London ০২:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
রাণীনগরে মৌসুমীর দিনভর ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে ঘিরে নয় দিনের জন্য মাঠে থাকবে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হবিগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মোহাম্মদ ফয়সলের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠায় আটুলিয়ায় ওলামা সম্মেলন সন্তানকে হত্যার কারণে মামলা করলেন বাবা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জননীতি মাস্টার্স প্রোগ্রামে চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর ভর্তি টাওয়ার হ্যামলেটস মেয়র প্রার্থী সিরাজুল ইসলামের সা‌থে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা সফিপুর আইডিয়াল পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে শুরু হয়েছে ‘আইডিয়াল বইমেলা–২০২৫’ রাজশাহীতে ছরিকাঘাতে জজের ছেলের মৃত্যু সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল

মেডিকেলে চান্স পেলেও খরচ নিয়ে চিন্তায় দিনমজুরের মেয়ে প্রান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাটগোবিন্দপুর গ্রামের রমেন কুমার বিশ্বাস ও চঞ্চলা রানী বিশ্বাস দম্পতির মেয়ে প্রান্তি বিশ্বাস (১৮)। এবার মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দু’চোখে অন্ধকার দেখছেন প্রান্তি ও তার পরিবার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রান্তি দুই ভাই-বোনের মধ্যে ছোট। তার বড় ভাই রাহুল বিশ্বাস একটি বেসরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ডিপ্লোমা পাস করে এখনও বেকার জীবনযাপন করছেন। প্রান্তির বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। মা চঞ্চলা বিশ্বাস বাড়িতে মুড়ি ভেজে শহরের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করেন। আর এ দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার ও লেখাপড়ার খরচ।

শহরতলীর কানাইপুরের বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করেন প্রান্তি। ২০২৪ সালে ফরিদপুর সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন তিনি। চলতি শিক্ষাবর্ষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তবে কীভাবে মেডিকেলে ভর্তি হবেন ও সামনে কীভাবে চলবে লেখাপড়ার খরচ এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

মেডিকেলে চান্স পেলেও খরচ নিয়ে চিন্তায় দিনমজুরের মেয়ে প্রান্তি

প্রান্তি বিশ্বাস বলেন, মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেতে ফরিদপুরের একটি কোচিং সেন্টারে কোচিং করেছি। সৃষ্টিকর্তা আমার দিনরাত শ্রমের ফলাফল দিয়েছেন। প্রথমে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ডাক্তার হওয়ার জন্য মেডিকেলের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমি সবার কাছে আশীর্বাদ চাই, যেন স্বপ্ন পূরণ করে পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটাতে পারি।

প্রান্তির মা চঞ্চলা রানী বিশ্বাস বলেন, মেয়ের মুখে যখন শুনলাম মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ হয়েছে, ডাক্তার হবে, তখনকার আনন্দ আর বলে বোঝানো যাবে না। তবে এখন নতুন চিন্তা মেয়ের ভর্তিসহ পড়ালেখার খরচ জোগানোর। কীভাবে কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।

ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মনজুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী প্রান্তি বিশ্বাস দারিদ্র্যকে জয় করেই এই পর্যন্ত এসেছে। আর্থিক সংকটসহ কোনো সংকটই যে দমাতে পারে না তার একটি দৃষ্টান্ত প্রান্তি। সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমি আহ্বান জানাবো প্রান্তিদের মতো ফুল যেন অর্থের অভাবে ঝরে না পড়ে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:৩৭:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
৮৫
Translate »

মেডিকেলে চান্স পেলেও খরচ নিয়ে চিন্তায় দিনমজুরের মেয়ে প্রান্তি

আপডেট : ০৩:৩৭:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাটগোবিন্দপুর গ্রামের রমেন কুমার বিশ্বাস ও চঞ্চলা রানী বিশ্বাস দম্পতির মেয়ে প্রান্তি বিশ্বাস (১৮)। এবার মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দু’চোখে অন্ধকার দেখছেন প্রান্তি ও তার পরিবার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রান্তি দুই ভাই-বোনের মধ্যে ছোট। তার বড় ভাই রাহুল বিশ্বাস একটি বেসরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ডিপ্লোমা পাস করে এখনও বেকার জীবনযাপন করছেন। প্রান্তির বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। মা চঞ্চলা বিশ্বাস বাড়িতে মুড়ি ভেজে শহরের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করেন। আর এ দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার ও লেখাপড়ার খরচ।

শহরতলীর কানাইপুরের বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করেন প্রান্তি। ২০২৪ সালে ফরিদপুর সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন তিনি। চলতি শিক্ষাবর্ষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তবে কীভাবে মেডিকেলে ভর্তি হবেন ও সামনে কীভাবে চলবে লেখাপড়ার খরচ এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

মেডিকেলে চান্স পেলেও খরচ নিয়ে চিন্তায় দিনমজুরের মেয়ে প্রান্তি

প্রান্তি বিশ্বাস বলেন, মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেতে ফরিদপুরের একটি কোচিং সেন্টারে কোচিং করেছি। সৃষ্টিকর্তা আমার দিনরাত শ্রমের ফলাফল দিয়েছেন। প্রথমে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ডাক্তার হওয়ার জন্য মেডিকেলের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমি সবার কাছে আশীর্বাদ চাই, যেন স্বপ্ন পূরণ করে পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটাতে পারি।

প্রান্তির মা চঞ্চলা রানী বিশ্বাস বলেন, মেয়ের মুখে যখন শুনলাম মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ হয়েছে, ডাক্তার হবে, তখনকার আনন্দ আর বলে বোঝানো যাবে না। তবে এখন নতুন চিন্তা মেয়ের ভর্তিসহ পড়ালেখার খরচ জোগানোর। কীভাবে কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।

ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মনজুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী প্রান্তি বিশ্বাস দারিদ্র্যকে জয় করেই এই পর্যন্ত এসেছে। আর্থিক সংকটসহ কোনো সংকটই যে দমাতে পারে না তার একটি দৃষ্টান্ত প্রান্তি। সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমি আহ্বান জানাবো প্রান্তিদের মতো ফুল যেন অর্থের অভাবে ঝরে না পড়ে।