London ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
ওয়াকফ আইন নিয়ে উত্তপ্ত ভারত সংখ্যালঘু মুসলিমদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের গাজায় ইসরায়েলের হামলায় একদিনে নিহত ৬৪ ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ১০ সদস্য নিহত যুক্তরাষ্ট্রে গণহারে ভারতীয় ছাত্রদের ভিসা বাতিল, আছে বাংলাদেশিরাও আখাউড়া প্রিন্ট ও টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠন: সভাপতি -,মিশু, সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ কৃষকদের পাশে উপজেলা প্রশাসন: ধান কাটা ও লিচু চাষে সহায়তায় সক্রিয় ভূমিকা বার্সেলোনায় না ফেরার কারণ ও ইয়ামালের প্রশংসায় যা বললেন মেসি কসবায় হজ ও উমরাহ প্রশিক্ষণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত টঙ্গীতে ভাই-বোনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে মিয়ানমারে শান্তি আসবে না

রাত জেগে মোবাইলে স্ক্রলিং কতটা ক্ষতিকর, কী বলছে গবেষণা

মোবাইলে স্ক্রলিং

অধিকাংশ সময়ই মোবাইলে মগ্ন থাকে বর্তমান প্রজন্ম। রাত জেগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে মোবাইল স্ক্রল, খেতে বসে কিংবা ভ্রমণের সময়ে, ‘রিল’ বা ভিডিও দেখার অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে তরুণ প্রজন্মের। শিশুরাও মোবাইলে মগ্ন থাকে। আর এই অভ্যাসের ঘনিয়ে আসছে বিপদ।

সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সারাক্ষণ মোবাইলে স্ক্রল করে ‘রিল’ দেখার অভ্যাস বা ডুম-স্ক্রলিংয়ের নেশা সর্বনাশা হয়ে দেখা দিচ্ছে। তা যেমন একদিকে হাইপারটেনশনের কারণ হয়ে উঠছে, তেমনই হৃদরোগের ঝুঁকিও বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে।

‘আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিয়োলজি’ এবং ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেশন’-এর তথ্য বলছে, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটানা ‘রিল’ দেখে যাওয়া বা ভিডিও গেম খেলার অভ্যাস থাকলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বাড়বে। কারণ স্ক্রিনের দিকে একটানা চোখ ও ‘রিল’ দেখে অহেতুক উত্তেজনা হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়িতে দিতে পারে। এতে মেলাটোনিন নামক হরমোনের তারতম্য দেখা দেয়। এই হরমোনই ‘স্লিপ সাইকেল’ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয় এবং একযোগে চাপ পড়ে শরীরে আর মনে। এই অভ্যাসের প্রভাব পড়তে পারে আপনার স্মৃতিশক্তির উপরেও। পাশাপাশি মোবাইলের নীল আলো রেটিনার ক্ষতি করে ও স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও প্রভাব ফেলে।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা টানা ৩-৪ ঘণ্টা মোবাইলে ভিডিও দেখে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাতায় স্ক্রল করে সময় কাটান, তাদের হৃদরোগ ও হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বেশি। যারা ৪ ঘণ্টারও বেশি মোবাইলের ‘রিল’ দেখতেই থাকেন, তাদের ভবিষ্যতে হার্টের রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যাবে।

১৯৯৮ সালে জার্মানির একটি গবেষণাতেও দাবি করা হয়েছিল, মোবাইলের ব্যবহার বেশি হলে রক্তচাপের সমস্যা বাড়তে পারে। এখনকার সময়ে এই বিষয়টিই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গবেষকরা বলছেন, মোবাইল থেকে নির্গত তড়িৎচুম্বকীয় রশ্মি মস্তিষ্কের উপর প্রভাব ফেলে। ফলে একদিকে যেমন স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়, তেমনই অন্যদিকে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট হতে থাকে। স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের ক্ষরণ বাড়তে থাকে। ফলে মনের উপর চাপও বাড়ে। মানসিক চাপ ক্রনিক হয়ে গেলে হাইপারটেনশনের সমস্যা বেড়ে যায়।

ডিজিটাল আসক্তি কাটানোর উপায় কী?

বই পড়ার অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে হবে। এমনটাই মত গবেষকদের। ফোনমুখী মনকে বশে রাখতে হলে, নানা ধরনের বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে।

সারাক্ষণ বসে বা শুয়ে মোবাইল না দেখে, শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি করতে পারলে ভাল হয়। রাতে শুয়ে মোবাইলে স্ক্রল না করে মেডিটেশন বা ধ্যান করতে পারলে মন অনেক শান্ত থাকবে। অস্থিরতা কমবে এবং মনঃসংযোগ বাড়বে।

ছোটরা এখন ভার্চুয়াল জগতে বিচরণ করেই বেশি আনন্দ অনুভব করছে। এমনকি, মন খারাপ হলে নেটদুনিয়াতেই সুখ খুঁজে নিতে চাইছে। সব কিছুর সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে ভার্চুয়াল জগৎ। এর থেকে অপরাধপ্রবণতাও বাড়ছে। তাই ডিজিটাল আসক্তি কাটাতে পুরোনো শখগুলোকেই ফিরিয়ে আনতে হবে। বই পড়া, খেলাধূলা করা, বাগান করা, রান্না করা অথবা গান শেখা, নাচ, আবৃত্তি— এগুলোর মাধ্যমেই ফোনের নেশা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পথটা অনেক সহজ হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
১৮
Translate »

রাত জেগে মোবাইলে স্ক্রলিং কতটা ক্ষতিকর, কী বলছে গবেষণা

আপডেট : ১১:১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

অধিকাংশ সময়ই মোবাইলে মগ্ন থাকে বর্তমান প্রজন্ম। রাত জেগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে মোবাইল স্ক্রল, খেতে বসে কিংবা ভ্রমণের সময়ে, ‘রিল’ বা ভিডিও দেখার অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে তরুণ প্রজন্মের। শিশুরাও মোবাইলে মগ্ন থাকে। আর এই অভ্যাসের ঘনিয়ে আসছে বিপদ।

সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সারাক্ষণ মোবাইলে স্ক্রল করে ‘রিল’ দেখার অভ্যাস বা ডুম-স্ক্রলিংয়ের নেশা সর্বনাশা হয়ে দেখা দিচ্ছে। তা যেমন একদিকে হাইপারটেনশনের কারণ হয়ে উঠছে, তেমনই হৃদরোগের ঝুঁকিও বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে।

‘আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিয়োলজি’ এবং ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেশন’-এর তথ্য বলছে, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটানা ‘রিল’ দেখে যাওয়া বা ভিডিও গেম খেলার অভ্যাস থাকলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বাড়বে। কারণ স্ক্রিনের দিকে একটানা চোখ ও ‘রিল’ দেখে অহেতুক উত্তেজনা হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়িতে দিতে পারে। এতে মেলাটোনিন নামক হরমোনের তারতম্য দেখা দেয়। এই হরমোনই ‘স্লিপ সাইকেল’ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয় এবং একযোগে চাপ পড়ে শরীরে আর মনে। এই অভ্যাসের প্রভাব পড়তে পারে আপনার স্মৃতিশক্তির উপরেও। পাশাপাশি মোবাইলের নীল আলো রেটিনার ক্ষতি করে ও স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও প্রভাব ফেলে।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা টানা ৩-৪ ঘণ্টা মোবাইলে ভিডিও দেখে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাতায় স্ক্রল করে সময় কাটান, তাদের হৃদরোগ ও হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বেশি। যারা ৪ ঘণ্টারও বেশি মোবাইলের ‘রিল’ দেখতেই থাকেন, তাদের ভবিষ্যতে হার্টের রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যাবে।

১৯৯৮ সালে জার্মানির একটি গবেষণাতেও দাবি করা হয়েছিল, মোবাইলের ব্যবহার বেশি হলে রক্তচাপের সমস্যা বাড়তে পারে। এখনকার সময়ে এই বিষয়টিই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গবেষকরা বলছেন, মোবাইল থেকে নির্গত তড়িৎচুম্বকীয় রশ্মি মস্তিষ্কের উপর প্রভাব ফেলে। ফলে একদিকে যেমন স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়, তেমনই অন্যদিকে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট হতে থাকে। স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের ক্ষরণ বাড়তে থাকে। ফলে মনের উপর চাপও বাড়ে। মানসিক চাপ ক্রনিক হয়ে গেলে হাইপারটেনশনের সমস্যা বেড়ে যায়।

ডিজিটাল আসক্তি কাটানোর উপায় কী?

বই পড়ার অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে হবে। এমনটাই মত গবেষকদের। ফোনমুখী মনকে বশে রাখতে হলে, নানা ধরনের বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে।

সারাক্ষণ বসে বা শুয়ে মোবাইল না দেখে, শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি করতে পারলে ভাল হয়। রাতে শুয়ে মোবাইলে স্ক্রল না করে মেডিটেশন বা ধ্যান করতে পারলে মন অনেক শান্ত থাকবে। অস্থিরতা কমবে এবং মনঃসংযোগ বাড়বে।

ছোটরা এখন ভার্চুয়াল জগতে বিচরণ করেই বেশি আনন্দ অনুভব করছে। এমনকি, মন খারাপ হলে নেটদুনিয়াতেই সুখ খুঁজে নিতে চাইছে। সব কিছুর সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে ভার্চুয়াল জগৎ। এর থেকে অপরাধপ্রবণতাও বাড়ছে। তাই ডিজিটাল আসক্তি কাটাতে পুরোনো শখগুলোকেই ফিরিয়ে আনতে হবে। বই পড়া, খেলাধূলা করা, বাগান করা, রান্না করা অথবা গান শেখা, নাচ, আবৃত্তি— এগুলোর মাধ্যমেই ফোনের নেশা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পথটা অনেক সহজ হবে।