London ০১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ চুক্তি নবায়ন করবে কাতার

অনলাইন ডেস্ক:

সম্প্রতি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া এলএনজি সরবরাহ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নবায়নে সম্মত হয়েছে কাতার।

এছাড়া বাংলাদেশের জন্য প্রস্তাবিত একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে কারিগরি বিষয়গুলোতে একসঙ্গে কাজ করতে চায় দেশটি।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দোহায় আর্থনা সামিটের সাইড লাইনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে কাতারের জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল কাবি এ প্রতিশ্রুতি দেন।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের পাশে থাকতে চাই এবং তা চালিয়েও যাবো।

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও কাতার একটি গভর্নমেন্ট-টু-গভর্নমেন্ট (জি টু জি) এলএনজি সেল পারচেজ এগ্রিমেন্ট (এসপিএ) সই করে, যার আওতায় ১৫ বছরের জন্য বছরে ১ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন এলএনজি (এমটিপিএ) আমদানি হচ্ছে। এ চুক্তির আওতায় প্রতিবছর ৪০ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এরপর ২০২৩ সালের জুনে আরও একটি এসপিএ সই হয়, যার আওতায় ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে আরও বছরে ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহের কথা রয়েছে।

এই এসপিএ সম্পর্কিত একটি এমওইউ চলতি বছরের জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, যা নবায়নের প্রতিশ্রুতি দিলো কাতার।

কাতারের প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এমওইউ সই করতে প্রস্তুত। কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ব্যাপারে আগ্রহী।

একই সঙ্গে তিনি জানান, কাতার তাদের এলএনজি উৎপাদন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে, ফলে ভবিষ্যতে দাম কমতে পারে।

সরবরাহ নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিই সবচেয়ে উত্তম সমাধান বলে জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কাতার প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, আমরা আমাদের জ্বালানি খাতকে পুনর্গঠনের জন্য আপনাদের সহায়তা চাই।

সাক্ষাতে উপস্থিত জ্বালানি উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফৌজুল কবির খান জানান, বাংলাদেশ মাতারবাড়ী, কক্সবাজারে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে, যার আওতায় পাইপলাইনের মাধ্যমে এলএনজি সরবরাহ ও আর-এলএনজি (রেগ্যাসিফায়েড এলএনজি) বিতরণ করা হবে।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে দেশে এলএনজি টার্মিনালগুলো বছরে ১১৫টি কার্গো হ্যান্ডল করতে পারছে, এবং বাংলাদেশ কাতার থেকে আরও এলএনজি কার্গো আমদানির পরিকল্পনা করছে।

সাক্ষাতে কাতারি প্রতিমন্ত্রী জানান, তারা বাংলাদেশে ইউরিয়া সার সরবরাহও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
Translate »

বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ চুক্তি নবায়ন করবে কাতার

আপডেট : ০২:০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

সম্প্রতি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া এলএনজি সরবরাহ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নবায়নে সম্মত হয়েছে কাতার।

এছাড়া বাংলাদেশের জন্য প্রস্তাবিত একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে কারিগরি বিষয়গুলোতে একসঙ্গে কাজ করতে চায় দেশটি।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দোহায় আর্থনা সামিটের সাইড লাইনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে কাতারের জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল কাবি এ প্রতিশ্রুতি দেন।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের পাশে থাকতে চাই এবং তা চালিয়েও যাবো।

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও কাতার একটি গভর্নমেন্ট-টু-গভর্নমেন্ট (জি টু জি) এলএনজি সেল পারচেজ এগ্রিমেন্ট (এসপিএ) সই করে, যার আওতায় ১৫ বছরের জন্য বছরে ১ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন এলএনজি (এমটিপিএ) আমদানি হচ্ছে। এ চুক্তির আওতায় প্রতিবছর ৪০ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এরপর ২০২৩ সালের জুনে আরও একটি এসপিএ সই হয়, যার আওতায় ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে আরও বছরে ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহের কথা রয়েছে।

এই এসপিএ সম্পর্কিত একটি এমওইউ চলতি বছরের জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, যা নবায়নের প্রতিশ্রুতি দিলো কাতার।

কাতারের প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এমওইউ সই করতে প্রস্তুত। কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ব্যাপারে আগ্রহী।

একই সঙ্গে তিনি জানান, কাতার তাদের এলএনজি উৎপাদন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে, ফলে ভবিষ্যতে দাম কমতে পারে।

সরবরাহ নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিই সবচেয়ে উত্তম সমাধান বলে জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কাতার প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, আমরা আমাদের জ্বালানি খাতকে পুনর্গঠনের জন্য আপনাদের সহায়তা চাই।

সাক্ষাতে উপস্থিত জ্বালানি উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফৌজুল কবির খান জানান, বাংলাদেশ মাতারবাড়ী, কক্সবাজারে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে, যার আওতায় পাইপলাইনের মাধ্যমে এলএনজি সরবরাহ ও আর-এলএনজি (রেগ্যাসিফায়েড এলএনজি) বিতরণ করা হবে।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে দেশে এলএনজি টার্মিনালগুলো বছরে ১১৫টি কার্গো হ্যান্ডল করতে পারছে, এবং বাংলাদেশ কাতার থেকে আরও এলএনজি কার্গো আমদানির পরিকল্পনা করছে।

সাক্ষাতে কাতারি প্রতিমন্ত্রী জানান, তারা বাংলাদেশে ইউরিয়া সার সরবরাহও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।