কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে তিন লাখ টাকা চাঁদা না দিলে রেজাউল ইসলাম নামে এক গামছা বিক্রেতাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুধু রেজাউলকেই নয়, চাঁদার টাকা না দিলে তার দুই নাতিকেও হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
সরাসরি নয়, উড়ো চিঠি দিয়ে একবার নয়, তিন তিনবার এমন হুমকি দেয়া হয় রেজাউলকে। এ নিয়ে রেজাউল তার পরিবার পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। পুলিশ বলছে এ বিষয়ে রেজাউলের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
রেজাউল কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের বাটিকামারা এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে। তিনি কুমারখালী শহরের ফুটপাতে হকারি করে গামছা বিক্রি করেন।
কুমারখালী থানায় লিখিত অভিযোগে রেজাউল উল্লেখ করেন, আমি একজন ছোটখাটো ফুটপাতের গামছা ব্যবসায়ী। গামছা বিক্রি করেই পরিবার পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত কে বা কারা আমার বাড়ির জানালা ভেঙে দেয়। জানালা ভাঙার শব্দে ঘুম ভেঙে বাইরে এসে দেখি, অজ্ঞাত ব্যক্তির হাতে লেখা একটি চিঠি।
চিঠিতে আমার কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে টাকা না দিলে দুই নাতি ছেলেকে হত্যা করবে। বিষয়টি পুলিশ অথবা কাউকে জানালে আমাকেও গুলি হত্যার হুমকি দিয়েছে।
এ বিষয়ে রেজাউল জানান, এবার নিয়ে তিনবার উড়ো চিঠি দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়া হলো। দুমাস আগে আরও দুইবার হুমকি দিয়েছে। চিঠিতে পুলিশকে বা অন্য কাউকে জানাতে নিষেধও করা হয়। তার পরও আমি বাধ্য হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
রেজাউল বলেন, কারা আমাকে হুমকি দিয়েছে তা জানি না। স্ত্রী ছেলে নাতিসহ ৭ জনের সংসার পরিবারে। আমি পরিবার নিয়ে খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।
রেজাউলের মেয়ে রিমা খাতুন বলেন, আমাদের সঙ্গে কারো শত্রুতা নেই। আর্থিক অবস্থাও আমাদের ভালো না। কিন্তু কেন আমাদের কাছে তিনলাখ টাকা চাঁদা চাইবে বুঝতে পারছি না।
চিঠিতে যা লেখা আছে
'ভয় নাই আজ মারবো নানে। চলে গেলাম। তোর দুই নাতি ছেলের মাথার দাম ধরা হয়েছে তিন লাখ টাকা। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার মধ্যে তিন লাখ টাকা নিয়ে চলে আসবি। আর এটা আমার এলাকা। তাই পুলিশ বা অন্য কোনো ঝামেলা না করলে তোর ভালো হবে। আর যদি কিছু করিস তাহলে, রেজাউল তুই বাড়ির বাইরে আসলে আগে তোকে পাখির মতো গুলি করে মারবে মনে রাখিস। আজ গুলি করলে মারতে পারতাম। কিন্তু মারিনি একটা সুযোগ দিলাম। মনে রাখিস আগামিকাল রাত ১২টার মধ্যে টাকা নিয়ে চলে আসবি।'
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোলায়মান শেখ জানান, বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। রেজাউলের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।