London ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামায়াতের ৪ নেতা-কর্মীকে হত্যা : কাদের মির্জাসহ ১১২ জনের নামে মামলা

জামায়াত-শিবিরের চার নেতা-কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের নিহত সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মো. আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৮ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন অভিযোগটি আমলে নিয়ে এ ঘটনায় আগে মামলা না হয়ে থাকলে নিয়মিত মামলা হিসেবে (এফআইআর) রেকর্ড করতে কোম্পানীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীর আইনজীবী ও জেলা বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  

মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ ১১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছাড়াও কোম্পানীগঞ্জের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামান, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলামসহ ১৯ পুলিশকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী জানান, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে মিথ্যা মামলায় দলের অন্যতম নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের প্রতিবাদে বসুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। এতে আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার সহযোগীরা অস্ত্র হাতে মিছিলে হামলা চালায়। এতে কাদের মির্জা ও ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন মিকনের গুলিতে বাদীর ভাই সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে নিহত হন।

এছাড়া ছাত্রলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন মুন্না ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের গুলিতে চরহাজারীর আবদুর রাজ্জাকের ছেলে আবদুল আজিজ রায়হান, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, কাদের মির্জার ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত ও সাবেক কাউন্সিলর আবুল খায়েরের গুলিতে চরকাঁকড়ার আবুল কাশেমের ছেলে সাইফুল ইসলাম বাবুল মারা যায়।

অন্যদিকে, একই সময় কোম্পানীগঞ্জের তৎকালীন ইউএনও মো. নুরুজ্জামানের নির্দেশে পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সফিকুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক (এসআই) শিশির কুমার, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) উক্যসিং মারমার গুলিতে বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রহমানের ছেলে মতিউর রহমান সজিব নিহত হন।

মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আরেক ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন ও অপর আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০ জন আসামি মিছিলকারী অন্তত ১০০ জন জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

মামলার বাদী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, আমি এবং আমার ভাই সাইফুল ইসলাম জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। আমরা ঘটনার সময়ে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেই। এতে কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার সহযোগী ও প্রশাসনের গুলিতে আমার ভাইসহ চারজন ঘটনাস্থলে নিহত হন।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমরা এ হত্যার বিচার চাইলেও আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো বিচার পাইনি। এমনকি গত ১১ বছর ভুক্তভোগী নিহতদের পরিবারের লোকজন বাড়িঘরে থাকতে পারিনি। বর্তমানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের হওয়ায় নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:২০:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৪৮
Translate »

জামায়াতের ৪ নেতা-কর্মীকে হত্যা : কাদের মির্জাসহ ১১২ জনের নামে মামলা

আপডেট : ১১:২০:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জামায়াত-শিবিরের চার নেতা-কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের নিহত সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মো. আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৮ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন অভিযোগটি আমলে নিয়ে এ ঘটনায় আগে মামলা না হয়ে থাকলে নিয়মিত মামলা হিসেবে (এফআইআর) রেকর্ড করতে কোম্পানীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীর আইনজীবী ও জেলা বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  

মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ ১১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছাড়াও কোম্পানীগঞ্জের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামান, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলামসহ ১৯ পুলিশকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী জানান, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে মিথ্যা মামলায় দলের অন্যতম নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের প্রতিবাদে বসুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। এতে আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার সহযোগীরা অস্ত্র হাতে মিছিলে হামলা চালায়। এতে কাদের মির্জা ও ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন মিকনের গুলিতে বাদীর ভাই সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে নিহত হন।

এছাড়া ছাত্রলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন মুন্না ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের গুলিতে চরহাজারীর আবদুর রাজ্জাকের ছেলে আবদুল আজিজ রায়হান, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, কাদের মির্জার ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত ও সাবেক কাউন্সিলর আবুল খায়েরের গুলিতে চরকাঁকড়ার আবুল কাশেমের ছেলে সাইফুল ইসলাম বাবুল মারা যায়।

অন্যদিকে, একই সময় কোম্পানীগঞ্জের তৎকালীন ইউএনও মো. নুরুজ্জামানের নির্দেশে পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সফিকুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক (এসআই) শিশির কুমার, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) উক্যসিং মারমার গুলিতে বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রহমানের ছেলে মতিউর রহমান সজিব নিহত হন।

মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আরেক ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন ও অপর আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০ জন আসামি মিছিলকারী অন্তত ১০০ জন জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

মামলার বাদী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, আমি এবং আমার ভাই সাইফুল ইসলাম জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। আমরা ঘটনার সময়ে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেই। এতে কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার সহযোগী ও প্রশাসনের গুলিতে আমার ভাইসহ চারজন ঘটনাস্থলে নিহত হন।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমরা এ হত্যার বিচার চাইলেও আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো বিচার পাইনি। এমনকি গত ১১ বছর ভুক্তভোগী নিহতদের পরিবারের লোকজন বাড়িঘরে থাকতে পারিনি। বর্তমানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের হওয়ায় নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।