London ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘দেশ নিয়ে ভালো ভাবব, ভালো বলব, ভালো করব’

ফাইল ছবি

ভাবনার শক্তি অসীম। আজকের এই সমাজ–সভ্যতার যা কিছু আমরা দেখছি, উপভোগ করছি, তার শুরুটা হয়েছিল ভাবনার মধ্য দিয়ে। আবার যেসব দুর্ভোগ আমরা ভোগ করছি, তা–ও আমাদের ভাবনারই ফল।

ভাবনাই বাস্তবতাকে আকৃষ্ট করে। ভালো ভাবনা, ইতিবাচক ভাবনা ভালো বাস্তবতা নির্মাণ করে; আর খারাপ ভাবনা, দুর্বল ভাবনা, নেতিবাচক ভাবনা খারাপ বাস্তবতা নিয়ে আসে। আমাদের ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবনকে যেমন দেখতে চাই, তা নির্ভর করছে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও দেশ সম্পর্কে আমাদের আজকের ভাবনা কেমন তার ওপর।

আমরা নিজেদের সম্পর্কে কী ভাবি? আমি কি আত্মবিশ্বাসী? আমি কি সাহসী? আমি কি নির্ভিক? আমি কি দক্ষ? উত্তরগুলো যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে নিজের সম্পর্কে এই ভালো ভাবনা আমাকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে। আর এ ভাবনায় যদি কোনো দুর্বলতা থাকে, দ্বিধা থাকে, তবে সাফল্য অর্জন হবে বেশ কঠিন। তাই ভালো কিছু ভাবতে হবে, ভালো ভাবার চর্চা শুরু করতে হবে।

ঠিক একইভাবে পরিবার নিয়ে আমাদের ভালো ভাবনা আদর্শ পরিবার গড়তে সহায়ক হবে। সমাজ নিয়ে আমাদের ভালো ভাবনা মানবিক মহাসমাজ নির্মাণে সাহায্য করবে। দেশ নিয়ে আমাদের ভালো ভাবনা দেশের সমৃদ্ধির জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

আমরা কেমন বাংলাদেশ চাই? কেমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি? এই চাওয়া, এই ভাবনা, এই স্বপ্ন যত বড় হবে, ভালো হবে, স্বচ্ছ হবে, সুস্পষ্ট হবে, সুনির্দিষ্ট হবে, সামগ্রিক হবে, সম্মিলিত হবে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি তত দ্রুত সোনার বাংলায় পরিণত হবে।

ভালো ভাবনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ভাবনাগুলো প্রকাশ করা।

ভাবনাগুলো যখন প্রকাশিত হবে, তখন সেগুলো প্রাণ পাবে। বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে। আরও বেশিসংখ্যক মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে যাবে। ব্যক্তির ভাবনা তখন সামষ্টিক ভাবনা, সম্মিলিত ভাবনায় পরিণত হবে। তাই ভালো ভাবার পাশাপাশি ভালো বলতে হবে। ভালো কথা বলার, ইতিবাচক কথা বলার চর্চা ও অভ্যাসকে জোরদার করতে হবে। স্বপ্নের বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে দেশ–সম্পর্কিত ভালো ভাবনাগুলো স্মার্টভাবে প্রকাশ করতে হবে, বলতে হবে, লিখতে হবে, জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে হবে।
ভালো ভাবা ও ভালো বলার সঙ্গে সঙ্গে সব থেকে জরুরি হলো ভালো করা। ভালো কাজ করা, কল্যাণকর কাজ করা। অকল্যাণ ও অন্যায় কাজে বাধা দেওয়া। কর্ম ছাড়া ভাবনা বাস্তবায়ন হয় না, স্বপ্নপূরণ হয় না, প্রত্যাশা হতাশায় পরিণত হয়। তাই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। পরিকল্পিতভাবে, সুশৃঙ্খলভাবে ভাবনার অনুকূলে, লক্ষ্যের অনুকূলে কাজ করতে হবে।

নিজের কাজ সবচেয়ে ভালোভাবে করতে হবে। এটাই প্রকৃত দেশপ্রেম। নিজের প্রতি, পরিবারের প্রতি, সমাজের প্রতি এবং দেশের প্রতি আমাদের যার যে দায়িত্ব, তা সবচেয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে, সততার সঙ্গে পালন করতে হবে।

দেশ নিয়ে এই ভালো ভাবা, ভালো বলা, ভালো করার মধ্য দিয়ে আমরা এক বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক, সমমর্মী, মানবিক মহাসমাজ নির্মাণ করতে পারব। গড়ে তুলতে পারব স্বপ্নের বাংলাদেশ, আলোকিত বাংলাদেশ, আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ। যেখানে আমরা সবাই মিলে খুব ভালো থাকব।

আর এ সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম। আগামীর বাংলাদেশ তারুণ্যের বাংলাদেশ। তারুণ্যের শক্তিই এ দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। বাংলাদেশের তরুণেরা পৃথিবীর সবচেয়ে মেধাবী, সবচেয়ে সাহসী, সবচেয়ে আশাবাদী। তারুণ্যের হাত ধরেই বাস্তবায়িত হবে স্বর্গভূমি বাংলাদেশের স্বপ্ন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৬:২৯:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫৫
Translate »

‘দেশ নিয়ে ভালো ভাবব, ভালো বলব, ভালো করব’

আপডেট : ০৬:২৯:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফাইল ছবি

ভাবনার শক্তি অসীম। আজকের এই সমাজ–সভ্যতার যা কিছু আমরা দেখছি, উপভোগ করছি, তার শুরুটা হয়েছিল ভাবনার মধ্য দিয়ে। আবার যেসব দুর্ভোগ আমরা ভোগ করছি, তা–ও আমাদের ভাবনারই ফল।

ভাবনাই বাস্তবতাকে আকৃষ্ট করে। ভালো ভাবনা, ইতিবাচক ভাবনা ভালো বাস্তবতা নির্মাণ করে; আর খারাপ ভাবনা, দুর্বল ভাবনা, নেতিবাচক ভাবনা খারাপ বাস্তবতা নিয়ে আসে। আমাদের ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবনকে যেমন দেখতে চাই, তা নির্ভর করছে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও দেশ সম্পর্কে আমাদের আজকের ভাবনা কেমন তার ওপর।

আমরা নিজেদের সম্পর্কে কী ভাবি? আমি কি আত্মবিশ্বাসী? আমি কি সাহসী? আমি কি নির্ভিক? আমি কি দক্ষ? উত্তরগুলো যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে নিজের সম্পর্কে এই ভালো ভাবনা আমাকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে। আর এ ভাবনায় যদি কোনো দুর্বলতা থাকে, দ্বিধা থাকে, তবে সাফল্য অর্জন হবে বেশ কঠিন। তাই ভালো কিছু ভাবতে হবে, ভালো ভাবার চর্চা শুরু করতে হবে।

ঠিক একইভাবে পরিবার নিয়ে আমাদের ভালো ভাবনা আদর্শ পরিবার গড়তে সহায়ক হবে। সমাজ নিয়ে আমাদের ভালো ভাবনা মানবিক মহাসমাজ নির্মাণে সাহায্য করবে। দেশ নিয়ে আমাদের ভালো ভাবনা দেশের সমৃদ্ধির জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

আমরা কেমন বাংলাদেশ চাই? কেমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি? এই চাওয়া, এই ভাবনা, এই স্বপ্ন যত বড় হবে, ভালো হবে, স্বচ্ছ হবে, সুস্পষ্ট হবে, সুনির্দিষ্ট হবে, সামগ্রিক হবে, সম্মিলিত হবে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি তত দ্রুত সোনার বাংলায় পরিণত হবে।

ভালো ভাবনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ভাবনাগুলো প্রকাশ করা।

ভাবনাগুলো যখন প্রকাশিত হবে, তখন সেগুলো প্রাণ পাবে। বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে। আরও বেশিসংখ্যক মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে যাবে। ব্যক্তির ভাবনা তখন সামষ্টিক ভাবনা, সম্মিলিত ভাবনায় পরিণত হবে। তাই ভালো ভাবার পাশাপাশি ভালো বলতে হবে। ভালো কথা বলার, ইতিবাচক কথা বলার চর্চা ও অভ্যাসকে জোরদার করতে হবে। স্বপ্নের বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে দেশ–সম্পর্কিত ভালো ভাবনাগুলো স্মার্টভাবে প্রকাশ করতে হবে, বলতে হবে, লিখতে হবে, জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে হবে।
ভালো ভাবা ও ভালো বলার সঙ্গে সঙ্গে সব থেকে জরুরি হলো ভালো করা। ভালো কাজ করা, কল্যাণকর কাজ করা। অকল্যাণ ও অন্যায় কাজে বাধা দেওয়া। কর্ম ছাড়া ভাবনা বাস্তবায়ন হয় না, স্বপ্নপূরণ হয় না, প্রত্যাশা হতাশায় পরিণত হয়। তাই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। পরিকল্পিতভাবে, সুশৃঙ্খলভাবে ভাবনার অনুকূলে, লক্ষ্যের অনুকূলে কাজ করতে হবে।

নিজের কাজ সবচেয়ে ভালোভাবে করতে হবে। এটাই প্রকৃত দেশপ্রেম। নিজের প্রতি, পরিবারের প্রতি, সমাজের প্রতি এবং দেশের প্রতি আমাদের যার যে দায়িত্ব, তা সবচেয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে, সততার সঙ্গে পালন করতে হবে।

দেশ নিয়ে এই ভালো ভাবা, ভালো বলা, ভালো করার মধ্য দিয়ে আমরা এক বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক, সমমর্মী, মানবিক মহাসমাজ নির্মাণ করতে পারব। গড়ে তুলতে পারব স্বপ্নের বাংলাদেশ, আলোকিত বাংলাদেশ, আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ। যেখানে আমরা সবাই মিলে খুব ভালো থাকব।

আর এ সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম। আগামীর বাংলাদেশ তারুণ্যের বাংলাদেশ। তারুণ্যের শক্তিই এ দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। বাংলাদেশের তরুণেরা পৃথিবীর সবচেয়ে মেধাবী, সবচেয়ে সাহসী, সবচেয়ে আশাবাদী। তারুণ্যের হাত ধরেই বাস্তবায়িত হবে স্বর্গভূমি বাংলাদেশের স্বপ্ন।