London ১২:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
কুষ্টিয়ায় কবর থেকে দাদি-নাতির কঙ্কাল চুরি, এলাকায় আতঙ্ক কুষ্টিয়ায় জামায়াত নেতার নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ভূমি আইন লঙ্ঘন করে পুকুর খনন, কৃষি জমির সর্বনাশ জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত এবং ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবিতে ভূরুঙ্গামারীতে বিক্ষোভ সমাবেশ বৃষ্টিতে ভিজে জ্বরের আতঙ্কে আছেন? জেনে নিন বাঁচার উপায় ‘ভারতের বি দলকে হারাতেও কষ্ট হবে পাকিস্তানের’ যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে অ্যাপল সুইজার‌ল্যান্ড থেকে ৩৬ টাকা কেজিতে গম কিনছে সরকার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে জামায়াতের একাত্মতা সূর্যমুখীর হাসিতে বদলে গেলো ময়লার ভাগাড়

পিলখানায় এক শহীদের স্ত্রী আশায় বেঁচে আছি বিচার হবে, মানুষ জানবে নেপথ্যে কারা ছিল

অনলাইন ডেস্ক

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার পিলখানায় সেনা সদস্যদের হত্যার ঘটনা ঘটে। সেখানে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মারা যান ৭৪ জন। হত্যার এই ঘটনাকে ‘জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি’ ও ‘শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালনের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল শহীদ সেনা পরিবারের। সেটি বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার কর্ণপাত করেনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করে।

ফলে এর মধ্য দিয়ে শহীদ সেনা পরিবারের দীর্ঘদিনের দাবি আর আক্ষেপ ঘুচল। একই সঙ্গে তাদের মনে নতুন করে আশা জাগল হত্যার ঘটনায় জড়িতদের সঠিক বিচার পাওয়ার। সেই আশা নিয়েই এবার এক ‘ভিন্ন আবহে’ শহীদ পরিবারগুলো স্মরণ করছেন শহীদ সেনা সদস্যদের। প্রথমবারের মতো এবার পালন হওয়া এই দিবসের শুরুতে আজ (মঙ্গলবার) ঢাকার বনানীর সামরিক কবরস্থানে নিহত সেনাসদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ মেজর মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী রিতা রহমান জুলি বলেন, আমরা খুব বেশি কিছু চাইনি। চেয়েছি শহীদি মর্যাদা এবং বিচারটা সুষ্ঠুভাবে হোক। যারা দোষী তারা যেন সামনে আসে, যেন সুষ্ঠু বিচারটা হয়।

তিনি বলেন, শহীদ সেনা দিবসের দাবি পূরণ হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের জন্য যেহেতু কমিশন গঠন হয়েছে। আমরা আসলে আশার ওপরেই বেঁচে আছি, আশায় বেঁচে থাকতে হবে। আশ্বস্ত হচ্ছি বিচার হবে, মানুষ জানবে ঘটনার নেপথ্যে কারা ছিল।

শহীদ মেজর হুমায়ুন হায়দারের (পিএসসি) স্ত্রী শামীমা পারভিন বলেন, আমাদের একটি দাবি পূরণ হয়েছে। এখন অপেক্ষা বিচারের। আমরা একটি সুষ্ঠু বিচার চাই। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক। তদন্তের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসবে আসলে কারা দোষী।

শহীদ কর্নেল কুদরত এলাহীর ছেলে অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান বলেন, এতদিন ধরে আমাদের বাবারা আর্মির লিস্টে শহীদ ছিলেন। এই প্রথম বাংলাদেশের এনলিস্টে শহীদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এজন্য এই সরকারকে ধন্যবাদ দিতেই হয়।

তিনি বলেন, আমাদের (শহীদ পরিবার) প্রধানত দুটি দাবি ছিল, একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন, শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা। এখন পর্যন্ত আমাদের যে আসল দাবি স্বাধীন তদন্ত সেটি কিন্তু এখন শেষ হয়নি। যদিও একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গিয়ে আমরা অভিযোগ করেছি। এর মূল কারণটা হচ্ছে যদিও তদন্ত কমিশন গঠন না করা হয় কিন্তু তদন্ত যেন চলমান থাকে, সেক্ষেত্রে আমরা যেন তার (হাসিনা) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারি। আমি আশা করব যে, এই তদন্ত কমিশন যেটা কি না তদন্ত হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে। প্রকৃত অর্থে যারা দোষী আমরা তাদেরকে যেন এখানে আনতে পারি।

বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা ও এতোদিন পর্যন্ত কেন শহীদ সেনাদের ঘোষণা করা হয়নি, জানতে চাইলে এ শহীদ সেনা কর্মকর্তার ছেলে বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে রেখেছিল। কারণ হচ্ছে তারা তো হত্যার ঘটনায় জড়িত। ইতোমধ্যে তিনটা তদন্ত কমিশন হয়েছে। সেই তিনটা কমিশনের তদন্ত অত্যন্ত কম্প্রমাইজড ছিল। সৈনিক যারা ছিল তাদের ঠিকই অভিযুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের আনাই হয়নি।

তিনি বলেন, দুটি লেয়ারে অভিযুক্ত বা ষড়যন্ত্রকারী ছিল। একটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, আরেকটি হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ। যে কারণে তাদের কোনোরকম দোষারোপ করে কোনোরকম তদন্ত করেনি কমিশন।

সাকিব রহমান বলেন, আর্মির পক্ষ থেকে যে তদন্ত কমিশন করা হয়েছিল তার হেড ছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেই তদন্ত কমিশনও ছিল অনেকটা কম্প্রোমাইজড। আমি মনে করি বর্তমান তদন্ত কমিশন আগের তদন্ত প্রতিবেদনগুলো আমলে নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট দেবেন।

পার্শ্ববর্তী দেশ জড়িত থাকতে পারে, রাজনৈতিকভাবে যাদের সংশ্লিষ্টতার কথা উঠছে সে-সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনারাই তো রিপোর্ট করেছেন। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নাই। তাদের (আ.লীগ) একেকজনের বাসায় মিটিং হতো। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার ব্যাপারটা ও আর্মি যে ঢুকতে দিলো না এটাতো শেখ হাসিনা এড়াতে পারেন না। কারণ ডিফেন্স মিনিস্টারও ছিলেন শেখ হাসিনা নিজেই। সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির জায়গা থেকে তিনি এটার জন্য দায়ী। তবে পার্শ্ববর্তী দেশের সংশোধিতার বিষয়ে আমি বিশেষ কোনো মন্তব্য করতে চাই না কারণ সেটা করলে সেটা থিওরিটিক্যাল হবে। তবে এটা তো নিঃসন্দেহে সত্য। আমি আশাবাদী তদন্ত কমিশন সেটির তদন্তে বের করে নিয়ে আসবে।

পিলখানায় হত্যাযজ্ঞে বাধাদানকারী শহীদ বিডিআরের কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নূরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, শহীদ সেনা দিবস ঘোষণার মাধ্যমে পিলখানায় শহীদ আমাদের বাবাদের আত্মত্যাগের প্রতি জাতীয়ভাবে সম্মান দেওয়া হয়েছে বলে মনে করি। এই দিবস কি ঘোষণার মাধ্যমে আমরা যে শহীদের সন্তান, আমাদের হৃদয়ের যে ক্ষত সেটি একটু হলেও কমেছে।

তিনি বলেন, ঢালাওভাবে যেন সবাইকে ছেড়ে দেওয়া না হয়। হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত কিন্তু বিস্ফোরক মামলা আসামি তাদের যেন ঢালাওভাবে মুক্তি দেওয়া না হয়। এটা করা হলে আমরা শহীদ পরিবার খুব কষ্ট পাবো। যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, যারা মাস্টারমাইন্ড ছিল তাদের যেন আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার সুনিশ্চিত করা হয়।

শহীদ পরিবারের আরেক নারী সদস্য বলেন, আমি এতোদিন আসিনি। আজই ঢাকা আসছি। আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে এখানে কখনো আসেনি। এবারই প্রথম কবরস্থানে এসেছি। এতোদিন আসিনি ভালো লাগতো না, ক্ষোভ ছিল মনে, কেন আসব! এখন সবকিছু পরিবর্তন হয়েছে এজন্য এসেছি। আমরা সবাই যা চাই, ইনশাল্লাহ সে বিচার হবে। সবাই জানি পিলখানা হত্যাকাণ্ড কে বা কারা করেছে, বিচারটা হোক, দেশবাসী দেখুক। এমনভাবে বিচারটা হোক যেন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে পারি।

তিনি বলেন, এত বড় সাহস এতগুলো অফিসারকে মারল, তাদের তো বাবা-মা সন্তান ছিল একটুও কষ্ট লাগেনি? আমরা কষ্ট পাচ্ছি।

পিলখানায় শহীদ কর্নেল এমদাদুল ইসলামের মেয়ে বলেন, এতো বছর আমরা একটা জালিম শাসনের অধীনে ছিলাম। উনি (হাসিনা) ঘটনাটা নিয়ে এতো বছর ধরে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাই করেছেন। জালিম শাসক কী না করেছে?

‘যারা হত্যা করেছে, বিচারের আওতায় নিয়ে আসছে, অনেকে জামিন পাচ্ছে। আমরা তো পিলখানায় ছিলাম, অনেক সৈনিককে হত্যা করা হয়েছে। কেউ জেলে আছেন। আমাদের বাবাকে কারা মেরেছে তা আল্লাহ ছাড়া বলা সম্ভব না। কিন্তু এটা তো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, বিচার। কারণ ইনোসেন্ট সেনা অফিসারদের হত্যা করা হয়েছে। আমাদের ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। মুসলিম হিসেবে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে কেউ কখনো চিরদিন বাঁচে না। কিন্তু বিচার তো হবে যারা ইনোসেন্টদের হত্যা করেছে তাদের।

শহীদ কর্নেল এমদাদুল ইসলামের ছেলে আকিভ আল ইসলাম বলেন, আমি দ্বিতীয়বার এখানে আসলাম। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে তা কিন্তু বিগত সরকার নেয়নি। কারণ বিগত সরকার হাইড করার চেষ্টা করে গেছে। আমরা ও তারা খুব ভালো করে জানি ঘটনাটা কে কীভাবে ঘটিয়েছে। গত ১৫ বছরের বিচার প্রক্রিয়া মূল্যায়নটা হচ্ছে সরকার বিচারের প্রক্রিয়াটা পজিটিভলি নেয়নি। আমরা চাই এই সরকার বিচার প্রক্রিয়াটাকে পজিটিভলি নিক। বিচারিক প্রক্রিয়াতেই বিচার হোক। আমরা কষ্টে আছি কারণ বিচারটা কেন হচ্ছে না। যারা এখন বিচারিক প্রক্রিয়ায় জড়িত আছেন তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে।

তিনি বলেন, শহীদ পরিবার, সন্তানেরা আজকে এখানে এসেছি। কবর জেয়ারত করেছি। বাবারা সবসময় পরিবারের মূল। গাছের মতো ছায়া দিয়ে যায়। বাবাদের জন্য অনেক দোয়া।

পিলখানা হত্যা মামলার অনেক আসামি জামিনে বের হচ্ছে। আমাদের দাবি হচ্ছে তাদের যেন ফিরিয়ে নেওয়া হয়। দ্বিতীয়বার যাতে এ ধরনের ঘটনা আর কখনো না ঘটে সেজন্য দোষী সাব্যস্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা। আমরা খুশি হতে চাই, বিচারটা হোক।

শহীদ কর্নেল এমদাদুল ইসলামের বন্ধু অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউসুফ বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের অধিকাংশকে আমি চিনতাম, অনেকে আমার সরাসরি বন্ধু। আজকে আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আলহামদুলিল্লাহ যে আমাদের প্রথম চাহিদাটা পূরণ হয়েছে। আমরা আজকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালন করছি।

তিনি বলেন, আশ্বস্ত হওয়ার জায়গাটা সৃষ্টি হয়েছে, এখন সত্যিকারের ঘটনাটা বেরিয়ে আসবে। আজকে শহীদ সেনা দিবসকে যেভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, ভাষা দিবসকে যেভাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া গেছে সেভাবে সবার কাছে আবেদন করব, এই শহীদ সেনা দিবসকেও একটা আন্তর্জাতিক সেনা হত্যা দিবস হিসেবে করা যায় কি না, সে ব্যাপারে সবাই চিন্তা ভাবনা করবেন।

আরেক শহীদ পরিবারের নারী সদস্য বলেন, আমরা বিচারটা চাইছিলাম, আমরা চাইছিলাম দিবসটা শহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালিত হোক। সেটা হয়েছে, এটা ভালো লাগার। পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক, যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানুক, স্বাধীন একটা দেশে এরকম একটি বর্বোরোচিত ঘটনা ঘটেছে। একটা প্যারা মিলিটারি ফোর্স সংগঠিত হয়েছিল একটা মিলিটারি ফোর্সের বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, বিচার হোক, আমরা খুবই শক্তভাবে চাচ্ছি। সবসময় চেয়ে এসেছি কিন্তু আপনারা (সাংবাদিক) প্রচার করেন নাই, কেন করেন নাই সেটাও সবাই জানে। যে বিচারে যারা নেপথ্যে ছিল তাদের মুখোশ উন্মোচিত হোক। তাদের চেহারা বের হয়ে আসুক, তাদের শাস্তি হোক।

আর আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি কোনো নিরপরাধের শাস্তি আমরা চাই না। যেহেতু এখন নতুন একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছে। আশা করছি তারা সন্দেহাতীত একটি তদন্ত প্রতিবেদন জাতির সামনে তুলে ধরবেন। যাতে আমরা জানতে পারি এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত ছিলেন।

আরেক শহীদ পরিবারের নারী সদস্য বলেন, আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। জনগণ যেন জানতে পারে ওইদিন আসলে কী হয়েছিল। দেখি কি হয় আমরা এখন আশা করতে পারি, এই বিচার এই দেশের মাটিতেই হবে। অনেক শুকরিয়া যে, শহীদের মর্যাদা দিয়ে আজকের দিনটি (২৫ ফেব্রুয়ারি) শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা ও পালিত হচ্ছে।

এর আগে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিজিবি ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:০৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
Translate »

পিলখানায় এক শহীদের স্ত্রী আশায় বেঁচে আছি বিচার হবে, মানুষ জানবে নেপথ্যে কারা ছিল

আপডেট : ১২:০৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার পিলখানায় সেনা সদস্যদের হত্যার ঘটনা ঘটে। সেখানে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মারা যান ৭৪ জন। হত্যার এই ঘটনাকে ‘জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি’ ও ‘শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালনের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল শহীদ সেনা পরিবারের। সেটি বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার কর্ণপাত করেনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করে।

ফলে এর মধ্য দিয়ে শহীদ সেনা পরিবারের দীর্ঘদিনের দাবি আর আক্ষেপ ঘুচল। একই সঙ্গে তাদের মনে নতুন করে আশা জাগল হত্যার ঘটনায় জড়িতদের সঠিক বিচার পাওয়ার। সেই আশা নিয়েই এবার এক ‘ভিন্ন আবহে’ শহীদ পরিবারগুলো স্মরণ করছেন শহীদ সেনা সদস্যদের। প্রথমবারের মতো এবার পালন হওয়া এই দিবসের শুরুতে আজ (মঙ্গলবার) ঢাকার বনানীর সামরিক কবরস্থানে নিহত সেনাসদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ মেজর মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী রিতা রহমান জুলি বলেন, আমরা খুব বেশি কিছু চাইনি। চেয়েছি শহীদি মর্যাদা এবং বিচারটা সুষ্ঠুভাবে হোক। যারা দোষী তারা যেন সামনে আসে, যেন সুষ্ঠু বিচারটা হয়।

তিনি বলেন, শহীদ সেনা দিবসের দাবি পূরণ হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের জন্য যেহেতু কমিশন গঠন হয়েছে। আমরা আসলে আশার ওপরেই বেঁচে আছি, আশায় বেঁচে থাকতে হবে। আশ্বস্ত হচ্ছি বিচার হবে, মানুষ জানবে ঘটনার নেপথ্যে কারা ছিল।

শহীদ মেজর হুমায়ুন হায়দারের (পিএসসি) স্ত্রী শামীমা পারভিন বলেন, আমাদের একটি দাবি পূরণ হয়েছে। এখন অপেক্ষা বিচারের। আমরা একটি সুষ্ঠু বিচার চাই। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক। তদন্তের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসবে আসলে কারা দোষী।

শহীদ কর্নেল কুদরত এলাহীর ছেলে অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান বলেন, এতদিন ধরে আমাদের বাবারা আর্মির লিস্টে শহীদ ছিলেন। এই প্রথম বাংলাদেশের এনলিস্টে শহীদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এজন্য এই সরকারকে ধন্যবাদ দিতেই হয়।

তিনি বলেন, আমাদের (শহীদ পরিবার) প্রধানত দুটি দাবি ছিল, একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন, শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা। এখন পর্যন্ত আমাদের যে আসল দাবি স্বাধীন তদন্ত সেটি কিন্তু এখন শেষ হয়নি। যদিও একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গিয়ে আমরা অভিযোগ করেছি। এর মূল কারণটা হচ্ছে যদিও তদন্ত কমিশন গঠন না করা হয় কিন্তু তদন্ত যেন চলমান থাকে, সেক্ষেত্রে আমরা যেন তার (হাসিনা) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারি। আমি আশা করব যে, এই তদন্ত কমিশন যেটা কি না তদন্ত হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে। প্রকৃত অর্থে যারা দোষী আমরা তাদেরকে যেন এখানে আনতে পারি।

বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা ও এতোদিন পর্যন্ত কেন শহীদ সেনাদের ঘোষণা করা হয়নি, জানতে চাইলে এ শহীদ সেনা কর্মকর্তার ছেলে বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে রেখেছিল। কারণ হচ্ছে তারা তো হত্যার ঘটনায় জড়িত। ইতোমধ্যে তিনটা তদন্ত কমিশন হয়েছে। সেই তিনটা কমিশনের তদন্ত অত্যন্ত কম্প্রমাইজড ছিল। সৈনিক যারা ছিল তাদের ঠিকই অভিযুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের আনাই হয়নি।

তিনি বলেন, দুটি লেয়ারে অভিযুক্ত বা ষড়যন্ত্রকারী ছিল। একটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, আরেকটি হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ। যে কারণে তাদের কোনোরকম দোষারোপ করে কোনোরকম তদন্ত করেনি কমিশন।

সাকিব রহমান বলেন, আর্মির পক্ষ থেকে যে তদন্ত কমিশন করা হয়েছিল তার হেড ছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেই তদন্ত কমিশনও ছিল অনেকটা কম্প্রোমাইজড। আমি মনে করি বর্তমান তদন্ত কমিশন আগের তদন্ত প্রতিবেদনগুলো আমলে নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট দেবেন।

পার্শ্ববর্তী দেশ জড়িত থাকতে পারে, রাজনৈতিকভাবে যাদের সংশ্লিষ্টতার কথা উঠছে সে-সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনারাই তো রিপোর্ট করেছেন। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নাই। তাদের (আ.লীগ) একেকজনের বাসায় মিটিং হতো। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার ব্যাপারটা ও আর্মি যে ঢুকতে দিলো না এটাতো শেখ হাসিনা এড়াতে পারেন না। কারণ ডিফেন্স মিনিস্টারও ছিলেন শেখ হাসিনা নিজেই। সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির জায়গা থেকে তিনি এটার জন্য দায়ী। তবে পার্শ্ববর্তী দেশের সংশোধিতার বিষয়ে আমি বিশেষ কোনো মন্তব্য করতে চাই না কারণ সেটা করলে সেটা থিওরিটিক্যাল হবে। তবে এটা তো নিঃসন্দেহে সত্য। আমি আশাবাদী তদন্ত কমিশন সেটির তদন্তে বের করে নিয়ে আসবে।

পিলখানায় হত্যাযজ্ঞে বাধাদানকারী শহীদ বিডিআরের কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নূরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, শহীদ সেনা দিবস ঘোষণার মাধ্যমে পিলখানায় শহীদ আমাদের বাবাদের আত্মত্যাগের প্রতি জাতীয়ভাবে সম্মান দেওয়া হয়েছে বলে মনে করি। এই দিবস কি ঘোষণার মাধ্যমে আমরা যে শহীদের সন্তান, আমাদের হৃদয়ের যে ক্ষত সেটি একটু হলেও কমেছে।

তিনি বলেন, ঢালাওভাবে যেন সবাইকে ছেড়ে দেওয়া না হয়। হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত কিন্তু বিস্ফোরক মামলা আসামি তাদের যেন ঢালাওভাবে মুক্তি দেওয়া না হয়। এটা করা হলে আমরা শহীদ পরিবার খুব কষ্ট পাবো। যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, যারা মাস্টারমাইন্ড ছিল তাদের যেন আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার সুনিশ্চিত করা হয়।

শহীদ পরিবারের আরেক নারী সদস্য বলেন, আমি এতোদিন আসিনি। আজই ঢাকা আসছি। আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে এখানে কখনো আসেনি। এবারই প্রথম কবরস্থানে এসেছি। এতোদিন আসিনি ভালো লাগতো না, ক্ষোভ ছিল মনে, কেন আসব! এখন সবকিছু পরিবর্তন হয়েছে এজন্য এসেছি। আমরা সবাই যা চাই, ইনশাল্লাহ সে বিচার হবে। সবাই জানি পিলখানা হত্যাকাণ্ড কে বা কারা করেছে, বিচারটা হোক, দেশবাসী দেখুক। এমনভাবে বিচারটা হোক যেন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে পারি।

তিনি বলেন, এত বড় সাহস এতগুলো অফিসারকে মারল, তাদের তো বাবা-মা সন্তান ছিল একটুও কষ্ট লাগেনি? আমরা কষ্ট পাচ্ছি।

পিলখানায় শহীদ কর্নেল এমদাদুল ইসলামের মেয়ে বলেন, এতো বছর আমরা একটা জালিম শাসনের অধীনে ছিলাম। উনি (হাসিনা) ঘটনাটা নিয়ে এতো বছর ধরে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাই করেছেন। জালিম শাসক কী না করেছে?

‘যারা হত্যা করেছে, বিচারের আওতায় নিয়ে আসছে, অনেকে জামিন পাচ্ছে। আমরা তো পিলখানায় ছিলাম, অনেক সৈনিককে হত্যা করা হয়েছে। কেউ জেলে আছেন। আমাদের বাবাকে কারা মেরেছে তা আল্লাহ ছাড়া বলা সম্ভব না। কিন্তু এটা তো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, বিচার। কারণ ইনোসেন্ট সেনা অফিসারদের হত্যা করা হয়েছে। আমাদের ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। মুসলিম হিসেবে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে কেউ কখনো চিরদিন বাঁচে না। কিন্তু বিচার তো হবে যারা ইনোসেন্টদের হত্যা করেছে তাদের।

শহীদ কর্নেল এমদাদুল ইসলামের ছেলে আকিভ আল ইসলাম বলেন, আমি দ্বিতীয়বার এখানে আসলাম। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে তা কিন্তু বিগত সরকার নেয়নি। কারণ বিগত সরকার হাইড করার চেষ্টা করে গেছে। আমরা ও তারা খুব ভালো করে জানি ঘটনাটা কে কীভাবে ঘটিয়েছে। গত ১৫ বছরের বিচার প্রক্রিয়া মূল্যায়নটা হচ্ছে সরকার বিচারের প্রক্রিয়াটা পজিটিভলি নেয়নি। আমরা চাই এই সরকার বিচার প্রক্রিয়াটাকে পজিটিভলি নিক। বিচারিক প্রক্রিয়াতেই বিচার হোক। আমরা কষ্টে আছি কারণ বিচারটা কেন হচ্ছে না। যারা এখন বিচারিক প্রক্রিয়ায় জড়িত আছেন তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে।

তিনি বলেন, শহীদ পরিবার, সন্তানেরা আজকে এখানে এসেছি। কবর জেয়ারত করেছি। বাবারা সবসময় পরিবারের মূল। গাছের মতো ছায়া দিয়ে যায়। বাবাদের জন্য অনেক দোয়া।

পিলখানা হত্যা মামলার অনেক আসামি জামিনে বের হচ্ছে। আমাদের দাবি হচ্ছে তাদের যেন ফিরিয়ে নেওয়া হয়। দ্বিতীয়বার যাতে এ ধরনের ঘটনা আর কখনো না ঘটে সেজন্য দোষী সাব্যস্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা। আমরা খুশি হতে চাই, বিচারটা হোক।

শহীদ কর্নেল এমদাদুল ইসলামের বন্ধু অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউসুফ বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের অধিকাংশকে আমি চিনতাম, অনেকে আমার সরাসরি বন্ধু। আজকে আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আলহামদুলিল্লাহ যে আমাদের প্রথম চাহিদাটা পূরণ হয়েছে। আমরা আজকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালন করছি।

তিনি বলেন, আশ্বস্ত হওয়ার জায়গাটা সৃষ্টি হয়েছে, এখন সত্যিকারের ঘটনাটা বেরিয়ে আসবে। আজকে শহীদ সেনা দিবসকে যেভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, ভাষা দিবসকে যেভাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া গেছে সেভাবে সবার কাছে আবেদন করব, এই শহীদ সেনা দিবসকেও একটা আন্তর্জাতিক সেনা হত্যা দিবস হিসেবে করা যায় কি না, সে ব্যাপারে সবাই চিন্তা ভাবনা করবেন।

আরেক শহীদ পরিবারের নারী সদস্য বলেন, আমরা বিচারটা চাইছিলাম, আমরা চাইছিলাম দিবসটা শহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালিত হোক। সেটা হয়েছে, এটা ভালো লাগার। পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক, যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানুক, স্বাধীন একটা দেশে এরকম একটি বর্বোরোচিত ঘটনা ঘটেছে। একটা প্যারা মিলিটারি ফোর্স সংগঠিত হয়েছিল একটা মিলিটারি ফোর্সের বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, বিচার হোক, আমরা খুবই শক্তভাবে চাচ্ছি। সবসময় চেয়ে এসেছি কিন্তু আপনারা (সাংবাদিক) প্রচার করেন নাই, কেন করেন নাই সেটাও সবাই জানে। যে বিচারে যারা নেপথ্যে ছিল তাদের মুখোশ উন্মোচিত হোক। তাদের চেহারা বের হয়ে আসুক, তাদের শাস্তি হোক।

আর আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি কোনো নিরপরাধের শাস্তি আমরা চাই না। যেহেতু এখন নতুন একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছে। আশা করছি তারা সন্দেহাতীত একটি তদন্ত প্রতিবেদন জাতির সামনে তুলে ধরবেন। যাতে আমরা জানতে পারি এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত ছিলেন।

আরেক শহীদ পরিবারের নারী সদস্য বলেন, আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। জনগণ যেন জানতে পারে ওইদিন আসলে কী হয়েছিল। দেখি কি হয় আমরা এখন আশা করতে পারি, এই বিচার এই দেশের মাটিতেই হবে। অনেক শুকরিয়া যে, শহীদের মর্যাদা দিয়ে আজকের দিনটি (২৫ ফেব্রুয়ারি) শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা ও পালিত হচ্ছে।

এর আগে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিজিবি ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।