আওয়ামীলীগ আমলের মামলায় যুবদল নেতা কারাগারে!

আওয়ামী শাসনামলে দায়ের করা মামলায় নাটোর জেলা যুবদলের এক নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
ওই যুবদল নেতার নাম শফিকুল ইসলাম মালেক। তিনি নাটোর শহরের কানাইখালী মহল্লার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ইদ্রিস আলীর ছেলে ও জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক।
তথ্যমতে,পারিবারিক ভাবে বিএনপির ত্যাগী কর্মী মালেক। ১৯৯৮ সালে বিএনপির আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন। পরে অনেক চিকিৎসা ও অপারেশন শেষে গুলি বের হয়।
২০১৩ সালে যুবদল কর্মী বন্ধু সাইফুজ্জামান সুজন শহরে এক মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই মামলায় নাটোরের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিমুল প্রধান আসামী। ওই মামলায় মালেককে
৪ নম্বর সাক্ষী করা হয়।
মালেক ও তার স্বজনদের দাবী, ২০১৫ সালে এমপি শিমুল মামলার আইওকে ব্যবহার করে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে সাক্ষী থেকে সরে যেতে চাপ দেয়। এক পর্যায়ে শিমুলের পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় বিভিন্ন দিক থেকে তার ছবি তোলা হয়। জানা যায়, ২০১৫ সালে শহরের মাদ্রাসামোড়ে জামাতের এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যার আগেই সমাবেশ শেষ হয়। কিন্তু সন্ধ্যার পর মাদ্রাসামোড় বাজারে একটি বোমার বিষ্ফোরনে
কলা বিক্রেতা মধু আহত হয়। ওই মামলায় জামাত-বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামী করা হয়। মামলার অভিযোগে মালেকের নাম না থাকলেও চার্জশীটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করে জমা দেন আইও। ২০১৭ সালে মালেক জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন।
জানা যায়,ইতোমধ্যে ওই দন্ডবিধির মামলায় সকলে খালাস পেলেও বিস্ফোরণ মামলা চলছিল। ওই মামলায় কখনও হাজিরা দেননি মালেক। বুধবার বিকালে ওই মামলায় নাটোর আদালতে হাজির হলে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
মালেক ও তার স্বজনদের দাবী,সম্প্রতি জেলা বিএনপি কমিটি নিয়ে সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও জেলা বিএনপির সদস্য আবুল কাশেমের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলমান। ৫ আগস্ট পর মালেক দুলুর সাথে একত্রে একাধিক সমাবেশে অংশ নেন। সম্প্রতি তিনি আবুল কাশেমের সাথে ঘোরাঘুরি করায় বিএনপির একটি অংশ শিমুলের সাথে তার ওঠা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে তাকে আওয়ামীলীগ ট্যাগ দেয়ার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি মালেক আরো দাবী করেন,বিগত ১৭ বছর তিনি আওয়ামী নির্যাতনের শিকার। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ২০ টি মামলার মধ্যে ১০ টি খারিজ হলেও এখনও ১০ টি চলমান। তিনি
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় লড়াইয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণসহ বিএনপির সকল আন্দোলনে জড়িত। অথচ এখন তাকে আওয়ামী ট্যাগ দেয়ার চেষ্টা চলছে।
মালেকের স্বজনদের দাবী,জেলা বিএনপির অভ্যন্তরীন রাজনীতির শিকার হয়েছেন মালেক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির এক নেতা জানান,কোন অভ্যন্তরীন বা গ্রুপিং পলিটিক্সে নয় বরং আদালতের আদেশেই মালেককে জেলে যেতে হয়েছে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচীব আসাদুজ্জামান আসাদ জানান,মালেকরা পারিবারিক ভাবেই বিএনপির জন্য নিবেদিত প্রাণ। তাকে আওয়ামী ট্যাগ দেয়ার চেষ্টা হলে তা দু:খজনক।তিনি দাবী করেন,ওই বিষ্ফোরক আইনের মামলায় ইতোমধ্যেই ৫ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। সাক্ষীরা সকলেই বলছেন,ওটি মিথ্যা মামলা।
বিচার শেষে মালেকসহ সকল আসামী খালাস পাবেন এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।