিবর্তেনের পর বেদখল হওয়া জমিটি উদ্ধারের জন্য শেরপুর সেনা ক্যাম্পে এবং সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে সেনাক্যাম্প কর্তৃপক্ষ আমাকে শেরপুর জেলা বিএনপি সাবেক আহবায়ক হযরত আলীর কাছে প্রেরণ করেন। হযরত আলী আমার জমির বিস্তারিত ঘটনা শোনার পর, বাগবাড়ী মহুলার গন্যমান্য ব্যাক্তিদেরকে আমার জমির বিষয়টি সমাধান করার জন্য অনুরোধ করেন।

পরবর্তীতে থানায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের দু-পক্ষকেই পুলিশ ফাঁড়িতে এসআই শাহ আলম ঢেকে আনে। তারপর স্বর্ণালীর অংশ টুকু জানুয়ারী মাসের মধ্যে বায়না পত্র করবে বলে আমার সাবেক স্ত্রী মুছলেকা দিয়ে আসে, এই সুবাধে গত জানুয়ারী ৪ তারিখে ৫০ হাজার টাকা বায়নাপত্র করেন। এরপরও অযথা হয়রানি করার উদ্দেশ্য জেলা বিএনপি সাবেক আহবায়ক হযরত আলী এবং বিএনপি অন্যান্য নেতৃবৃন্ধের বিরুদ্ধে আর্নিকা দাংগ যে অভিযোগ করেছে এবং ভিডিও ভাইরাল করেছে তা পুরোটাই উদ্দেশ্য প্রনোদিত মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমাদের এই পারিবারিক ঘটনায় বিএনপি সাবেক আহবায়ক মো: হযরত আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃদ্ধ সম্পৃক্ততা নেই। হযরত আলীর মতো একজন গন্যমান্য ব্যাক্তিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন আমি এর নিন্দা ও ধিক্কার জানাই।

উল্লেখ্য, একটি গণমাধ্যমে আর্নিকা দাংগ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. হযরত আলী তার জমি দখলের মিথ্যে অভিযোগ এনে বক্তব্য রাখেন। এই প্রেক্ষিতে আর্নিকা দাংগ এর সাবেক স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সনেন্দ্র সিমসাং সত্য ঘটনা উন্মোচনের জন্য এই সংবাদ সম্মেলন করেন।