London ১০:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
অর্ধেক বইও পায়নি শিক্ষার্থীরা, পড়াশোনায় ঢিমেতাল ছাত্রসমাজের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পাশের বাসায় অবস্থান নেয় মোমিন ও সুবা কালিয়াকৈরে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা কালিয়াকৈর দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির উদ্যোগে ৫৩ তম শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া থানা উদ্বোধনের দাবীতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গার সীমান্ত থেকে বাংলাদেশী নাগরিককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ ফরিদপুরের খাজা আগে যুবলীগ এখন যুবদল পরিচয়ে ত্রাসের রাজত্ব জানুয়ারিতে সড়কে নিহত ৬০৮

অভাবের তাড়নায় শরীরে ছররা গুলি নিয়ে ফুটপাতে দোকান পেতেছেন মজিদ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বগুড়ার শেরপুরে পুলিশের গুলিতে আহত আবদুল মজিদ মহাসড়কের পাশে দোকান দিয়েছেন। শহরের ধুনট রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায়

শরীরে অন্তত ছররা গুলির ৩০০টি চিহ্ন। গুলিগুলো শরীরের ভেতরে চামড়ার নিচে ছড়িয়ে আছে। সংসারের অভাব ঘোচাতে শরীরে গুলি নিয়ে ফুটপাতে দোকান পেতে বসেছেন আবদুল মজিদ (২২)। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে তিনি গত ৪ আগস্ট বিকেলে বগুড়ার শেরপুর থানার সামনে পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হন। তাঁর শরীরের ৩৬টি ছররা গুলি অস্ত্রোপচার করে বের করা হলেও বাকিগুলো থেকে গেছে।

বগুড়ার শেরপুর শহরের ধুনট রোড বাস টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে খাদ্যগুদামের সীমানা দেয়ালের পাশে দোকান দিয়েছেন মজিদ। দোকানটি কাঠের তৈরি। দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বোতলজাত পানি, বিস্কুট, চকলেট, চিপস, চায়ের ফ্লাস্ক, পান ও সিগারেট।

শেরপুর পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কে দুই কক্ষের একটি টিনশেড ভাড়া বাড়িতে মজিদের পরিবারের বসবাস। তাঁর মা দীর্ঘদিন ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত। বড় ভাই রাকিব শেখ (২৬) দৈনিক মজুরিভিত্তিক লেদমিস্ত্রি। মজিদকে নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো অনলাইনে ‘৩০০টি ছররা গুলি শরীরে নিয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন মজিদ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর অনেকে তাঁর সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন।

আবদুল মজিদ বলেন, পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বগুড়ার মাঝিড়ার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ও ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা শরীরে থাকা ৩০০টি গুলির মধ্যে ৩৬টি অস্ত্রোপচার করে বের করেছেন। বাকি গুলি এখনো শরীরে থাকায় অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে।
শরীরে গুলি নিয়ে দোকান দেওয়ার বিষয়ে মজিদ বলেন, তাঁরা দিনমজুর পরিবার। সংসারে অভাব লেগেই থাকে। অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলে সংসার চলে না। তাই শরীরে গুলির যন্ত্রণা সহ্য করেই ফুটপাতে দোকান বসাতে হয়েছে। তিনি বলেন, বগুড়ার ধুনটের এক ভাই তাঁকে চিকিৎসার জন্য ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা দিয়ে একটি স্টল কিনে ফুটপাতে দোকান বসিয়েছেন। দোকানে দুই হাজার টাকা বিক্রি হলে ২০০ টাকা আয় হয়। তাতে সংসারে কিছুটা অভাব দূর হয়।

মজিদের বড় ভাই রাকিব শেখ বলেন, মজিদকে নিয়ে সংবাদ করার পর স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাসহ হিতৈষী অনেকে তাঁদের পরিবারকে অন্তত ৮০ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। সেই টাকা দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। সরকারিভাবে অর্থসহায়তা করার কথা শুনেছেন। তবে এখনো সেটি পাননি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:৩৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪
৪১
Translate »

অভাবের তাড়নায় শরীরে ছররা গুলি নিয়ে ফুটপাতে দোকান পেতেছেন মজিদ

আপডেট : ০৩:৩৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বগুড়ার শেরপুরে পুলিশের গুলিতে আহত আবদুল মজিদ মহাসড়কের পাশে দোকান দিয়েছেন। শহরের ধুনট রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায়

শরীরে অন্তত ছররা গুলির ৩০০টি চিহ্ন। গুলিগুলো শরীরের ভেতরে চামড়ার নিচে ছড়িয়ে আছে। সংসারের অভাব ঘোচাতে শরীরে গুলি নিয়ে ফুটপাতে দোকান পেতে বসেছেন আবদুল মজিদ (২২)। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে তিনি গত ৪ আগস্ট বিকেলে বগুড়ার শেরপুর থানার সামনে পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হন। তাঁর শরীরের ৩৬টি ছররা গুলি অস্ত্রোপচার করে বের করা হলেও বাকিগুলো থেকে গেছে।

বগুড়ার শেরপুর শহরের ধুনট রোড বাস টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে খাদ্যগুদামের সীমানা দেয়ালের পাশে দোকান দিয়েছেন মজিদ। দোকানটি কাঠের তৈরি। দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বোতলজাত পানি, বিস্কুট, চকলেট, চিপস, চায়ের ফ্লাস্ক, পান ও সিগারেট।

শেরপুর পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কে দুই কক্ষের একটি টিনশেড ভাড়া বাড়িতে মজিদের পরিবারের বসবাস। তাঁর মা দীর্ঘদিন ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত। বড় ভাই রাকিব শেখ (২৬) দৈনিক মজুরিভিত্তিক লেদমিস্ত্রি। মজিদকে নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো অনলাইনে ‘৩০০টি ছররা গুলি শরীরে নিয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন মজিদ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর অনেকে তাঁর সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন।

আবদুল মজিদ বলেন, পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বগুড়ার মাঝিড়ার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ও ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা শরীরে থাকা ৩০০টি গুলির মধ্যে ৩৬টি অস্ত্রোপচার করে বের করেছেন। বাকি গুলি এখনো শরীরে থাকায় অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে।
শরীরে গুলি নিয়ে দোকান দেওয়ার বিষয়ে মজিদ বলেন, তাঁরা দিনমজুর পরিবার। সংসারে অভাব লেগেই থাকে। অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলে সংসার চলে না। তাই শরীরে গুলির যন্ত্রণা সহ্য করেই ফুটপাতে দোকান বসাতে হয়েছে। তিনি বলেন, বগুড়ার ধুনটের এক ভাই তাঁকে চিকিৎসার জন্য ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা দিয়ে একটি স্টল কিনে ফুটপাতে দোকান বসিয়েছেন। দোকানে দুই হাজার টাকা বিক্রি হলে ২০০ টাকা আয় হয়। তাতে সংসারে কিছুটা অভাব দূর হয়।

মজিদের বড় ভাই রাকিব শেখ বলেন, মজিদকে নিয়ে সংবাদ করার পর স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাসহ হিতৈষী অনেকে তাঁদের পরিবারকে অন্তত ৮০ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। সেই টাকা দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। সরকারিভাবে অর্থসহায়তা করার কথা শুনেছেন। তবে এখনো সেটি পাননি।