রাবিতে তালা ভেংগে মনোনয়নপত্র বিতরণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় শাখা ছাত্রদল। প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর অবশেষে শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে কোষাধ্যক্ষের কার্যালয় খুলে দেন এবং দুপুর ২টা থেকে পুনরায় মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।
রোববার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সকাল ১০টার দিকে প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবিতে রাকসু কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে অবস্থান নেয় ছাত্রদল। এসময় তারা ভাঙচুর চালিয়ে ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ফলে মনোনয়ন সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
বেলা ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী মনোনয়ন ফরম নিতে গেলে ছাত্রদলের বাধার মুখে পড়েন। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি, ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ছাত্রদলকে ১০ মিনিট সময় বেঁধে দেন তালা খুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তালা না খোলা হলে শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে তালা ভেঙে দেন।
তালা ভাঙার পর শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলবিরোধী নানা স্লোগান দেন। অপরদিকে ছাত্রদল নেতাকর্মীরাও ফের অবস্থান নিয়ে পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে পানির বোতল ও জুতা ছোড়াছুড়ির ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের মিছিল আসায়। তাদের উপস্থিতির মুখে ছাত্রদল আবারও পিছু হটে যায়।
একপর্যায়ে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের মাইক খুলে ভাঙচুর করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক। তারা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং নির্বাচন কার্যক্রম স্বাভাবিক করার আশ্বাস দেন।
প্রায় চার ঘণ্টা অচলাবস্থার পর দুপুর ২টা থেকে ফের শুরু হয় মনোনয়নপত্র বিতরণ। এসময় ইসলামী ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান।
এদিকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “সকাল থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, কোনো একক সংগঠনের দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সব সংগঠন একসাথে প্রস্তাব করলে তা বিবেচনা করা যাবে। এছাড়া তপশিল ঘোষণার সময় প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়নি, তাই তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি সম্ভব নয়।