London ১১:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলের ৪ নারী সেনাকে মুক্তি দিলো হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে গাজায় জিম্মি থাকা চার ইসরায়েলি নারী সেনাকে মুক্তি দিলো হামাস। মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন- কারিনা আরিয়েভ, দানিয়েলা গিলবোয়া, নামা লেভি ও লিরি আলবাগ। এই চারজনই ইসরায়েলি সেনা, যারা ইসরায়েল-গাজা সীমান্তে নজরদারির কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

এর বিনিময়ে ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে দুই পক্ষই জিম্মি ও বন্দিদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে।

এর আগে যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ৩ জিম্মিকে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করেছিল হামাস। এরপরই ইসরায়েলের কারাগার থেকে অন্তত ৯০ ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েল। প্রায় ১৫ মাস ধরে অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে দখলদার বাহিনী।

ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ এবং ক্রমাগত হামলার হুমকির কারণে গাজার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে বেরিয়েছে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। উত্তর গাজা থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি যুদ্ধবিরতি বহাল থাকায় নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার আশায় আছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহর এবং শরণার্থী শিবিরে সামরিক অভিযানে ‌‘যুদ্ধের মতো’ কৌশল ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছে জাতিসংঘ। কারণ গত পাঁচদিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে সেখানে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১৪ জন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পশ্চিম তীরের শহরটিতে ড্রোন থেকে অভিযানের বিষয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছিল। গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম সপ্তাহেই পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের এই অভিযান শুরু হয়। অভিযানটিতে ভারী সামরিক সরঞ্জামসহ হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। ইসরায়েলের এক মুখপাত্র বলেন, শহরটির শরণার্থী শিবিরে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপস্থিতির তথ্যেরভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছে নারী এবং শিশুরা। অবরুদ্ধ এই উপত্যকাকে এক ধ্বসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরায়েল। সেখানে মসজিদ, হাসপাতাল, স্কুল, আবাসিক ভবন এমন কোনো স্থান বাকি নেই যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়নি।

গাজায় যুদ্ধবিরতি চলছে। কিন্তু এমন এক পর্যায়ে এসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে যখন ফিলিস্তিনিরা পুরোপুরি নিঃস্ব। তাদের হারানোর আর কিছু বাকি নেই। তাদের মাথার ওপরের ছাদ, পায়ের নিচের মাটি, খাবার সবকিছুই কেড়ে নিয়েছে দখলদার বাহিনী।

এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামাসের সঙ্গে বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসাবে গাজা থেকে বন্দীদের গ্রহণ করার জন্য তারা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। মানবসম্পদ বিভাগ প্রাথমিক অভ্যর্থনা পয়েন্টগুলো স্থাপন করেছে এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সেখানে চিকিত্সা সেবা এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা প্রদান করা হবে। এরপরে মুক্তি পাওয়া নারীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০১:৪৯:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
১০
Translate »

ইসরায়েলের ৪ নারী সেনাকে মুক্তি দিলো হামাস

আপডেট : ০১:৪৯:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে গাজায় জিম্মি থাকা চার ইসরায়েলি নারী সেনাকে মুক্তি দিলো হামাস। মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন- কারিনা আরিয়েভ, দানিয়েলা গিলবোয়া, নামা লেভি ও লিরি আলবাগ। এই চারজনই ইসরায়েলি সেনা, যারা ইসরায়েল-গাজা সীমান্তে নজরদারির কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

এর বিনিময়ে ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে দুই পক্ষই জিম্মি ও বন্দিদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে।

এর আগে যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ৩ জিম্মিকে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করেছিল হামাস। এরপরই ইসরায়েলের কারাগার থেকে অন্তত ৯০ ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েল। প্রায় ১৫ মাস ধরে অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে দখলদার বাহিনী।

ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ এবং ক্রমাগত হামলার হুমকির কারণে গাজার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে বেরিয়েছে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। উত্তর গাজা থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি যুদ্ধবিরতি বহাল থাকায় নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার আশায় আছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহর এবং শরণার্থী শিবিরে সামরিক অভিযানে ‌‘যুদ্ধের মতো’ কৌশল ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছে জাতিসংঘ। কারণ গত পাঁচদিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে সেখানে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১৪ জন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পশ্চিম তীরের শহরটিতে ড্রোন থেকে অভিযানের বিষয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছিল। গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম সপ্তাহেই পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের এই অভিযান শুরু হয়। অভিযানটিতে ভারী সামরিক সরঞ্জামসহ হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। ইসরায়েলের এক মুখপাত্র বলেন, শহরটির শরণার্থী শিবিরে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপস্থিতির তথ্যেরভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছে নারী এবং শিশুরা। অবরুদ্ধ এই উপত্যকাকে এক ধ্বসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরায়েল। সেখানে মসজিদ, হাসপাতাল, স্কুল, আবাসিক ভবন এমন কোনো স্থান বাকি নেই যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়নি।

গাজায় যুদ্ধবিরতি চলছে। কিন্তু এমন এক পর্যায়ে এসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে যখন ফিলিস্তিনিরা পুরোপুরি নিঃস্ব। তাদের হারানোর আর কিছু বাকি নেই। তাদের মাথার ওপরের ছাদ, পায়ের নিচের মাটি, খাবার সবকিছুই কেড়ে নিয়েছে দখলদার বাহিনী।

এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামাসের সঙ্গে বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসাবে গাজা থেকে বন্দীদের গ্রহণ করার জন্য তারা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। মানবসম্পদ বিভাগ প্রাথমিক অভ্যর্থনা পয়েন্টগুলো স্থাপন করেছে এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সেখানে চিকিত্সা সেবা এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা প্রদান করা হবে। এরপরে মুক্তি পাওয়া নারীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করা হবে।