ওসির কৌশলে আত্মসমর্পণ করলেন আওয়ামী লীগ নেতা নাসিরউদ্দিন থানা থেকে পালানোর গুজব, পরদিন সকালে বোনকে সঙ্গে নিয়ে থানায় হাজির

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসিরউদ্দিনকে ঘিরে একদিনে ঘটে যায় নাটকীয় ঘটনা। সোমবার (১২ মে) দুপুরে বাজার থেকে থানায় নেওয়া, বিকেলে ছেড়ে দেওয়া, পরে পালানোর গুজব, আর সবশেষে মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে আত্মসমর্পণ—এই পুরো ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয় স্থানীয় রাজনীতিতে।
জানা যায়, সোমবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে আলফাডাঙ্গা বাজারে নিজস্ব টিনের দোকানে বসে ছিলেন নাসিরউদ্দিন। সেখান থেকে তাকে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্র জানায়, তার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ থাকায় থানায় নিয়ে গিয়ে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এরপরই কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়াতে শুরু করে যে নাসিরউদ্দিন থানায় না থেকে পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়, অন্যদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনেও নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “নাসিরউদ্দিনকে শুধুমাত্র কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি পালিয়ে যাননি, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।”
ওসি আরও জানান, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুজব ছড়ানো হয়েছে। এতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।”
গুজবের রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল ৮টার দিকে নাসিরউদ্দিন তার বোনকে সঙ্গে নিয়ে আলফাডাঙ্গা থানায় উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন। থানা সূত্রে জানা গেছে, আত্মসমর্পণের সময় তিনি স্বাভাবিক ছিলেন এবং ওসি’র সঙ্গে বেশ কিছু সময় কথা বলেন।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই মনে করছেন, ওসি হারুন অর রশিদের কৌশলী ও ইতিবাচক ভূমিকাই নাসিরউদ্দিনকে আত্মসমর্পণে উদ্বুদ্ধ করেছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর এলাকায় এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কেউ কেউ বিষয়টিকে প্রশাসনের সুচিন্তিত পদক্ষেপ বললেও, অন্যরা এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করছেন।
এ বিষয়ে এখনো নাসিরউদ্দিন কিংবা তার পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।