London ০৩:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণমিছিলের বদলে শহীদ মিনারেই সমাবেশ করলো বাম সংগঠনগুলো

অনলাইন ডেস্ক

সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন, হত্যাকাণ্ড বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, আছিয়াসহ সব হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবি জানিয়েছে বাম সংগঠনগুলো।

শনিবার (১৫ মার্চ) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে সমাবেশে এ দাবি জানান তারা। এসময় পূর্বঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে শহীদ মিনারেই সমাবেশ করেন তারা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে এক রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে বিতাড়ন করা হয়েছে। বৈষম্যহীন সমাজের আকাঙ্ক্ষায় লাখো মানুষ এই গণআন্দোলনে শামিল হয়েছিল। মানুষ আশা করেছিল, হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে একটা নিরাপদ সমাজ পাবে। কিন্তু হাসিনার পতনের পর দেশে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও বারবার আমাদের আশাভঙ্গ ঘটেছে।

তারা বলেন, সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। অভ্যুত্থানের পরপরই বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। মব সন্ত্রাসের নামে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা, পাওনা টাকার দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের হত্যা, রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা, চট্টগ্রাম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী হত্যাসহ কোনো অপরাধের বিচার করতে অন্তর্বর্তী সরকার সমর্থ্য হয়নি। সরকারের ব্যর্থতা এবং বিচারহীনতার দীর্ঘ ইতিহাস অপরাধীদের অপরাধ সংঘটিত করতে উৎসাহ যুগিয়ে যাচ্ছে।

বাম সংগঠনের নেতারা বলেন, মুখে অভ্যুত্থানের চেতনার কথা বললেও কার্যত তার কোনো ফলাফল দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে না। বরং দ্রব্যমূল্য, আইনশৃংখলা পরিস্থিতি, মব সন্ত্রাস ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের চূড়ান্ত ব্যর্থতা প্রতীয়মান হয়েছে ।

তারা বলেন, আছিয়ার মৃত্যুতে সারাদেশে শোকাহত। কিন্তু আছিয়ার মতো ঘটনা বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে।

তাদের দাবিসমূহ:
১. আছিয়াসহ সব হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার করতে হবে।
২. ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে।
৩. জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।
৪. মসজিদ, মন্দির, মাজারে হামলাকারী মব সন্ত্রাসীদের বিচার করতে হবে।
৫. চট্টগ্রাম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ, যৌথ বাহিনী দ্বারা শ্রমিক হত্যার বিচার করতে হবে।
৬. সাগর-রুনি, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ আমলে সংগঠিত হত্যার বিচার করতে হবে।
৭. হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা, লুটপাটের বিচার করতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক সংসদ, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি), পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

তবে গণমিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে, টিএসসিতে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শহীদ মিনারেই কর্মসূচির ইতি টানা হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৬:৪৭:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
১৪
Translate »

গণমিছিলের বদলে শহীদ মিনারেই সমাবেশ করলো বাম সংগঠনগুলো

আপডেট : ০৬:৪৭:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন, হত্যাকাণ্ড বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, আছিয়াসহ সব হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবি জানিয়েছে বাম সংগঠনগুলো।

শনিবার (১৫ মার্চ) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে সমাবেশে এ দাবি জানান তারা। এসময় পূর্বঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে শহীদ মিনারেই সমাবেশ করেন তারা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে এক রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে বিতাড়ন করা হয়েছে। বৈষম্যহীন সমাজের আকাঙ্ক্ষায় লাখো মানুষ এই গণআন্দোলনে শামিল হয়েছিল। মানুষ আশা করেছিল, হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে একটা নিরাপদ সমাজ পাবে। কিন্তু হাসিনার পতনের পর দেশে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও বারবার আমাদের আশাভঙ্গ ঘটেছে।

তারা বলেন, সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। অভ্যুত্থানের পরপরই বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। মব সন্ত্রাসের নামে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা, পাওনা টাকার দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের হত্যা, রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা, চট্টগ্রাম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী হত্যাসহ কোনো অপরাধের বিচার করতে অন্তর্বর্তী সরকার সমর্থ্য হয়নি। সরকারের ব্যর্থতা এবং বিচারহীনতার দীর্ঘ ইতিহাস অপরাধীদের অপরাধ সংঘটিত করতে উৎসাহ যুগিয়ে যাচ্ছে।

বাম সংগঠনের নেতারা বলেন, মুখে অভ্যুত্থানের চেতনার কথা বললেও কার্যত তার কোনো ফলাফল দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে না। বরং দ্রব্যমূল্য, আইনশৃংখলা পরিস্থিতি, মব সন্ত্রাস ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের চূড়ান্ত ব্যর্থতা প্রতীয়মান হয়েছে ।

তারা বলেন, আছিয়ার মৃত্যুতে সারাদেশে শোকাহত। কিন্তু আছিয়ার মতো ঘটনা বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে।

তাদের দাবিসমূহ:
১. আছিয়াসহ সব হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার করতে হবে।
২. ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে।
৩. জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।
৪. মসজিদ, মন্দির, মাজারে হামলাকারী মব সন্ত্রাসীদের বিচার করতে হবে।
৫. চট্টগ্রাম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ, যৌথ বাহিনী দ্বারা শ্রমিক হত্যার বিচার করতে হবে।
৬. সাগর-রুনি, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ আমলে সংগঠিত হত্যার বিচার করতে হবে।
৭. হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা, লুটপাটের বিচার করতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক সংসদ, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি), পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

তবে গণমিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে, টিএসসিতে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শহীদ মিনারেই কর্মসূচির ইতি টানা হয়।