London ০৭:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের জন্য জীবন দেওয়ার সৌভাগ্য সবার হয় না : জামায়াত আমির

দায়িত্ব পালনকালে নিহত সেনাবাহিনীর লেফট্যানেন্ট তানজিম সারোয়ার নির্জনের বাবা-মা’সহ পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা ও খোঁজ-খবর নিতে তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডা. শফিকুর রহমান তানজিম সারোয়ার নির্জনের বাড়ি টাঙ্গাইল শহরের করের বেতকায় যান। এ সময় তানজিমের বাবা ও মায়ের সঙ্গে তানজিম সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন এবং তাদের সমবেদনা জানান। পরে তানজিমের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া করা হয়।এ সময় জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই বাড়িতে এসে তানজিম সম্পর্কে তার মায়ের মুখ থেকে মন ভরে কথা শুনেছি। আমি বুঝতে পেরেছি আল্লাহ তায়ালার এক বিশাল নেয়ামত ছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী ও চঞ্চল ছিলেন। ক্লাসে কখনো দ্বিতীয় হননি। মেধার দিক থেকে আল্লাহ তায়ালা তাকে এই নেয়ামত দান করেছিলেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশের জন্য জীবন দেওয়ার সৌভাগ্য সবার হয় না। তিনি সেনাবাহিনীতে যেনে শুনেই গিয়েছিলেন। এটা জীবন-মৃত্যুর খেলা এবং এটা দেশ রক্ষার খেলা। এটা জেনেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তার বাবা-মাকে এরকম একটা সন্তান দিয়ে ধন্য করেছেন। আমরা এখানে ওনাদেরকে গর্বিত করতে আসিনি, আমরা এসেছি নিজেরা গর্বিত হতে।’

এরকম বাবার কপালে চুমু দেওয়া আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার উল্লেখ করে জামায়াতে আমির বলেন, ‘আমরা মনে করি এটা আমাদের জাতীয় নাগরিক দায়িত্ব, তাদের প্রতি সম্মান দেখানো। আমি সম্মান দেখানোর জায়গা থেকে এখানে এসেছি। আপনাদের সবার প্রতি, এলাকার মানুষের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা তাদের (বাবা-মা) বুকটা ভরে রাখবেন ইনশাআল্লাহ। আপনারা তাদের খোঁজ-খবর নেবেন, আমরাও যতটুকু পারি পাশে থাকব ইনশাআল্লাহ।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমেরিকায় গিয়ে বলেছেন, এই আন্দোলন ছিল একেবাবেই পরিকল্পিত। আমি ওনার বক্তব্যের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করব না। আমি আমার নিজস্ব মূল্যায়নটা শুধু বলব। সবার প্রতি আমার সম্মান আছে। আমার জানা মতে এই আন্দোলন ছিল ছাত্রদের রাইট ইস্যুর ব্যাপার, অধিকারের ব্যাপার। সেই অধিকারটা অন্য কিছু না।’

এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জেলা জামায়াতে নায়েবে আমির অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি হুমায়ুন কবির, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান, হুসনী মোবারক বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার দিবাগত রাতে দায়িত্বপালনকালে চকোরিয়া উপজেলার অন্তর্গত ডুলহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জন (২৩) নিহত হন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৮:১৫:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৪৬
Translate »

দেশের জন্য জীবন দেওয়ার সৌভাগ্য সবার হয় না : জামায়াত আমির

আপডেট : ০৮:১৫:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দায়িত্ব পালনকালে নিহত সেনাবাহিনীর লেফট্যানেন্ট তানজিম সারোয়ার নির্জনের বাবা-মা’সহ পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা ও খোঁজ-খবর নিতে তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডা. শফিকুর রহমান তানজিম সারোয়ার নির্জনের বাড়ি টাঙ্গাইল শহরের করের বেতকায় যান। এ সময় তানজিমের বাবা ও মায়ের সঙ্গে তানজিম সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন এবং তাদের সমবেদনা জানান। পরে তানজিমের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া করা হয়।এ সময় জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই বাড়িতে এসে তানজিম সম্পর্কে তার মায়ের মুখ থেকে মন ভরে কথা শুনেছি। আমি বুঝতে পেরেছি আল্লাহ তায়ালার এক বিশাল নেয়ামত ছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী ও চঞ্চল ছিলেন। ক্লাসে কখনো দ্বিতীয় হননি। মেধার দিক থেকে আল্লাহ তায়ালা তাকে এই নেয়ামত দান করেছিলেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশের জন্য জীবন দেওয়ার সৌভাগ্য সবার হয় না। তিনি সেনাবাহিনীতে যেনে শুনেই গিয়েছিলেন। এটা জীবন-মৃত্যুর খেলা এবং এটা দেশ রক্ষার খেলা। এটা জেনেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তার বাবা-মাকে এরকম একটা সন্তান দিয়ে ধন্য করেছেন। আমরা এখানে ওনাদেরকে গর্বিত করতে আসিনি, আমরা এসেছি নিজেরা গর্বিত হতে।’

এরকম বাবার কপালে চুমু দেওয়া আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার উল্লেখ করে জামায়াতে আমির বলেন, ‘আমরা মনে করি এটা আমাদের জাতীয় নাগরিক দায়িত্ব, তাদের প্রতি সম্মান দেখানো। আমি সম্মান দেখানোর জায়গা থেকে এখানে এসেছি। আপনাদের সবার প্রতি, এলাকার মানুষের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা তাদের (বাবা-মা) বুকটা ভরে রাখবেন ইনশাআল্লাহ। আপনারা তাদের খোঁজ-খবর নেবেন, আমরাও যতটুকু পারি পাশে থাকব ইনশাআল্লাহ।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমেরিকায় গিয়ে বলেছেন, এই আন্দোলন ছিল একেবাবেই পরিকল্পিত। আমি ওনার বক্তব্যের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করব না। আমি আমার নিজস্ব মূল্যায়নটা শুধু বলব। সবার প্রতি আমার সম্মান আছে। আমার জানা মতে এই আন্দোলন ছিল ছাত্রদের রাইট ইস্যুর ব্যাপার, অধিকারের ব্যাপার। সেই অধিকারটা অন্য কিছু না।’

এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জেলা জামায়াতে নায়েবে আমির অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি হুমায়ুন কবির, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান, হুসনী মোবারক বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার দিবাগত রাতে দায়িত্বপালনকালে চকোরিয়া উপজেলার অন্তর্গত ডুলহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জন (২৩) নিহত হন।