London ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবি-জাবিতে রুখে দাঁড়ানোর কেউ ছিল না? প্রশ্ন ফারুকীর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে তোফাজ্জল নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে সারাদেশ। এমন হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছেন সর্বমহলের মানুষ; থেমে নেই দেশের শোবিজ অঙ্গনও। তাই আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আর চুপ থাকতে পারলেন না চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী।

সাম্প্রতিক এ সকল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ফারুকী। জানিয়েছেন ‘মববাজি’ বন্ধ করার আহ্বান। বৃহস্পতিবার সকালে ফারুকী এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘তুমি যদি স্বাধীনতার মর্ম না বোঝো, তাহলে তুমি স্বাধীনতার স্বাদ হারাবে। আব্বার কাছে শুনতাম, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেকের মধ্যেই জোশ চলে আসছিলো যে সে-ই সব। সে নিজেই অভিযোগকারী, নিজেই বিচারক, নিজেই এক্সিকিউশনার। হাতে অস্ত্র আছে, অথবা আছে মবের শক্তি। সুতরাং মার, মেরে ফেল। ফল কি হয়েছিল আমরা জানি।’

ফারুকী লেখেন,‘আচ্ছা স্বাধীনতার পর না হয় একটা বিশৃঙ্খল অবস্থা ছিল, এমন কি যখন আওয়ামী লীগের কঠিন আঁটুনির ভেতর আটকা ছিল দেশ, তখনও কি আমরা বাড্ডার এক মাকে ছেলেধরা সন্দেহে মারি নাই? রংপুরে নামাজের পর এক মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে মেরে পুড়িয়ে দেই নাই?’

ফারুকী লেখেন, ‘আমি আশা করছিলাম, এই নতুন স্বাধীনতা প্রাপ্তির সাথে সাথে নতুন দায়িত্বের ব্যাপারটা আমরা উপলব্ধি করব। আমাদের দিলে রহম জিনিসটা আসবে। একশ জন মববাজি করতে আসলে দুইজন হলেও রুখে দাঁড়াবে। ঢাবি আর জাহাঙ্গীরনগরে কি এরকম চারজন ছিলো না রুখে দাঁড়ানোর? এটা লজ্জার, বেদনার।’

সবশেষ ফারুকী লেখেন, ‘সবাই দায়িত্ব নিই চলেন। মববাজি বন্ধ করেন। ফ্যাসিবাদিদের ফাও আলোচনার বিষয় উপহার দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, প্লিজ। আলোচনাটা থাকতে দেন রিফর্মে, ফ্যাসিবাদের বিচারে।’

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের সামনে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তোফাজ্জল ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

একইদিন বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। শামীমকে পেটানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারও মৃত্যু হয়। ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতার বিরুদ্ধে পূর্বে মাদক ব্যাবসা, জমিদখল, অস্ত্রবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৮:৫৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫৬
Translate »

ঢাবি-জাবিতে রুখে দাঁড়ানোর কেউ ছিল না? প্রশ্ন ফারুকীর

আপডেট : ০৮:৫৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে তোফাজ্জল নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে সারাদেশ। এমন হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছেন সর্বমহলের মানুষ; থেমে নেই দেশের শোবিজ অঙ্গনও। তাই আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আর চুপ থাকতে পারলেন না চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী।

সাম্প্রতিক এ সকল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ফারুকী। জানিয়েছেন ‘মববাজি’ বন্ধ করার আহ্বান। বৃহস্পতিবার সকালে ফারুকী এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘তুমি যদি স্বাধীনতার মর্ম না বোঝো, তাহলে তুমি স্বাধীনতার স্বাদ হারাবে। আব্বার কাছে শুনতাম, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেকের মধ্যেই জোশ চলে আসছিলো যে সে-ই সব। সে নিজেই অভিযোগকারী, নিজেই বিচারক, নিজেই এক্সিকিউশনার। হাতে অস্ত্র আছে, অথবা আছে মবের শক্তি। সুতরাং মার, মেরে ফেল। ফল কি হয়েছিল আমরা জানি।’

ফারুকী লেখেন,‘আচ্ছা স্বাধীনতার পর না হয় একটা বিশৃঙ্খল অবস্থা ছিল, এমন কি যখন আওয়ামী লীগের কঠিন আঁটুনির ভেতর আটকা ছিল দেশ, তখনও কি আমরা বাড্ডার এক মাকে ছেলেধরা সন্দেহে মারি নাই? রংপুরে নামাজের পর এক মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে মেরে পুড়িয়ে দেই নাই?’

ফারুকী লেখেন, ‘আমি আশা করছিলাম, এই নতুন স্বাধীনতা প্রাপ্তির সাথে সাথে নতুন দায়িত্বের ব্যাপারটা আমরা উপলব্ধি করব। আমাদের দিলে রহম জিনিসটা আসবে। একশ জন মববাজি করতে আসলে দুইজন হলেও রুখে দাঁড়াবে। ঢাবি আর জাহাঙ্গীরনগরে কি এরকম চারজন ছিলো না রুখে দাঁড়ানোর? এটা লজ্জার, বেদনার।’

সবশেষ ফারুকী লেখেন, ‘সবাই দায়িত্ব নিই চলেন। মববাজি বন্ধ করেন। ফ্যাসিবাদিদের ফাও আলোচনার বিষয় উপহার দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, প্লিজ। আলোচনাটা থাকতে দেন রিফর্মে, ফ্যাসিবাদের বিচারে।’

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের সামনে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তোফাজ্জল ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

একইদিন বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। শামীমকে পেটানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারও মৃত্যু হয়। ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতার বিরুদ্ধে পূর্বে মাদক ব্যাবসা, জমিদখল, অস্ত্রবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।