London ০২:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রিনল্যান্ড কেনার ইচ্ছে জানালেন ট্রাম্প, পেলেন কড়া জবাব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়ার ইচ্ছে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি এ আকাঙক্ষা ব্যক্ত করার পর কড়া জবাব দিয়েছেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেডে।

সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি বার্তা পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেন, “সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ এই মুহূর্তে অত্যাবশ্যক।”

ট্রুথ সোশ্যালে এই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি ট্রাম্প জানান, ডেনমার্কে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কেন হাউরিকে মনোনীত করেছেন তিনি। ট্রাম্প যখন প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সে সময় ডেনমার্কের প্রতিবেশী দেশ সুইডেনে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন হাউরি।

এদিকে ট্রাম্প এই পোস্ট দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেডে বলেন, “গ্রিনল্যান্ড আমাদের। আমরা বিক্রির জন্য নই এবং কখনও এমনটা ঘটবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি এবং নিশ্চিতভাবেই তা আমরা বৃথা যেতে দেবো না।”

প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের আয়তন ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার ৫৮৩ জন। এই জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশই ইনুইট জাতিগোষ্ঠীভুক্ত। গ্রিনল্যান্ডের অবস্থান উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে হলেও এই দ্বীপটি ডেনমার্কের অধীন একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রদেশ। এ দ্বীপের বাসিন্দারাও ডেনমার্ক এবং ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিক।

আর্কটিক এবং আটলান্টিক সাগরকে পৃথককারী এই দ্বীপটির নাম গ্রিনল্যান্ড হলেও উত্তর মেরুর কাছাকাছি অবস্থান হওয়ার কারণে বছরের একটি বড় সময়ই তুষারাচ্ছাদিত থাকে এ ভূখণ্ড। দ্বীপটির ভূপৃষ্ঠের গভীরে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদরা।

গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা অবশ্য নতুন নয় ট্রাম্পের। এর আগে যখন প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সে সময় ২০১৯ সালে একবার তিনি বলেছিলেন যে ‘কৌশলগত কারণে’ যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এ দ্বীপটি কিনে নেওয়া।

এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর নিজের সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক বার্তায় পানামা খাল দখল করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালে পানামা খালের একটি ছবি পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেই ছবিতে খালের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পতাকার একটি ছবি রয়েছে।ছবির নিচে ট্রাম্প লেখেন, “যুক্তরাষ্ট্রের খালে সবাইকে স্বাগতম।”

তার এই ছবি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি রেকর্ডকৃত বক্তব্য রিলিজ করেন পানামার প্রেসিডেন্টের দপ্তর। সেই বক্তব্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো বলেন, “পানামা খাল এবং তার আশপাশের প্রতি ইঞ্চি জমির মালিক পানামা এবং এটিই বলবৎ থাকবে। এই ব্যাপারটি পানামার সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এ ইস্যুতে পানামা কখনও আপোস করবে না।”

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:২৩:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
১৭
Translate »

গ্রিনল্যান্ড কেনার ইচ্ছে জানালেন ট্রাম্প, পেলেন কড়া জবাব

আপডেট : ১২:২৩:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়ার ইচ্ছে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি এ আকাঙক্ষা ব্যক্ত করার পর কড়া জবাব দিয়েছেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেডে।

সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি বার্তা পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেন, “সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ এই মুহূর্তে অত্যাবশ্যক।”

ট্রুথ সোশ্যালে এই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি ট্রাম্প জানান, ডেনমার্কে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কেন হাউরিকে মনোনীত করেছেন তিনি। ট্রাম্প যখন প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সে সময় ডেনমার্কের প্রতিবেশী দেশ সুইডেনে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন হাউরি।

এদিকে ট্রাম্প এই পোস্ট দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেডে বলেন, “গ্রিনল্যান্ড আমাদের। আমরা বিক্রির জন্য নই এবং কখনও এমনটা ঘটবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি এবং নিশ্চিতভাবেই তা আমরা বৃথা যেতে দেবো না।”

প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের আয়তন ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার ৫৮৩ জন। এই জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশই ইনুইট জাতিগোষ্ঠীভুক্ত। গ্রিনল্যান্ডের অবস্থান উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে হলেও এই দ্বীপটি ডেনমার্কের অধীন একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রদেশ। এ দ্বীপের বাসিন্দারাও ডেনমার্ক এবং ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিক।

আর্কটিক এবং আটলান্টিক সাগরকে পৃথককারী এই দ্বীপটির নাম গ্রিনল্যান্ড হলেও উত্তর মেরুর কাছাকাছি অবস্থান হওয়ার কারণে বছরের একটি বড় সময়ই তুষারাচ্ছাদিত থাকে এ ভূখণ্ড। দ্বীপটির ভূপৃষ্ঠের গভীরে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদরা।

গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা অবশ্য নতুন নয় ট্রাম্পের। এর আগে যখন প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সে সময় ২০১৯ সালে একবার তিনি বলেছিলেন যে ‘কৌশলগত কারণে’ যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এ দ্বীপটি কিনে নেওয়া।

এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর নিজের সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক বার্তায় পানামা খাল দখল করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালে পানামা খালের একটি ছবি পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেই ছবিতে খালের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পতাকার একটি ছবি রয়েছে।ছবির নিচে ট্রাম্প লেখেন, “যুক্তরাষ্ট্রের খালে সবাইকে স্বাগতম।”

তার এই ছবি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি রেকর্ডকৃত বক্তব্য রিলিজ করেন পানামার প্রেসিডেন্টের দপ্তর। সেই বক্তব্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো বলেন, “পানামা খাল এবং তার আশপাশের প্রতি ইঞ্চি জমির মালিক পানামা এবং এটিই বলবৎ থাকবে। এই ব্যাপারটি পানামার সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এ ইস্যুতে পানামা কখনও আপোস করবে না।”