‘থাম্বনেইল’ থেকে পাকিস্তানি শিল্পীদের বাদ দিল বলিউড

বলিউডের কয়েকটি জনপ্রিয় সিনেমার গানের থাম্বনেইল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে পাকিস্তানি তারকাদের ছবি। ‘রইস’, ‘কাপুর অ্যান্ড সন্স’ এবং ‘সনম তেরি কসম’ ছবির গানে আগে যাঁদের দেখা যেত, এখন সেখানে কেবল ভারতীয় অভিনয়শিল্পীদের রাখা হয়েছে।
ভারতের বিভিন্ন বিনোদনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, এসব ছবির গানের প্রচারচিত্র থেকে মাহিরা খান, ফাওয়াদ খান ও মাওরা হোসেনের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ব্যবহারকারীরা এই পরিবর্তন প্রথম লক্ষ করেন গান শোনার জনপ্রিয় অ্যাপ ‘উইঙ্ক মিউজিক’, ‘জিওসাওয়ান’ ও ‘স্পটিফাই’তে।
ভারতের হামলায় উচ্ছ্বসিত বলিউড, ‘কাপুরুষতা’ বলছেন পাকিস্তানের তারকারা
২০১৭ সালের বহুল আলোচিত বলিউড ছবি ‘রইস’-এ শাহরুখ খানের বিপরীতে অভিনয় করেন পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাহিরা খান। ছবির ‘জালিমা’ গানের প্রচারচিত্রে দুজনকেই দেখা যেত। এখন সেই চিত্রে কেবল শাহরুখ খানকেই দেখা যাচ্ছে। এসব অ্যাপ ছাড়াও ইউটিউবেও মাহিরাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফাওয়াদ খান অভিনয় করেছিলেন ‘কাপুর অ্যান্ড সন্স’ সিনেমায়। ছবিতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ও আলিয়া ভাট। এখন গানের প্রচারচিত্রে শুধু আলিয়া ও সিদ্ধার্থই রয়েছেন, ফাওয়াদের ছবিটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাওরা হোসেন অভিনয় করেছিলেন ২০১৬ সালের রোমান্টিক ট্র্যাজেডি ‘সনম তেরি কসম’ সিনেমায়। ছবির গানের প্রচারচিত্রে আগে তাঁর মুখ দেখা গেলেও এখন কেবল সহ-অভিনেতা হর্ষবর্ধন রানেকে রাখা হয়েছে।
২০১৬ সালের ভারতের উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার পর ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক সম্পর্কে ব্যাপক অবনতি ঘটে। তখন থেকেই ভারতের বিনোদনজগতে পাকিস্তানি শিল্পীদের অংশগ্রহণ নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। চলতি বছর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছিল। সাম্প্রতিক কিছু রাজনৈতিক উত্তেজনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও জটিল হয়ে পড়ে। ছবিগুলো অনেক আগে মুক্তি পেলেও সম্প্রতি গান শোনার অ্যাপগুলোতে এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বলিউডের বিশ্লেষকদের ধারণা, এসব পরিবর্তনের পেছনে রাজনৈতিক চাপ, দর্শকপছন্দ কিংবা প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব নীতিমালার প্রভাব থাকতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বলিউড বরাবরই নানা রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে। পাকিস্তানি শিল্পীদের বিতর্ক এর একটি বড় উদাহরণ। এখন যেভাবে তাঁদের মুখ প্রচারচিত্র থেকে সরানো হচ্ছে, তা শুধু ব্যক্তিকে নয়, শিল্পকেও একরকম ‘মুছে’ দেওয়ার চেষ্টা। এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বা অ্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা। অনেকেই বলছেন, এটি একপ্রকার ‘ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা’। কেউ বলছেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রতিফলনই এই পরিবর্তন। তবে অনেকেই আবার বিষয়টি হালকাভাবে নিয়ে বলেছেন, গানের চিত্র নয়, গানই আসল।