London ০১:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ওয়াশিংটন বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য একসঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা, রোহিঙ্গা সংকট, সন্ত্রাস দমন, শ্রমবিষয়ক সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় নিউইয়র্কের একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।সেক্রেটারি অফ স্টেট বলেছেন, অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘অসাধারণ’ শ্রদ্ধা রয়েছে। একটি সংকটময় সময়ে দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় তারা ড. ইউনূসের প্রশংসা করেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি দেশের অর্থনীতি এবং এর প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার জন্য বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং ইউএসএআইডি’র মতো বহুপাক্ষিক সংস্থার সহায়তা চেয়েছিলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান বলেন, সমগ্র জনসংখ্যা তার সরকারের পেছনে ‘একত্রিত’ এবং যত দ্রুত সম্ভব দেশকে পুনর্গঠনের জন্য উন্মুখ।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গৃহীত সংস্কার, দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ, বিদেশে লুকিয়ে রাখা বাংলাদেশের অর্থ ফেরত, শ্রম সমস্যা, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং আইন-শৃঙ্খলা আলোচনায় স্থান পেয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দুর্নীতি দমন ও আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আগের শাসনামলে দেশ দুর্নীতির সাগরে তলিয়ে গিয়েছিল। দেশ থেকে চুরি করা বিলিয়ন ডলার ফেরত পেতে আমরা মার্কিন সমর্থন প্রত্যাশা করছি। পূর্ববর্তী সরকারের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছিলেন।

এর প্রেক্ষিতে ব্লিঙ্কেন এ ব্যাপারে মার্কিন সরকারের সহায়তার প্রস্তাব দেন। বলেন, আমরা সাহায্য করতে পারলে খুশি। স্থানীয় দুর্নীতি মোকাবিলায় আমাদের অনেক দক্ষতা রয়েছে, যোগ করেন ব্লিঙ্কেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শ্রমের মান উন্নয়ন সরকারের শীর্ষ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি, কারণ এটি দেশে আরও বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করবে।

সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় উৎস যুক্তরাষ্ট্র এবং আগামী বছরগুলোতে তা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সময় নৃশংসতার তদন্তকারী জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, তার সরকার বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখেছে। মিডিয়াকে ‘যতটা সম্ভব তাদের’ সমালোচনা করতে বলা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার দেশে জাতিগত সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারণ পুরো বাংলাদেশ একটি বড় পরিবার। আমাদের মধ্যে মতভেদ আছে। কিন্তু আমরা শত্রু নই।

দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন, প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের শিবিরে বেড়ে ওঠা লক্ষাধিক তরুণ রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য মার্কিন সমর্থন চেয়েছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:৩৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫০
Translate »

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট : ০২:৩৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ওয়াশিংটন বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য একসঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা, রোহিঙ্গা সংকট, সন্ত্রাস দমন, শ্রমবিষয়ক সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় নিউইয়র্কের একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।সেক্রেটারি অফ স্টেট বলেছেন, অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘অসাধারণ’ শ্রদ্ধা রয়েছে। একটি সংকটময় সময়ে দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় তারা ড. ইউনূসের প্রশংসা করেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি দেশের অর্থনীতি এবং এর প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার জন্য বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং ইউএসএআইডি’র মতো বহুপাক্ষিক সংস্থার সহায়তা চেয়েছিলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান বলেন, সমগ্র জনসংখ্যা তার সরকারের পেছনে ‘একত্রিত’ এবং যত দ্রুত সম্ভব দেশকে পুনর্গঠনের জন্য উন্মুখ।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গৃহীত সংস্কার, দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ, বিদেশে লুকিয়ে রাখা বাংলাদেশের অর্থ ফেরত, শ্রম সমস্যা, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং আইন-শৃঙ্খলা আলোচনায় স্থান পেয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দুর্নীতি দমন ও আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আগের শাসনামলে দেশ দুর্নীতির সাগরে তলিয়ে গিয়েছিল। দেশ থেকে চুরি করা বিলিয়ন ডলার ফেরত পেতে আমরা মার্কিন সমর্থন প্রত্যাশা করছি। পূর্ববর্তী সরকারের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছিলেন।

এর প্রেক্ষিতে ব্লিঙ্কেন এ ব্যাপারে মার্কিন সরকারের সহায়তার প্রস্তাব দেন। বলেন, আমরা সাহায্য করতে পারলে খুশি। স্থানীয় দুর্নীতি মোকাবিলায় আমাদের অনেক দক্ষতা রয়েছে, যোগ করেন ব্লিঙ্কেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শ্রমের মান উন্নয়ন সরকারের শীর্ষ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি, কারণ এটি দেশে আরও বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করবে।

সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় উৎস যুক্তরাষ্ট্র এবং আগামী বছরগুলোতে তা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সময় নৃশংসতার তদন্তকারী জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, তার সরকার বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখেছে। মিডিয়াকে ‘যতটা সম্ভব তাদের’ সমালোচনা করতে বলা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার দেশে জাতিগত সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারণ পুরো বাংলাদেশ একটি বড় পরিবার। আমাদের মধ্যে মতভেদ আছে। কিন্তু আমরা শত্রু নই।

দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন, প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের শিবিরে বেড়ে ওঠা লক্ষাধিক তরুণ রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য মার্কিন সমর্থন চেয়েছেন।