London ০২:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষমতার চেয়ারে যারা বসে, সহজে এটা ছাড়তে চায় না: দুদু

অনলাইন ডেস্ক

গণতন্ত্র বিধি ব্যবস্থা যারা পছন্দ করেন তাদের সতর্ক থাকতে হবে জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, যারা গণতন্ত্রকে ভালোবাসে, যারা গণতন্ত্র পছন্দ করে, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যৎ খারাপ। খারাপ বলার কারণ হলো ক্ষমতার চেয়ারে যারা বসে, সহজে এটা ছাড়তে চায় না। তারা বুঝতেও চায় না যে এটা তাদের কাজ না।

শনিবার (১৫ জানুয়ারি) গণতান্ত্রিক জাগ্রত বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, একটা গোষ্ঠী আছে যারা অতীত, এমনকি ভবিষ্যৎও দেখতে পায়। তারা মনে করে একমাসের মধ্যে সরকার পরিবর্তন, হাসিনার বিদায় এবং বিপ্লব গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে। কিন্তু অতীতে কি ছিল এটা তারা একসেপ্ট করতে চায় না। এমনকি সরকারের প্রধান যে ব্যক্তি আছেন, তিনিও অতীতটা দেখতে পারেন না। অতীতে আর যান না। এক মাসের মধ্যে আটকে গেছেন।

তিনি বলেন, ড. ইউনূস আমেরিকা গিয়ে একজনকে পরিচয় করিয়ে দিলেন, সে নাকি মাস্টারমাইন্ড। অর্থাৎ এই ছেলেটি এক মাসের ভেতরে সবকিছু উদ্ধার করে ফেলেছে। এমনকি হাসিনাকেও তাড়িয়েছে। সবকিছু সফল করে ফেলেছে। আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয়, ড. ইউনুস একমাসের মধ্যে এ রকম একটা সফল আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড খুঁজে ফেলেন, তাহলে জিনিসপত্রের দাম কমাতে ছয় মাসেও কেন হচ্ছে না? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে তাহলে কেন ছয় মাস হচ্ছে না? মাস্টারমাইন্ড তো একেকটা বের করতে পারতো! খাদ্যের মাস্টারমাইন্ড, আইনশৃঙ্খলার মাস্টারমাইন্ড, বাণিজ্যের মাস্টারমাইন্ড বের করতে পারত। সবকিছুর একটা সুস্থতা আছে। শয়তানিরও একটা সুস্থতা আছে। এ কয়টা লোক গত ছয় মাসে বাংলাদেশে যা করেছে সেটা খুব ভয়ংকর।

পরিবেশ উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, একজন তো বলেই ফেলল এই ৫৩ বছরে রাজনীতিবিদরা কি করেছে। আমি তাকে পরিবেশ আন্দোলনের সফল ব্যক্তি হিসেবে মনে করি। কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি কতটা কাজ করেছেন জানি না।

অন্তর্ববর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, ছাত্রদের কাঁধে পা উঠিয়ে আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন। রাজনীতিকে ছোট করবেন না। রাজনীতিবিদদের ছোট করবেন না। আন্দোলনকারীদের ছোট করবেন না। তাহলে দেশ থাকবে না। জনগণকে সংগঠিত করতে হলে, আমাদের ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক হতে হবে।

তিনি বলেন, কোনো রাজনীতিবিদরা এনজিও করতে যায় না। তারা সাধারণ মানুষের কাছে যায়। এজিও’র যে অত্যাচার সেটার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষ রাজনীতিবিদদের কাছে আসে। কেউ কেউ গলায়ও দড়ি দেয়। তারা এত হতাশ হয়ে যায়। কিন্তু রাজনীতিবিদরা স্বপ্নের জাল বুনতে থাকে। তারা কখনও জনগণকে সাফল্য দিতে পারে আবার কখনও পারে না। কিন্তু শেষ বিচারে রাজনীতিবিদরাই দেশ পরিচালনা করেন। সেই রাজনীতিবিদরা যখন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে তখন দেশের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাবে। ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হবে। সেজন্য রাজনীতিবিদদের যারা ছোট করছে তারা আসলে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরছে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম কলিমের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, শাহজাহান মিয়া সম্রাটসহ অনেকে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:৪০:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
১৯
Translate »

ক্ষমতার চেয়ারে যারা বসে, সহজে এটা ছাড়তে চায় না: দুদু

আপডেট : ১১:৪০:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গণতন্ত্র বিধি ব্যবস্থা যারা পছন্দ করেন তাদের সতর্ক থাকতে হবে জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, যারা গণতন্ত্রকে ভালোবাসে, যারা গণতন্ত্র পছন্দ করে, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যৎ খারাপ। খারাপ বলার কারণ হলো ক্ষমতার চেয়ারে যারা বসে, সহজে এটা ছাড়তে চায় না। তারা বুঝতেও চায় না যে এটা তাদের কাজ না।

শনিবার (১৫ জানুয়ারি) গণতান্ত্রিক জাগ্রত বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, একটা গোষ্ঠী আছে যারা অতীত, এমনকি ভবিষ্যৎও দেখতে পায়। তারা মনে করে একমাসের মধ্যে সরকার পরিবর্তন, হাসিনার বিদায় এবং বিপ্লব গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে। কিন্তু অতীতে কি ছিল এটা তারা একসেপ্ট করতে চায় না। এমনকি সরকারের প্রধান যে ব্যক্তি আছেন, তিনিও অতীতটা দেখতে পারেন না। অতীতে আর যান না। এক মাসের মধ্যে আটকে গেছেন।

তিনি বলেন, ড. ইউনূস আমেরিকা গিয়ে একজনকে পরিচয় করিয়ে দিলেন, সে নাকি মাস্টারমাইন্ড। অর্থাৎ এই ছেলেটি এক মাসের ভেতরে সবকিছু উদ্ধার করে ফেলেছে। এমনকি হাসিনাকেও তাড়িয়েছে। সবকিছু সফল করে ফেলেছে। আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয়, ড. ইউনুস একমাসের মধ্যে এ রকম একটা সফল আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড খুঁজে ফেলেন, তাহলে জিনিসপত্রের দাম কমাতে ছয় মাসেও কেন হচ্ছে না? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে তাহলে কেন ছয় মাস হচ্ছে না? মাস্টারমাইন্ড তো একেকটা বের করতে পারতো! খাদ্যের মাস্টারমাইন্ড, আইনশৃঙ্খলার মাস্টারমাইন্ড, বাণিজ্যের মাস্টারমাইন্ড বের করতে পারত। সবকিছুর একটা সুস্থতা আছে। শয়তানিরও একটা সুস্থতা আছে। এ কয়টা লোক গত ছয় মাসে বাংলাদেশে যা করেছে সেটা খুব ভয়ংকর।

পরিবেশ উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, একজন তো বলেই ফেলল এই ৫৩ বছরে রাজনীতিবিদরা কি করেছে। আমি তাকে পরিবেশ আন্দোলনের সফল ব্যক্তি হিসেবে মনে করি। কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি কতটা কাজ করেছেন জানি না।

অন্তর্ববর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, ছাত্রদের কাঁধে পা উঠিয়ে আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন। রাজনীতিকে ছোট করবেন না। রাজনীতিবিদদের ছোট করবেন না। আন্দোলনকারীদের ছোট করবেন না। তাহলে দেশ থাকবে না। জনগণকে সংগঠিত করতে হলে, আমাদের ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক হতে হবে।

তিনি বলেন, কোনো রাজনীতিবিদরা এনজিও করতে যায় না। তারা সাধারণ মানুষের কাছে যায়। এজিও’র যে অত্যাচার সেটার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষ রাজনীতিবিদদের কাছে আসে। কেউ কেউ গলায়ও দড়ি দেয়। তারা এত হতাশ হয়ে যায়। কিন্তু রাজনীতিবিদরা স্বপ্নের জাল বুনতে থাকে। তারা কখনও জনগণকে সাফল্য দিতে পারে আবার কখনও পারে না। কিন্তু শেষ বিচারে রাজনীতিবিদরাই দেশ পরিচালনা করেন। সেই রাজনীতিবিদরা যখন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে তখন দেশের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাবে। ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হবে। সেজন্য রাজনীতিবিদদের যারা ছোট করছে তারা আসলে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরছে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম কলিমের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, শাহজাহান মিয়া সম্রাটসহ অনেকে।