London ১২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপদেষ্টা মাহফুজের ফেসবুক পোস্ট ও হাসিনার বক্তব্য নিয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক

অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের দেওয়া সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক পোস্ট, ভারতের আসাম–ত্রিপুরাসহ বৃহৎ বাংলার ম্যাপ, ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি প্রসঙ্গে নিজেদের অস্থান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য তুলে ধরেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় পৌনে তিনশ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেন ম্যাথিউ মিলার।

গতকালের প্রেস ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক বলেন, ‘সম্প্রতি ড. ইউনূসের একজন উপদেষ্টা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং আসামসহ ভারতের অংশকে সংযুক্ত করে একটি ম্যাপ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিতর্কিত পোস্ট দিয়েছিলেন। এ ধরনের পোস্ট দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কি এই বিষয়টিকে উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে সমর্থন করার জন্য এই ধরনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও পরামর্শ দেওয়ার কথা বিবেচনা করবে?’

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনো পোস্ট সম্পর্কে অবগত নই। আপনি আমাকে এখন যা পড়ে শোনালেন, এর বাইরে আমি আর কিছু জানি না। সাধারণ নিয়মানুযায়ী, আমি যে বিষয়টি দেখিনি বা অবগত নই, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করি না।’

এরপর ওই প্রশ্নকারী সাংবাদিক বলেন, ‘সম্প্রতি জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বিষয়ে কিছু কি বলবেন?’

ম্যাথিউ মিলার জানান, এ বিষয়েও তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।

এরপর প্রশ্নকারী বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে মিলার বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে এই বিষয়টির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে যুক্ত রয়েছি। আগের সরকারকে যেমন জানিয়েছিলাম, এই সরকারকেও জানিয়েছি যে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকা উচিত বলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে। আমরা মনে করি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সম্মান করা উচিত এবং এই ধরনের মামলাগুলো আইনের শাসন এবং সংবাদপত্রের প্রতি শ্রদ্ধার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে মোকাবিলা করা উচিত।’

পরে অন্য এক সাংবাদিক বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের মিয়ানমার অংশটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এই ঘটনাবলীর দিকে ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখছি এবং সংঘাত ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় আমরা উদ্বিগ্ন। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট সমাধানে সহায়তা করার বিষয়টি আমাদের জন্য অগ্রাধিকার। বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকার বার্মায় নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদানে উদারতা দেখিয়েছে এবং আমরা রোহিঙ্গা ও বার্মার অন্যান্য দুর্বল সম্প্রদায়ের সদস্যদের যারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে তাদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশের সাথে কাজ চালিয়ে যাব।’

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৮:১৭:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
২১
Translate »

উপদেষ্টা মাহফুজের ফেসবুক পোস্ট ও হাসিনার বক্তব্য নিয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট : ০৮:১৭:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের দেওয়া সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক পোস্ট, ভারতের আসাম–ত্রিপুরাসহ বৃহৎ বাংলার ম্যাপ, ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি প্রসঙ্গে নিজেদের অস্থান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য তুলে ধরেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় পৌনে তিনশ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেন ম্যাথিউ মিলার।

গতকালের প্রেস ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক বলেন, ‘সম্প্রতি ড. ইউনূসের একজন উপদেষ্টা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং আসামসহ ভারতের অংশকে সংযুক্ত করে একটি ম্যাপ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিতর্কিত পোস্ট দিয়েছিলেন। এ ধরনের পোস্ট দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কি এই বিষয়টিকে উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে সমর্থন করার জন্য এই ধরনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও পরামর্শ দেওয়ার কথা বিবেচনা করবে?’

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনো পোস্ট সম্পর্কে অবগত নই। আপনি আমাকে এখন যা পড়ে শোনালেন, এর বাইরে আমি আর কিছু জানি না। সাধারণ নিয়মানুযায়ী, আমি যে বিষয়টি দেখিনি বা অবগত নই, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করি না।’

এরপর ওই প্রশ্নকারী সাংবাদিক বলেন, ‘সম্প্রতি জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বিষয়ে কিছু কি বলবেন?’

ম্যাথিউ মিলার জানান, এ বিষয়েও তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।

এরপর প্রশ্নকারী বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে মিলার বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে এই বিষয়টির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে যুক্ত রয়েছি। আগের সরকারকে যেমন জানিয়েছিলাম, এই সরকারকেও জানিয়েছি যে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকা উচিত বলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে। আমরা মনে করি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সম্মান করা উচিত এবং এই ধরনের মামলাগুলো আইনের শাসন এবং সংবাদপত্রের প্রতি শ্রদ্ধার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে মোকাবিলা করা উচিত।’

পরে অন্য এক সাংবাদিক বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের মিয়ানমার অংশটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এই ঘটনাবলীর দিকে ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখছি এবং সংঘাত ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় আমরা উদ্বিগ্ন। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট সমাধানে সহায়তা করার বিষয়টি আমাদের জন্য অগ্রাধিকার। বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকার বার্মায় নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদানে উদারতা দেখিয়েছে এবং আমরা রোহিঙ্গা ও বার্মার অন্যান্য দুর্বল সম্প্রদায়ের সদস্যদের যারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে তাদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশের সাথে কাজ চালিয়ে যাব।’