London ১২:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেনের শান্তিরক্ষায় দেশটিতে ব্রিটিশ সেনা মোতায়েনে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এ কথা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার।

এদিন প্যারিসে ইউরোপীয় নেতাদের জরুরি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে ডেইলি টেলিগ্রাফে লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেন, আমরা যদি ভবিষ্যতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আরও আগ্রাসন আটকাতে চাই, তাহলে ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

স্টার্মার আরও বলেন, আমরা ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে প্রস্তুত, প্রয়োজনে সেখানে আমাদের নিজস্ব সেনা মোতায়েন করতেও রাজি আছি। এটি আমি হালকাভাবে বলছি না। ব্রিটিশ সেনাদের ঝুঁকির মধ্যে পাঠানোর সিদ্ধান্তের গুরুদায়িত্ব আমি গভীরভাবে অনুভব করি।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মতে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মানেই ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

তবে সাবেক ব্রিটিশ সেনাপ্রধান লর্ড ড্যানাট জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনী এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, তারা ইউক্রেনে কোনো সম্ভাব্য শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনা করতে পারবে না। তিনি বলেন, ইউক্রেনে শান্তি বজায় রাখতে প্রায় এক লাখ সেনা দরকার হবে, যেখানে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে অন্তত ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করা লাগবে, যা বর্তমানে সম্ভব নয়।

ট্রাম্পের ভূমিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। স্টার্মার জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা গ্যারান্টি ছাড়া ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি সম্ভব নয়, কারণ কেবল যুক্তরাষ্ট্রই পুতিনকে প্রতিরোধ করতে পারে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সৌদি আরবে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। তবে ইউক্রেন সরকার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার আলোচনায় তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

ট্রাম্প সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন এবং জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ আলোচনা শুরু করা হবে।

ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও তিনি তার পরিকল্পনার ব্যাপারে অবহিত করেছেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলো যেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র কিনতে পারে, সে ব্যবস্থা করবেন।

স্টার্মার সতর্ক করে বলেছেন, আমরা এমন এক পরিস্থিতি চাই না যেখানে আফগানিস্তানের মতো যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি তালেবানের সঙ্গে আলোচনা করে কাবুল সরকারকে উপেক্ষা করেছিল। আমি নিশ্চিত যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও এটি এড়াতে চাইবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৫:৪১:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
২১
Translate »

ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য

আপডেট : ০৫:৪১:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইউক্রেনের শান্তিরক্ষায় দেশটিতে ব্রিটিশ সেনা মোতায়েনে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এ কথা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার।

এদিন প্যারিসে ইউরোপীয় নেতাদের জরুরি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে ডেইলি টেলিগ্রাফে লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেন, আমরা যদি ভবিষ্যতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আরও আগ্রাসন আটকাতে চাই, তাহলে ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

স্টার্মার আরও বলেন, আমরা ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে প্রস্তুত, প্রয়োজনে সেখানে আমাদের নিজস্ব সেনা মোতায়েন করতেও রাজি আছি। এটি আমি হালকাভাবে বলছি না। ব্রিটিশ সেনাদের ঝুঁকির মধ্যে পাঠানোর সিদ্ধান্তের গুরুদায়িত্ব আমি গভীরভাবে অনুভব করি।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মতে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মানেই ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

তবে সাবেক ব্রিটিশ সেনাপ্রধান লর্ড ড্যানাট জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনী এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, তারা ইউক্রেনে কোনো সম্ভাব্য শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনা করতে পারবে না। তিনি বলেন, ইউক্রেনে শান্তি বজায় রাখতে প্রায় এক লাখ সেনা দরকার হবে, যেখানে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে অন্তত ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করা লাগবে, যা বর্তমানে সম্ভব নয়।

ট্রাম্পের ভূমিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। স্টার্মার জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা গ্যারান্টি ছাড়া ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি সম্ভব নয়, কারণ কেবল যুক্তরাষ্ট্রই পুতিনকে প্রতিরোধ করতে পারে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সৌদি আরবে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। তবে ইউক্রেন সরকার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার আলোচনায় তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

ট্রাম্প সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন এবং জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ আলোচনা শুরু করা হবে।

ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও তিনি তার পরিকল্পনার ব্যাপারে অবহিত করেছেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলো যেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র কিনতে পারে, সে ব্যবস্থা করবেন।

স্টার্মার সতর্ক করে বলেছেন, আমরা এমন এক পরিস্থিতি চাই না যেখানে আফগানিস্তানের মতো যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি তালেবানের সঙ্গে আলোচনা করে কাবুল সরকারকে উপেক্ষা করেছিল। আমি নিশ্চিত যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও এটি এড়াতে চাইবেন।