নাসরুল্লাহর মৃত্যু হিজবুল্লাহর জন্য নতুন অধ্যায়ের সূচনা
লেবাননের শক্তিশালী শিয়া নেতা হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু হিজবুল্লাহর লড়াইয়ে বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। সংগঠনটির অস্ত্র সমর্পণের দাবি নতুন করে জোরদার হয়েছে। গত মাসে ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত হওয়া নাসরুল্লাহ বহু বছর ধরে হিজবুল্লাহর নেতৃত্বে ছিলেন এবং ইরানের ‘প্রতিরোধ অক্ষের’ গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা সেঞ্চুরি ফাউন্ডেশনের বিশ্লেষক স্যাম হেলার মন্তব্য করেছেন, নাসরুল্লাহর মৃত্যু একটি যুগের সমাপ্তি চিহ্নিত করেছে এবং এই মৃত্যু হিজবুল্লাহর ভবিষ্যৎ কৌশলে মৌলিক পরিবর্তন আনবে। নাসরুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে লেবাননের শিয়া সম্প্রদায়ের বাইরেও প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। ইরান, সিরিয়া এবং বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী অবস্থানকে শক্তিশালী করেছিলেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতের দক্ষিণ প্রান্তে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নাসরুল্লাহ নিহত হন। এটা হিজবুল্লাহর জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় আঘাত। এর আগেই ইসরায়েলি বাহিনী হিজবুল্লাহর বিভিন্ন ঘাঁটিতে হামলা বাড়ায় এবং একের পর এক শীর্ষ নেতাকে টার্গেট করে আসছিল।
নাসরুল্লাহ ১৯৯২ সাল থেকে হিজবুল্লাহর নেতৃত্বে থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। তার জনপ্রিয়তা ২০০৬ সালে ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধের সময় এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। হেলার বলেন, নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহর মূল সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ছিলেন এবং তার নেতৃত্বেই হিজবুল্লাহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে।
এদিকে, হিজবুল্লাহর গভর্নিং শুরা কাউন্সিল এখনও তার উত্তরসূরি ঘোষণা করেনি। সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে যাকে ভাবা হচ্ছিল, সেই শীর্ষ নেতা হাশেম সাফিয়েদ্দিনও কয়েকদিন পর ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন।
নাসরুল্লাহর মৃত্যুর পর হিজবুল্লাহর অস্ত্র সমর্পণের দাবি যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনই সংগঠনটির ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্নও উঠেছে।