London ১০:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
রাইসা মনি”র, কবর জিয়ারত করতে জামায়াত ইসলামির ড.ইলিয়াস মোল্লা কাঁকনহাটে কৃষকদের বিক্ষোভ ইউটিউব বদলে দিল ভাগ্য: ভিডিও বানিয়ে মাসে লাখ টাকা আয় করছেন বদলগাছীর তানভীর রায়হান মাইলস্টোন ট্র‍্যাজেডিতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দুর্গাপুরে দোয়া মাহফিল কালিগঞ্জে বিট পুলিশ রাজীবের ছত্রছায়ায় বিষ্ণুপুরে গড়ে উঠেছে ওবায়দুল্লার মাদক সাম্রাজ্য সিরাজগঞ্জে যমুনা নদী থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার রাজশাহীতে ভ্যানচালক’কে গাছে বেঁধে নির্যাতন লেফটেন্যান্ট তৌকির রাজশাহীতে চীরনিদ্রায় শায়িত বিএনপির মানবিক উদ্যোগ : চোখের আলোয় তারা দেখবেন জীবনের আলো সিরাজগঞ্জে লরির চাপায় ড্রাইভার নিহত

হিজবুল্লাহর কেনা ৫ হাজার পেজারে বিস্ফোরক ঢুকিয়ে দিয়েছিল মোসাদ, কিন্তু কীভাবে

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর কেনা পাঁচ হাজার পেজারের (যোগাযোগের যন্ত্র) ভেতরে বিস্ফোরক রেখে দিয়েছিল ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। গতকাল মঙ্গলবার লেবাননে পেজার বিস্ফোরণের ঘটনার মাস কয়েক আগেই এ কাজ করে তারা। লেবাননের একটি জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা সূত্র এবং অন্য একটি সূত্র রয়টার্সকে এসব কথা বলেছে।

গতকাল লেবাননজুড়ে কয়েক হাজার পেজারে বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত প্রায় ৩ হাজার জন। তবে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, পেজার বিস্ফোরণে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন।
লেবাননের নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, পেজারগুলো তাইওয়ানভিত্তিক গোল্ড অ্যাপোলো কোম্পানির। এই কোম্পানি থেকে পাঁচ হাজার পেজার কিনতে আদেশ (ক্রয়াদেশ) দিয়েছিল হিজবুল্লাহ।

কয়েকটি সূত্র বলেছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে পেজারের চালানটি লেবাননে পৌঁছায়।

তবে গোল্ড অ্যাপোলো কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হসু চিং-কুয়াং বলেছেন, বিস্ফোরণ ঘটানোর কাজে ব্যবহৃত পেজারগুলো তাঁর কোম্পানি উৎপাদন করেনি। এগুলো তৈরি করেছে ইউরোপীয় একটি প্রতিষ্ঠান। এটির তাইপেভিত্তিক গোল্ড অ্যাপোলোর ব্র্যান্ড ব্যবহারের অনুমতি ছিল।

তবে ইউরোপীয় কোম্পানিটির নাম তাৎক্ষণিকভাবে উল্লেখ করেননি কুয়াং। আজ বুধবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পণ্যটি (পেজার) আমাদের নয়। সেখানে (পণ্য) আমাদের ব্র্যান্ডের নামটি বসানো হয়েছে শুধু।’

ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ পেজার বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

তবে এই বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

কয়েকটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, পরিকল্পনাটি বেশ কয়েক মাস ধরে করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

লেবাননের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা সূত্র পেজারের এপি ৯২৪ মডেলের একটি ছবি শনাক্ত করেছে। এটি দেখতে অন্য পেজারের মতোই। তারহীন এই যন্ত্রে বার্তা আসে, তা দেখা যায়; কিন্তু এই যন্ত্রের মাধ্যমে ফোন করা যায় না।

ইসরায়েল যেন হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের অবস্থান শনাক্ত করতে না পারে, সে জন্য যোগাযোগের একটি মাধ্যম হিসেবে গোষ্ঠীটি পেজার ব্যবহার করে আসছে। হিজবুল্লাহর কার্যক্রম সম্পর্কে জানা আছে—এমন দুটি সূত্র রয়টার্সকে চলতি বছর এ তথ্য জানিয়েছিল।

লেবাননের একটি জ্যেষ্ঠ সূত্র বলেছে, উৎপাদন পর্যায়েই পেজারগুলোয় পরিবর্তন (মডিফাই) এনেছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ।

একই সূত্র বলেছে, মোসাদ যন্ত্রের (পেজার) ভেতরে একটি বোর্ড ঢুকিয়ে দিয়েছিল। এই বোর্ডে বিস্ফোরক উপাদান ছিল। এর একটি সাংকেতিক ভাষা গ্রহণের ক্ষমতা ছিল। যেকোনোভাবেই হোক, এটি শনাক্ত করা খুব কঠিন। এমনকি কোনো যন্ত্র বা স্ক্যানার দিয়েও শনাক্ত করা যায় না।

সূত্রটি বলেছে, যে তিন হাজার পেজার বিস্ফোরিত হয়েছে, সেগুলো বিস্ফোরণের আগে সাংকেতিক বার্তা পাঠানো হয়েছিল। আর এ কারণে বিস্ফোরকগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে।

আরেকটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, নতুন পেজারগুলোর মধ্যে তিন গ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক লুকানো ছিল। কয়েক মাসেও হিজবুল্লাহ তা শনাক্ত করতে পারেনি।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিক সাড়া পাওয়া যায়নি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৮:৫২:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
১১০
Translate »

হিজবুল্লাহর কেনা ৫ হাজার পেজারে বিস্ফোরক ঢুকিয়ে দিয়েছিল মোসাদ, কিন্তু কীভাবে

আপডেট : ০৮:৫২:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর কেনা পাঁচ হাজার পেজারের (যোগাযোগের যন্ত্র) ভেতরে বিস্ফোরক রেখে দিয়েছিল ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। গতকাল মঙ্গলবার লেবাননে পেজার বিস্ফোরণের ঘটনার মাস কয়েক আগেই এ কাজ করে তারা। লেবাননের একটি জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা সূত্র এবং অন্য একটি সূত্র রয়টার্সকে এসব কথা বলেছে।

গতকাল লেবাননজুড়ে কয়েক হাজার পেজারে বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত প্রায় ৩ হাজার জন। তবে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, পেজার বিস্ফোরণে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন।
লেবাননের নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, পেজারগুলো তাইওয়ানভিত্তিক গোল্ড অ্যাপোলো কোম্পানির। এই কোম্পানি থেকে পাঁচ হাজার পেজার কিনতে আদেশ (ক্রয়াদেশ) দিয়েছিল হিজবুল্লাহ।

কয়েকটি সূত্র বলেছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে পেজারের চালানটি লেবাননে পৌঁছায়।

তবে গোল্ড অ্যাপোলো কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হসু চিং-কুয়াং বলেছেন, বিস্ফোরণ ঘটানোর কাজে ব্যবহৃত পেজারগুলো তাঁর কোম্পানি উৎপাদন করেনি। এগুলো তৈরি করেছে ইউরোপীয় একটি প্রতিষ্ঠান। এটির তাইপেভিত্তিক গোল্ড অ্যাপোলোর ব্র্যান্ড ব্যবহারের অনুমতি ছিল।

তবে ইউরোপীয় কোম্পানিটির নাম তাৎক্ষণিকভাবে উল্লেখ করেননি কুয়াং। আজ বুধবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পণ্যটি (পেজার) আমাদের নয়। সেখানে (পণ্য) আমাদের ব্র্যান্ডের নামটি বসানো হয়েছে শুধু।’

ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ পেজার বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

তবে এই বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

কয়েকটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, পরিকল্পনাটি বেশ কয়েক মাস ধরে করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

লেবাননের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা সূত্র পেজারের এপি ৯২৪ মডেলের একটি ছবি শনাক্ত করেছে। এটি দেখতে অন্য পেজারের মতোই। তারহীন এই যন্ত্রে বার্তা আসে, তা দেখা যায়; কিন্তু এই যন্ত্রের মাধ্যমে ফোন করা যায় না।

ইসরায়েল যেন হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের অবস্থান শনাক্ত করতে না পারে, সে জন্য যোগাযোগের একটি মাধ্যম হিসেবে গোষ্ঠীটি পেজার ব্যবহার করে আসছে। হিজবুল্লাহর কার্যক্রম সম্পর্কে জানা আছে—এমন দুটি সূত্র রয়টার্সকে চলতি বছর এ তথ্য জানিয়েছিল।

লেবাননের একটি জ্যেষ্ঠ সূত্র বলেছে, উৎপাদন পর্যায়েই পেজারগুলোয় পরিবর্তন (মডিফাই) এনেছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ।

একই সূত্র বলেছে, মোসাদ যন্ত্রের (পেজার) ভেতরে একটি বোর্ড ঢুকিয়ে দিয়েছিল। এই বোর্ডে বিস্ফোরক উপাদান ছিল। এর একটি সাংকেতিক ভাষা গ্রহণের ক্ষমতা ছিল। যেকোনোভাবেই হোক, এটি শনাক্ত করা খুব কঠিন। এমনকি কোনো যন্ত্র বা স্ক্যানার দিয়েও শনাক্ত করা যায় না।

সূত্রটি বলেছে, যে তিন হাজার পেজার বিস্ফোরিত হয়েছে, সেগুলো বিস্ফোরণের আগে সাংকেতিক বার্তা পাঠানো হয়েছিল। আর এ কারণে বিস্ফোরকগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে।

আরেকটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, নতুন পেজারগুলোর মধ্যে তিন গ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক লুকানো ছিল। কয়েক মাসেও হিজবুল্লাহ তা শনাক্ত করতে পারেনি।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিক সাড়া পাওয়া যায়নি।