London ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুল্কায়ন জটিলতায় বেনাপোলে আটকে আছে দুই লাখ ডিম

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরফাইল ছবি

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে ২ লাখ ৩১ হাজার মুরগির ডিমবোঝাই একটি ট্রাক দুই দিন ধরে আটকে আছে। শুল্কায়ন জটিলতায় পণ্যের চালানটি আটকে আছে। এ জন্য বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার কামরুজ্জামানের স্বেচ্ছাচারিতাকে দায়ী করেছেন আমদানিকারক।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হাইড্রোল্যান্ড সল্যুশনের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, ডিম আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কহার ৩৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৩ শতাংশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ১৭ অক্টোবর এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তারা আমদানিকারককে আগের নিয়মে শুল্ক পরিশোধের জন্য বলেন। এদিকে ডিমের চালানটি আটকে থাকায় প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা করে মাশুল গুনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার কামরুজ্জামান বলেন, ‘শুল্কায়নের জটিলতার বিষয়টি আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বা কাস্টমসের কোনো কর্মকর্তা আমাকে জানাননি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নতুন গেজেট অনুয়ায়ী শুল্কায়ন করে চালানটি ছেড়ে দেব।’

বেনাপোল বন্দর ও কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০টি ডিম আমদানি করে ঢাকার হাইড্রোল্যান্ড সল্যুশন নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। গতকাল রোববার বন্দরের কার্গো শাখায় চালানের নথিপত্র জমা দেয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আগের ৩৩ শতাংশ হারে শুল্ক পরিশোধের জন্য লিখিত আদেশ দিলে আমদানিকারক শুল্কায়ন বন্ধ রাখেন। আমদানিকারক নতুন গেজেট অনুযায়ী শুল্ক পরিশোধের জন্য কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। যে কারণে শুল্কায়ন জটিলতায় পণ্যের চালানটি বন্দরে আটকে আছে।

আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে, শুল্কায়নসহ প্রতিটি ডিমের আমদানি মূল্য আগে পড়ত ৯ টাকা ৯৭ পয়সা। নতুন গেজেট অনুযায়ী, যার দাম পড়বে ৮ টাকা ৪৭ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে পরিবহন, শ্রমিক ও ওয়েস্টেজ (নষ্ট) বাবদ খরচ। সব মিলিয়ে প্রতিটি ডিম ঢাকায় পৌঁছাতে সাড়ে ১০ টাকা মতো খরচ হবে। প্রতিটি ডিমে ২০ থেকে ৩০ পয়সা মুনাফা যোগ করে তা পাইকারিতে বিক্রি করা হবে।

এদিকে বাজারে ডিমের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় কয়েক দিন আগে হঠাৎ করে ডিমের দাম অনেকটা বেড়ে যায়। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। যদিও শুক্রবার থেকে দাম কমতে শুরু করে।

কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে পৌনে ১০ লাখ ডিম আমদানি হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠানই এসব ডিম আমদানি করেছে। এর বাইরে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সরকারের পক্ষ থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও এসব প্রতিষ্ঠান এখনো ডিম আমদানি করেনি।

এদিকে আটকে থাকা ডিমের চালানটির রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান কলকাতার শ্রী লক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ। আমদানিকারকের পক্ষে ডিমের চালানটি খালাসের জন্য কাস্টম হাউসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেছে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:২৭:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
৩৫
Translate »

শুল্কায়ন জটিলতায় বেনাপোলে আটকে আছে দুই লাখ ডিম

আপডেট : ০৩:২৭:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরফাইল ছবি

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে ২ লাখ ৩১ হাজার মুরগির ডিমবোঝাই একটি ট্রাক দুই দিন ধরে আটকে আছে। শুল্কায়ন জটিলতায় পণ্যের চালানটি আটকে আছে। এ জন্য বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার কামরুজ্জামানের স্বেচ্ছাচারিতাকে দায়ী করেছেন আমদানিকারক।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হাইড্রোল্যান্ড সল্যুশনের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, ডিম আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কহার ৩৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৩ শতাংশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ১৭ অক্টোবর এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তারা আমদানিকারককে আগের নিয়মে শুল্ক পরিশোধের জন্য বলেন। এদিকে ডিমের চালানটি আটকে থাকায় প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা করে মাশুল গুনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার কামরুজ্জামান বলেন, ‘শুল্কায়নের জটিলতার বিষয়টি আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বা কাস্টমসের কোনো কর্মকর্তা আমাকে জানাননি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নতুন গেজেট অনুয়ায়ী শুল্কায়ন করে চালানটি ছেড়ে দেব।’

বেনাপোল বন্দর ও কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০টি ডিম আমদানি করে ঢাকার হাইড্রোল্যান্ড সল্যুশন নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। গতকাল রোববার বন্দরের কার্গো শাখায় চালানের নথিপত্র জমা দেয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আগের ৩৩ শতাংশ হারে শুল্ক পরিশোধের জন্য লিখিত আদেশ দিলে আমদানিকারক শুল্কায়ন বন্ধ রাখেন। আমদানিকারক নতুন গেজেট অনুযায়ী শুল্ক পরিশোধের জন্য কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। যে কারণে শুল্কায়ন জটিলতায় পণ্যের চালানটি বন্দরে আটকে আছে।

আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে, শুল্কায়নসহ প্রতিটি ডিমের আমদানি মূল্য আগে পড়ত ৯ টাকা ৯৭ পয়সা। নতুন গেজেট অনুযায়ী, যার দাম পড়বে ৮ টাকা ৪৭ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে পরিবহন, শ্রমিক ও ওয়েস্টেজ (নষ্ট) বাবদ খরচ। সব মিলিয়ে প্রতিটি ডিম ঢাকায় পৌঁছাতে সাড়ে ১০ টাকা মতো খরচ হবে। প্রতিটি ডিমে ২০ থেকে ৩০ পয়সা মুনাফা যোগ করে তা পাইকারিতে বিক্রি করা হবে।

এদিকে বাজারে ডিমের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় কয়েক দিন আগে হঠাৎ করে ডিমের দাম অনেকটা বেড়ে যায়। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। যদিও শুক্রবার থেকে দাম কমতে শুরু করে।

কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে পৌনে ১০ লাখ ডিম আমদানি হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠানই এসব ডিম আমদানি করেছে। এর বাইরে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সরকারের পক্ষ থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও এসব প্রতিষ্ঠান এখনো ডিম আমদানি করেনি।

এদিকে আটকে থাকা ডিমের চালানটির রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান কলকাতার শ্রী লক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ। আমদানিকারকের পক্ষে ডিমের চালানটি খালাসের জন্য কাস্টম হাউসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেছে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজ।