London ০৬:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমদানিতে কম খেজুরের দাম, আশানুরূপ কমেনি খুচরায়

অনলাইন ডেস্ক

চলতি বছর খেজুর আমদানি হয়েছে গত বছরের প্রায় দ্বিগুণ। সরকার শুল্কছাড় দেওয়ায় স্বস্তি থাকার কথা দামেও। পাইকারিতে দাম গত বছরের চেয়ে কম হলেও খুব বেশি প্রভাব নেই খুচরা বাজারে। মানভেদে কেজিতে খুচরা ব্যবসায়ীরা লাভ করছেন একশ থেকে পাঁচশ টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম ফলমন্ডি রেলওয়ে মেনস মার্কেটের খেজুরের জমজমাট বাজার। বন্দর থেকে খালাস হয়ে সরাসরি ফলমন্ডিতে চলে আসে খেজুর। আমদানিকারক থেকে পাইকার হয়ে চলে যাচ্ছে খুচরা বিক্রেতাদের হাতে। রমজান সামনে রেখে বিভিন্ন জেলার আড়তদার ব্যবসায়ীরাও খেজুর সংগ্রহ করার জন্য ভিড় করছেন এখানে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজওয়া, মরিয়ম, আমবর, মসদুল, সাফাবি, সুপরী, মাসরুখ, মাবরুর, জাইদি, দাব্বাস, নাগাল, লুলু, সাইয়িদী, ফরিদী, রশিদী, কুদরি, মেডজুল, সুক্কারিসহ নানান জাতের ও নামের খেজুর রয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ইরাক, মিশর, জর্ডান, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, চায়নাসহ আরও কয়েকটি দেশ থেকে খেজুর আমদানি হয়। আবার অল্প পরিমাণে যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, হংকং, মালয়েশিয়া থেকেও খেজুর আনেন শৌখিন ব্যক্তিরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি করা বেশি দামের খেজুর এক কেজি, দুই কেজি প্যাকেটজাত করেও পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, সৌদি, ইরান, মিশরের খেজুর মানসম্মত, এসব খেজুরের দামও বেশি। বাজারে মধ্যমমানের খেজুর আসে আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া ও ইরাক থেকে

ফলমন্ডির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের চেয়ে এবার মানভেদে কেজিতে একশ টাকা থেকে ৪শ টাকা কমেছে খেজুরের দাম। তবে ফলমন্ডি থেকে খেজুর কিনতে আসা খুচরা ব্যবসায়ীদের বক্তব্য ভিন্ন। ফলমন্ডির পাইকারি ব্যবসায়ী চট্টলা ডেটস শপের স্বত্বাধিকারী নাজমুল হাসান শেয়ান বলেন, সরকার শুল্ক কমানোয় এবার খেজুর আমদানি বেশি হয়েছে। দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু বাজারে ক্রেতার সংকট রয়েছে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম ফলমন্ডিতে নাগাল ব্র্যান্ডের ৫ কেজি খেজুর বিক্রি হয়েছে ১৬৫০-১৭৫০ টাকা। একই খেজুর গত বছর দাম ছিল ২২০০-২২৫০ টাকা। বাজারে ৫ কেজির সুক্কারি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৭৫০-২০০০ টাকায়। গত বছর এসব খেজুরের দাম ছিল ২৩০০-২৪০০ টাকা। সৌদি আরবের ৫ কেজি মাসরুখ খেজুর বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৮০০-২৪০০ টাকায়। গত বছর একই খেজুর বিক্রি হয়েছিল ২৮০০-৩০০০ টাকায়। বাজারে আমিরাতের ১০ কেজি নাগাল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২৭০০-২৯০০ টাকায়। গত বছর ১০ কেজির এসব খেজুরের দাম ছিল ৩২০০-৩৫০০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে ১০ কেজির ইরাকের জাইদি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৬৫০-১৭০০ টাকা। একই খেজুর গত বছর বিক্রি হয়েছে ২৫০০ টাকার ওপরে।

আমিরাতের ১০ কেজি দাবাস খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪০০০ টাকায়। এসব খেজুর গত বছর আরও ৫শ টাকা বেশিতে বিক্রি হয়েছিল। পাশাপাশি বস্তায় আমদানি করা ইরাকি খেজুর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা। গত বছর একই খেজুরের দাম ৫০-৬০ টাকা বেশি ছিল।

মধ্যমানের খেজুরের মধ্যে আমিরাতের লুলু খেজুর ৫ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৬০০-৩৭০০ টাকা। আগের বছর একই খেজুরের দাম ছিল ৪২০০-৪৩০০ টাকা। সৌদি আরব থেকে আসা ৫ কেজি ছাফাবি খেজুর বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ২৭০০-৩০০০ টাকা। একই খেজুর গত বছর ৩৭০০ থেকে ৪০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

বাজারে উন্নতমানের খেজুরের মধ্যে সৌদি আরবের মাবরুম অন্যতম। ৫ কেজি প্যাকেটে এসব খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার-৫ হাজার টাকায়। একই দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে সৌদিয়ান আজওয়া খেজুরও। একবছর আগেও ২ হাজার-২ হাজার ৫০০ টাকা বেশি ছিল এসব খেজুরের দাম।

তবে পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে নাম ও মানভেদে প্রতিকেজিতে একশ থেকে পাঁচশ টাকা দাম বেশি। বাজার ঘুরে প্রায় সব ধরনের খেজুরের খুচরা দামেই এই পরিমাণ ব্যবধান দেখা যায়। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে খেজুরের দাম কমেছে বলা হলেও ফলমন্ডিতে এসে তা মিলছে না। ফলমন্ডিতে নগরীর অক্সিজেন এলাকা থেকে খেজুর সংগ্রহ করতে এসেছেন খুচরা ব্যবসায়ী মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের কথার সঙ্গে বাস্তবে মিল নেই। বাইরে শুনছি খেজুরের দাম কমেছে। ফলমন্ডিতে এসে দেখি দাম প্রায় গত বছরের মতোই।

চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং ফলমন্ডির ফ্রেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ডেটস গ্যালারির পরিচালক রাশেদ কামাল মুন্না জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবার খেজুরের দাম অনেক কমেছে। ক্ষেত্রবিশেষে প্রতি কেজি খেজুরের দাম ৪-৫শ টাকা পর্যন্ত কমেছে। সরকার শুল্কছাড় দেওয়ার কারণে আমদানিও অনেক বেশি হয়েছে।’

 

তিনি বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে খেজুর বিক্রিতে বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে সরকারি নজরদারি বাড়ানো হলে ভোক্তারা আরও কম দামে খেজুর খেতে পারবেন।’

কাস্টম সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের শুরুতে খেজুরের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। পাশাপাশি শুল্কায়ন মূল্যও ৮-২৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। ফলে এ বছর খেজুরের আমদানি ব্যয় ২০-২৫ শতাংশ কমেছে। এবার খেজুর আমদানিতে বেশ কয়েক স্তরের শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বর্তমানে সর্বনিম্ন স্তরে ৭০ সেন্ট থেকে শুরু করে ৪ ডলারেও খেজুর শুল্কায়ন হচ্ছে, যা গত বছর ছিল এক থেকে চার ডলার পর্যন্ত।

 

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২০২৫) ১ জুলাই থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খেজুর আমদানি হয়েছে ৫৩ হাজার ৭৬৮ টন। গত অর্থবছর (২০২৩-২০২৪) একই সময়ে খেজুর আমদানি হয়েছিল ২৫ হাজার ৮৫ টন।

 

 

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকার শুল্ক কমালেও ডলারের দাম টাকার চেয়ে বেশি হওয়ায় আমদানিতে দামের তেমন হেরফের হয়নি। তবে গত বছরের চেয়ে এবার আমদানি দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছর দাম বেশি থাকলেও প্রতি কেজি ৪ ডলারের শুল্কায়ন হওয়ায় আমদানি খরচ বেড়েছিল। যে কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখেও পড়েছিল।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১০:৪৭:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
Translate »

আমদানিতে কম খেজুরের দাম, আশানুরূপ কমেনি খুচরায়

আপডেট : ১০:৪৭:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চলতি বছর খেজুর আমদানি হয়েছে গত বছরের প্রায় দ্বিগুণ। সরকার শুল্কছাড় দেওয়ায় স্বস্তি থাকার কথা দামেও। পাইকারিতে দাম গত বছরের চেয়ে কম হলেও খুব বেশি প্রভাব নেই খুচরা বাজারে। মানভেদে কেজিতে খুচরা ব্যবসায়ীরা লাভ করছেন একশ থেকে পাঁচশ টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম ফলমন্ডি রেলওয়ে মেনস মার্কেটের খেজুরের জমজমাট বাজার। বন্দর থেকে খালাস হয়ে সরাসরি ফলমন্ডিতে চলে আসে খেজুর। আমদানিকারক থেকে পাইকার হয়ে চলে যাচ্ছে খুচরা বিক্রেতাদের হাতে। রমজান সামনে রেখে বিভিন্ন জেলার আড়তদার ব্যবসায়ীরাও খেজুর সংগ্রহ করার জন্য ভিড় করছেন এখানে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজওয়া, মরিয়ম, আমবর, মসদুল, সাফাবি, সুপরী, মাসরুখ, মাবরুর, জাইদি, দাব্বাস, নাগাল, লুলু, সাইয়িদী, ফরিদী, রশিদী, কুদরি, মেডজুল, সুক্কারিসহ নানান জাতের ও নামের খেজুর রয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ইরাক, মিশর, জর্ডান, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, চায়নাসহ আরও কয়েকটি দেশ থেকে খেজুর আমদানি হয়। আবার অল্প পরিমাণে যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, হংকং, মালয়েশিয়া থেকেও খেজুর আনেন শৌখিন ব্যক্তিরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি করা বেশি দামের খেজুর এক কেজি, দুই কেজি প্যাকেটজাত করেও পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, সৌদি, ইরান, মিশরের খেজুর মানসম্মত, এসব খেজুরের দামও বেশি। বাজারে মধ্যমমানের খেজুর আসে আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া ও ইরাক থেকে

ফলমন্ডির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের চেয়ে এবার মানভেদে কেজিতে একশ টাকা থেকে ৪শ টাকা কমেছে খেজুরের দাম। তবে ফলমন্ডি থেকে খেজুর কিনতে আসা খুচরা ব্যবসায়ীদের বক্তব্য ভিন্ন। ফলমন্ডির পাইকারি ব্যবসায়ী চট্টলা ডেটস শপের স্বত্বাধিকারী নাজমুল হাসান শেয়ান বলেন, সরকার শুল্ক কমানোয় এবার খেজুর আমদানি বেশি হয়েছে। দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু বাজারে ক্রেতার সংকট রয়েছে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম ফলমন্ডিতে নাগাল ব্র্যান্ডের ৫ কেজি খেজুর বিক্রি হয়েছে ১৬৫০-১৭৫০ টাকা। একই খেজুর গত বছর দাম ছিল ২২০০-২২৫০ টাকা। বাজারে ৫ কেজির সুক্কারি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৭৫০-২০০০ টাকায়। গত বছর এসব খেজুরের দাম ছিল ২৩০০-২৪০০ টাকা। সৌদি আরবের ৫ কেজি মাসরুখ খেজুর বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৮০০-২৪০০ টাকায়। গত বছর একই খেজুর বিক্রি হয়েছিল ২৮০০-৩০০০ টাকায়। বাজারে আমিরাতের ১০ কেজি নাগাল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২৭০০-২৯০০ টাকায়। গত বছর ১০ কেজির এসব খেজুরের দাম ছিল ৩২০০-৩৫০০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে ১০ কেজির ইরাকের জাইদি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৬৫০-১৭০০ টাকা। একই খেজুর গত বছর বিক্রি হয়েছে ২৫০০ টাকার ওপরে।

আমিরাতের ১০ কেজি দাবাস খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪০০০ টাকায়। এসব খেজুর গত বছর আরও ৫শ টাকা বেশিতে বিক্রি হয়েছিল। পাশাপাশি বস্তায় আমদানি করা ইরাকি খেজুর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা। গত বছর একই খেজুরের দাম ৫০-৬০ টাকা বেশি ছিল।

মধ্যমানের খেজুরের মধ্যে আমিরাতের লুলু খেজুর ৫ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৬০০-৩৭০০ টাকা। আগের বছর একই খেজুরের দাম ছিল ৪২০০-৪৩০০ টাকা। সৌদি আরব থেকে আসা ৫ কেজি ছাফাবি খেজুর বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ২৭০০-৩০০০ টাকা। একই খেজুর গত বছর ৩৭০০ থেকে ৪০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

বাজারে উন্নতমানের খেজুরের মধ্যে সৌদি আরবের মাবরুম অন্যতম। ৫ কেজি প্যাকেটে এসব খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার-৫ হাজার টাকায়। একই দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে সৌদিয়ান আজওয়া খেজুরও। একবছর আগেও ২ হাজার-২ হাজার ৫০০ টাকা বেশি ছিল এসব খেজুরের দাম।

তবে পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে নাম ও মানভেদে প্রতিকেজিতে একশ থেকে পাঁচশ টাকা দাম বেশি। বাজার ঘুরে প্রায় সব ধরনের খেজুরের খুচরা দামেই এই পরিমাণ ব্যবধান দেখা যায়। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে খেজুরের দাম কমেছে বলা হলেও ফলমন্ডিতে এসে তা মিলছে না। ফলমন্ডিতে নগরীর অক্সিজেন এলাকা থেকে খেজুর সংগ্রহ করতে এসেছেন খুচরা ব্যবসায়ী মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের কথার সঙ্গে বাস্তবে মিল নেই। বাইরে শুনছি খেজুরের দাম কমেছে। ফলমন্ডিতে এসে দেখি দাম প্রায় গত বছরের মতোই।

চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং ফলমন্ডির ফ্রেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ডেটস গ্যালারির পরিচালক রাশেদ কামাল মুন্না জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবার খেজুরের দাম অনেক কমেছে। ক্ষেত্রবিশেষে প্রতি কেজি খেজুরের দাম ৪-৫শ টাকা পর্যন্ত কমেছে। সরকার শুল্কছাড় দেওয়ার কারণে আমদানিও অনেক বেশি হয়েছে।’

 

তিনি বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে খেজুর বিক্রিতে বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে সরকারি নজরদারি বাড়ানো হলে ভোক্তারা আরও কম দামে খেজুর খেতে পারবেন।’

কাস্টম সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের শুরুতে খেজুরের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। পাশাপাশি শুল্কায়ন মূল্যও ৮-২৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। ফলে এ বছর খেজুরের আমদানি ব্যয় ২০-২৫ শতাংশ কমেছে। এবার খেজুর আমদানিতে বেশ কয়েক স্তরের শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বর্তমানে সর্বনিম্ন স্তরে ৭০ সেন্ট থেকে শুরু করে ৪ ডলারেও খেজুর শুল্কায়ন হচ্ছে, যা গত বছর ছিল এক থেকে চার ডলার পর্যন্ত।

 

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২০২৫) ১ জুলাই থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খেজুর আমদানি হয়েছে ৫৩ হাজার ৭৬৮ টন। গত অর্থবছর (২০২৩-২০২৪) একই সময়ে খেজুর আমদানি হয়েছিল ২৫ হাজার ৮৫ টন।

 

 

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকার শুল্ক কমালেও ডলারের দাম টাকার চেয়ে বেশি হওয়ায় আমদানিতে দামের তেমন হেরফের হয়নি। তবে গত বছরের চেয়ে এবার আমদানি দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছর দাম বেশি থাকলেও প্রতি কেজি ৪ ডলারের শুল্কায়ন হওয়ায় আমদানি খরচ বেড়েছিল। যে কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখেও পড়েছিল।’