নদী গবেষণা ইনিস্টিউটের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে টেন্ডার বানিজ্যের অভিযোগ

দেশের একমাত্র নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট (নগই) ফরিদপুর জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এবার টেন্ডার বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে সেই নদী গবেষণার কেন্দ্রেরই সয়ং মহাপরিচালক (ডিজি)বিরুদ্ধে। নিজের পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে মহাপরিচালকের এ এক অভিনব পদ্ধতি।
গত ৪ফেব্রুয়ারী ইজিপিতে উন্মমুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এর দপ্তর থেকে একটি টেন্ডার আহ্বান করা হয়।বিদেশি ব্যান্ডের ড্রোন ক্রয়করার জন্য, যার টেন্ডার আইডি নং:১০৫৮১৭৬, ১হাজার টাকা দরপত্রের দাম ও জামানত বাবাদ ৪৩হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং ১৮ ফেব্রুয়ারী ছিলো টেন্ডার জমাদানের শেষ দিন, টেন্ডার উন্মুক্ত করার দিন নির্ধারণ করা হয় ১৯ ফেব্রুয়ারী।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারী অনলাইনে টেন্ডার উন্মুক্ত করা হলে দেখা যায় পাচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ টেন্ডারে অংশ গ্রহন করেছে তারা হলো যথা ক্রমে নিচে দেওয়া হলো।(১)গ্যালাক্সি ওয়ার্ল্ড দরপত্র দাখিল করেছেন- ১৩লক্ষ ৪৮হাজার টাকা ( ২) ইউটেক সিস্টেম লিঃদরপত্র দাখিল করেছেন। -১৪ লক্ষ ৮৫হাজার টাকা ( ৩)কিলেস্ট্রাইল টেক লিঃ দরপত্র দাখিল করেছেন -১৪ লক্ষ ৯৫হাজার ৫শত টাকা (৪)হাইড্রল্যান্ড সলিউশন দরপত্র দাখিল করেছে ১৫লক্ষ ২৯হাজার টাকা (৫)মেসার্স আইকনিক ইন্জিনিয়ারিংএন্ড ট্রেডিং কোম্পানী দরপত্র দাখিল করেছেন -১৬ লক্ষ ৪৩হাজার নয়শত নব্বই টাকা।পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন অনুযায়ী সর্বনিন্ম দরদাতাকে কাজ দেওয়ার কথা থাকলে ও বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করে ২লক্ষ ৯৫ হাজার ৯৯০টাকা বেশি দিয়ে কোন প্রকার যাচাই-বাছাই না করে নিজের পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে একাধিক বার কাজ দিয়েছেন বলে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারগন অভিযোগ করেন।
ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট গিয়ে দেখা যায় যেখানে সর্বনিম্ন দরপত্র দাখিল করেছেন গ্যালাক্সি ওয়ার্ল্ড নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং সর্বোচ্চ দরপত্র দাখিল করেছে মেসার্স আইকনিক ইন্জিনিয়ারিং এন্ড ট্রেডিং কোম্পানী। নিয়ম অনুযায়ী সর্ব নিন্ম দরদাতা কে কাজ না দিয়ে, ২লক্ষ ৯৫ হাজার ৯৯০টাকা বেশি দিয়ে টেন্ডারের ঠিকাদার নির্বাচন করেছেন এর সত্যতা পাওয়া যায়।
এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এই টেন্ডারে অংশগ্রহনকারী ঠিকাদার গ্যালাক্সি ওয়ার্ল্ড নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী তাহমিম টুটুল বলেন আমার প্রতিষ্ঠান নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের টেন্ডারের সকল শর্ত পূরন করে, টেন্ডার নোটিশের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যর মান নিশ্চিত ও গ্যারান্টি দিয়ে সরবরাহ কাজের সর্বনিম্ন দরদাতা আমার প্রতিষ্ঠান। মহাপরিচালক এর ব্যাক্তি শর্তপূরন করতে না পারায় ২লক্ষ ৯৫ হাজার ৯৯০ সরকারী টাকা বেশি দিয়ে নিজের সার্থ সিদ্ধি হাসিল করছে।
টেন্ডার বানিজ্যের বিষয়ে অফিস চলাকালীন সরজমিনে ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের দপ্তরে গিয়ে অফিস তাকে পাওয়া যায়নি, পরবর্তীতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নদী গবেষণা ইনিস্টিউটের (নগই) মহাপরিচালক আবু হোরায়রা বলেন , “অভিযোগের বিষয়টা সত্য না, নিয়ম মেনেই সমস্ত কিছু হয়েছে” অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত আরও জানতে চাইলে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে ফোন কেটে দেন।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটির চতুর্থ শ্রেণির ১০টি পদে লোকবল নিয়োগে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছিলো। প্রতিবাদে উওাল হয়ে উঠছিলো পদ বঞ্চিতরা। যা নিয়ে পরবর্তী মাসে ২৫ মার্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যনারে নদী গবেষণার ডিজি ও ডিডির অপসারণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্র-জনতা।
ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি
মোঃতারিকুল ইসলাম