London ০৩:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ বিজয় দিবসে দেশবাসীকে টাইগারদের জয় উপহার

অনলাইন ডেস্ক

৫৪তম বিজয় দিবসের শুরুটা হলো বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় এক জয় দিয়ে। হাঁড় কনকনে শীতের সকালো সূর্য ওঠার আগেই শুরু হয়েছিলো বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ। কিংসটাউনে সকাল পৌনে ১০টার মধ্যেই এসে গেলো শ্বাসরুদ্ধকর এক বিজয়। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

পেন্ডুলামের মত দুলছিল ম্যাচটির ভাগ্য। একদিকে রোভম্যান পাওয়েল, অন্যদিকে বাংলাদেশের বোলারদের আপ্রাণ চেষ্টা। শেখ মেহেদী হাসানের ঘূর্ণিতে সহজ জয়ের স্বপ্ন দেখলেও রোভম্যান পাওয়েল যেন সেই স্বপ্নকে কেড়ে নিতে চাচ্ছিলেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় হলো বাংলাদেশের বোলারদেরই। শেষ ওভারে বাজিমাত করলেন হাসান মাহমুদ। ৩৫ বলে ৬০ রান করা রোভম্যান পাওয়েলকে ক্যাচে পরিণত করেন উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে। পাওয়েলের আউটেই প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়। সর্বশেষ অ্যালজারি জোসেফকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ৭ রানের অবিস্মরণীয় এক জয় উপহার দিলেন তিনি।

৭ম ব্যাটার হিসেবে আকিল হোসেইন আউট হওয়ার পর হঠাৎ করেই ম্যাচে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রোমারিও শেফার্ডকে সঙ্গে নিয়ে ৬৭ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন রোভম্যান পাওয়েল। এই জুটি ভাঙছিলই না। বাংলাদেশের হাত থেকেও যেন জয়টা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছিলো।

অবশেষে ১৮তম ওভারের প্রথম বলে রোমারিও শেফার্ডের উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। ১৭ বলে ২২ রান করে আউট হন রোমারিও। তবুও রোভম্যান পাওয়েল উইকেটে থাকা মানেই বাংলাদেশের পক্ষে জেতা সম্ভব নয়। শেষ ওভারে প্রয়োজন ১০ রান। উইকেটে ৩৩ বলে ৬০ রান করা ক্যারিবীয় অধিনায়ক রোভম্যান এবং অ্যালজারি জোসেফ ৯ বলে ৮ রান নিয়ে রয়েছেন।

হাসান মাহমুদ প্রখথম বলে অ্যালজারি জোসেফকে ১ রান দিলেন। স্ট্রাইকে আসেন পাওয়েল। ২য় বলে কোনো রান হলো না। তৃতীয় বলেই পাওয়েলকে সাজঘরে পাঠান হাসান মাহমুদ। ব্যাটের কানায় লাগিয়ে পাওয়েল যখন বলটি উইকেটের পেছনে লিটনের গ্লাভসে জমা দিলেন, তখন অ্যারোনেস ভ্যালে পুরো স্তব্ধ।

চতুর্থ বলে একটি লেগবাই হলো। শেষ ২ বলে দরকার ৮ রান। এমন সময় হাসান মাহমুদের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে গেলেন অ্যালজারি জোসেফ। অসাধারণ জয়টি তুলে নেয় বাংলাদেশ।

সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনের আর্নস ভ্যালে গ্রাউন্ডে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটাররা খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি। যে কারণে ক্যারিবীয়দের সামনে মাত্র ১৪৮ রানের লক্ষ্য বেধে দিতে পেরেছে টাইগাররা।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজও চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে। বিশেষ করে অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসানের ঘূর্ণি বোলিংয়ে রীতিমত কাঁপতে শুরু করে তারা। যার ফলশ্রুতিতে ৩৮ রানেই হারিয়েছে ৫ উইকেট। মেহেদী হাসান একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট।

জয়ের জন্য ১৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই তাসকিন আহমেদের শিকারে পরিণত হন ক্যারিবীয় ওপেনার ব্রেন্ডন কিং। তাসকিনের বলে ওঠা ক্যাচ তালুবন্দী করেন তানজিদ হাসান তামিম।

এরপরই শুরু হয় শেখ মেহেদী হাসানের ঘূর্ণি তাণ্ডব। নিকোলাস পুরান (১), রস্টোন চেজ (৭), আন্দ্রে ফ্লেচার (০) দ্রুত আউট হন শেখ মেহেদ হাসানের বলে। সর্বোচ্চ ২০ রান করা জনসন চার্লসের উইকেটও তুলে নেন মেহেদী হাসান।

শেখ মেহেদী হাসান ১৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ এবং তাসকিন আহমেদ। ১টি করে উইকেট নেন তানজিম সাকিব এবং রিশাদ হোসেন।

মেহেদী হাসানের সঙ্গে যোগ হয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব এবং রিশাদ হোসেন মিলে তুলে নেন আরও দুই উইকেট। গুদাকেশ মোতিকে ৬ রানে ফেরান তানজিম সাকিব এবং ৭ম ব্যাটার হিসেবে আকিল হোসেনের উইকেট তুলে নেন রিশাদ।

দিনের শুরুতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছিলো ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান। ৪৩ রান করেন সৌম্য সরকার। ২৭ রান করেন শামীম পাটোয়ারী ও জাকের আলী অনিক এবং ২৬ রান করেন শেখ মেহেদী হাসান।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৭:৫১:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
১৭
Translate »

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ বিজয় দিবসে দেশবাসীকে টাইগারদের জয় উপহার

আপডেট : ০৭:৫১:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

৫৪তম বিজয় দিবসের শুরুটা হলো বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় এক জয় দিয়ে। হাঁড় কনকনে শীতের সকালো সূর্য ওঠার আগেই শুরু হয়েছিলো বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ। কিংসটাউনে সকাল পৌনে ১০টার মধ্যেই এসে গেলো শ্বাসরুদ্ধকর এক বিজয়। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

পেন্ডুলামের মত দুলছিল ম্যাচটির ভাগ্য। একদিকে রোভম্যান পাওয়েল, অন্যদিকে বাংলাদেশের বোলারদের আপ্রাণ চেষ্টা। শেখ মেহেদী হাসানের ঘূর্ণিতে সহজ জয়ের স্বপ্ন দেখলেও রোভম্যান পাওয়েল যেন সেই স্বপ্নকে কেড়ে নিতে চাচ্ছিলেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় হলো বাংলাদেশের বোলারদেরই। শেষ ওভারে বাজিমাত করলেন হাসান মাহমুদ। ৩৫ বলে ৬০ রান করা রোভম্যান পাওয়েলকে ক্যাচে পরিণত করেন উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে। পাওয়েলের আউটেই প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়। সর্বশেষ অ্যালজারি জোসেফকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ৭ রানের অবিস্মরণীয় এক জয় উপহার দিলেন তিনি।

৭ম ব্যাটার হিসেবে আকিল হোসেইন আউট হওয়ার পর হঠাৎ করেই ম্যাচে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রোমারিও শেফার্ডকে সঙ্গে নিয়ে ৬৭ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন রোভম্যান পাওয়েল। এই জুটি ভাঙছিলই না। বাংলাদেশের হাত থেকেও যেন জয়টা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছিলো।

অবশেষে ১৮তম ওভারের প্রথম বলে রোমারিও শেফার্ডের উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। ১৭ বলে ২২ রান করে আউট হন রোমারিও। তবুও রোভম্যান পাওয়েল উইকেটে থাকা মানেই বাংলাদেশের পক্ষে জেতা সম্ভব নয়। শেষ ওভারে প্রয়োজন ১০ রান। উইকেটে ৩৩ বলে ৬০ রান করা ক্যারিবীয় অধিনায়ক রোভম্যান এবং অ্যালজারি জোসেফ ৯ বলে ৮ রান নিয়ে রয়েছেন।

হাসান মাহমুদ প্রখথম বলে অ্যালজারি জোসেফকে ১ রান দিলেন। স্ট্রাইকে আসেন পাওয়েল। ২য় বলে কোনো রান হলো না। তৃতীয় বলেই পাওয়েলকে সাজঘরে পাঠান হাসান মাহমুদ। ব্যাটের কানায় লাগিয়ে পাওয়েল যখন বলটি উইকেটের পেছনে লিটনের গ্লাভসে জমা দিলেন, তখন অ্যারোনেস ভ্যালে পুরো স্তব্ধ।

চতুর্থ বলে একটি লেগবাই হলো। শেষ ২ বলে দরকার ৮ রান। এমন সময় হাসান মাহমুদের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে গেলেন অ্যালজারি জোসেফ। অসাধারণ জয়টি তুলে নেয় বাংলাদেশ।

সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনের আর্নস ভ্যালে গ্রাউন্ডে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটাররা খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি। যে কারণে ক্যারিবীয়দের সামনে মাত্র ১৪৮ রানের লক্ষ্য বেধে দিতে পেরেছে টাইগাররা।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজও চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে। বিশেষ করে অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসানের ঘূর্ণি বোলিংয়ে রীতিমত কাঁপতে শুরু করে তারা। যার ফলশ্রুতিতে ৩৮ রানেই হারিয়েছে ৫ উইকেট। মেহেদী হাসান একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট।

জয়ের জন্য ১৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই তাসকিন আহমেদের শিকারে পরিণত হন ক্যারিবীয় ওপেনার ব্রেন্ডন কিং। তাসকিনের বলে ওঠা ক্যাচ তালুবন্দী করেন তানজিদ হাসান তামিম।

এরপরই শুরু হয় শেখ মেহেদী হাসানের ঘূর্ণি তাণ্ডব। নিকোলাস পুরান (১), রস্টোন চেজ (৭), আন্দ্রে ফ্লেচার (০) দ্রুত আউট হন শেখ মেহেদ হাসানের বলে। সর্বোচ্চ ২০ রান করা জনসন চার্লসের উইকেটও তুলে নেন মেহেদী হাসান।

শেখ মেহেদী হাসান ১৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ এবং তাসকিন আহমেদ। ১টি করে উইকেট নেন তানজিম সাকিব এবং রিশাদ হোসেন।

মেহেদী হাসানের সঙ্গে যোগ হয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব এবং রিশাদ হোসেন মিলে তুলে নেন আরও দুই উইকেট। গুদাকেশ মোতিকে ৬ রানে ফেরান তানজিম সাকিব এবং ৭ম ব্যাটার হিসেবে আকিল হোসেনের উইকেট তুলে নেন রিশাদ।

দিনের শুরুতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছিলো ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান। ৪৩ রান করেন সৌম্য সরকার। ২৭ রান করেন শামীম পাটোয়ারী ও জাকের আলী অনিক এবং ২৬ রান করেন শেখ মেহেদী হাসান।