London ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছে, এটা আল্লাহর রহমত: জি এম কাদের

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর বনানীর কার্যালয়ে জাতীয় মোটর শ্রমিক পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেনছবি: সংগৃহীত

‘শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছে, এটা আল্লাহর রহমত’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, এ দেশের ছাত্র-জনতা গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছে। শেখ হাসিনার পতন না হলে একদলীয় সরকারব্যবস্থা কায়েম হতো, দেশে মাত্র একটি দলই থাকত।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাপার চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে জাতীয় মোটর শ্রমিক পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের এ কথা বলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় আন্দোলনের নজির নেই। আন্দোলনে এত নির্যাতন, হত্যাযজ্ঞের ইতিহাসও নেই। আমাদের বীর সন্তানেরা জীবন দিয়ে স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত করেছে, যা আমরা পারিনি।’

২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিল বলে দাবি করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার নামে সিএমএইচে আটক করা হয়। তাঁর নির্দেশে আমিসহ জাতীয় পার্টির ২৭০ জন নির্বাচন বর্জন করি। ২০১৪ সালের সংসদে আমি যাইনি।’

জাপার চেয়ারম্যান বলেন, মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চাপে এরশাদকে সংসদে যেতে বাধ্য করে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি না গেলেও উপজেলা পরিষদ, পৌরসভাসহ বেশ কিছু নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সব দলই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। জাতীয় পার্টিও সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।

২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁরা যেতে চাননি দাবি করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টিতে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগও তুলেছেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘একটি গোষ্ঠীকে আমাদের দল ও প্রতীকের নামে কাউন্সিল করতে অন্যায়ভাবে অনুমতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। হাস্যকর একটি মামলায় আমাকে রাজনীতি থেকে চার মাসের বেশি সময় দূরে রাখা হয়েছিল। আমরা ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করতে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলাম, সবকিছুই প্রস্তুত ছিল। কিন্তু বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংস্থার সদস্যরা আমাদের অফিস কর্ডন করে রাখে। আমাদের নির্বাচন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে দেয়নি।’

মতবিনিময় সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে পরিবহন খাতকে বাঁচানোর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পরিবহনমালিকদের দাবি সড়কের চাঁদার জন্য গণপরিবহনের ভাড়া বেড়ে যায়। গণপরিবহনের চালক ও চালকের সহকারী নিয়োগ দেয় শ্রমিক ইউনিয়ন, মালিকদের কর্তৃত্ব থাকে না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকদের চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে মুক্তি দিতে হবে।

জাতীয় মোটর শ্রমিক পার্টির আহ্বায়ক মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় মতবিনিময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন জাপার মহাসচিব মো. মুজিবুল হক, অতিরিক্ত মহাসচিব মীর আবদুস সবুর, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:৫১:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৭১
Translate »

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছে, এটা আল্লাহর রহমত: জি এম কাদের

আপডেট : ০৩:৫১:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর বনানীর কার্যালয়ে জাতীয় মোটর শ্রমিক পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেনছবি: সংগৃহীত

‘শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছে, এটা আল্লাহর রহমত’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, এ দেশের ছাত্র-জনতা গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছে। শেখ হাসিনার পতন না হলে একদলীয় সরকারব্যবস্থা কায়েম হতো, দেশে মাত্র একটি দলই থাকত।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাপার চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে জাতীয় মোটর শ্রমিক পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের এ কথা বলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় আন্দোলনের নজির নেই। আন্দোলনে এত নির্যাতন, হত্যাযজ্ঞের ইতিহাসও নেই। আমাদের বীর সন্তানেরা জীবন দিয়ে স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত করেছে, যা আমরা পারিনি।’

২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিল বলে দাবি করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার নামে সিএমএইচে আটক করা হয়। তাঁর নির্দেশে আমিসহ জাতীয় পার্টির ২৭০ জন নির্বাচন বর্জন করি। ২০১৪ সালের সংসদে আমি যাইনি।’

জাপার চেয়ারম্যান বলেন, মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চাপে এরশাদকে সংসদে যেতে বাধ্য করে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি না গেলেও উপজেলা পরিষদ, পৌরসভাসহ বেশ কিছু নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সব দলই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। জাতীয় পার্টিও সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।

২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁরা যেতে চাননি দাবি করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টিতে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগও তুলেছেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘একটি গোষ্ঠীকে আমাদের দল ও প্রতীকের নামে কাউন্সিল করতে অন্যায়ভাবে অনুমতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। হাস্যকর একটি মামলায় আমাকে রাজনীতি থেকে চার মাসের বেশি সময় দূরে রাখা হয়েছিল। আমরা ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করতে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলাম, সবকিছুই প্রস্তুত ছিল। কিন্তু বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংস্থার সদস্যরা আমাদের অফিস কর্ডন করে রাখে। আমাদের নির্বাচন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে দেয়নি।’

মতবিনিময় সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে পরিবহন খাতকে বাঁচানোর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পরিবহনমালিকদের দাবি সড়কের চাঁদার জন্য গণপরিবহনের ভাড়া বেড়ে যায়। গণপরিবহনের চালক ও চালকের সহকারী নিয়োগ দেয় শ্রমিক ইউনিয়ন, মালিকদের কর্তৃত্ব থাকে না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকদের চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে মুক্তি দিতে হবে।

জাতীয় মোটর শ্রমিক পার্টির আহ্বায়ক মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় মতবিনিময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন জাপার মহাসচিব মো. মুজিবুল হক, অতিরিক্ত মহাসচিব মীর আবদুস সবুর, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।