ঘুষের ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে হামলার শিকার দুই সাংবাদিক

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে ঘুষ লেনদেন ও দালাল চক্রের ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। এ সময় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) কাজী মো. জাহিদুল ইসলাম এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। বুধবার রাত ৯টার দিকে রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন, দৈনিক নয়া দিগন্ত ডিজিটালের জেলা প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান এবং বিজয় টিভির রাঙ্গাবালী প্রতিনিধি একেএম রাকিব হোসাইন। এ ঘটনায় রাতেই মাহমুদ হাসান বাদী হয়ে রাঙ্গাবালী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়, সরকারি ফি-এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অর্থ ঘুষ হিসেবে আদায় করছিলেন তহশিলদার জাহিদুল ইসলাম। তার নিজস্ব দালালদের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর, নামজারি, এমপি ১৪৪ ১৪৫ মামলা এবং বিভিন্ন ফাইলের কাজ সম্পন্ন করা হয়। ভুক্তভোগীদের দাবি, রাতে এসব ঘুষের লেনদেন বেশি হয়।
সাংবাদিক মাহমুদ হাসান বলেন, অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে দেখি আল-আমীন নামে এক দালালের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছেন ওই কর্মকর্তা। ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্ষুব্ধ হয়ে আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। এর আগে তরমুজ চাষিদের থেকে চাঁদা নেয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করেছিলাম। তখনও আমাকে টাকা দিয়ে প্রভাবিত করতে চেয়েছিলেন।
বিজয় টিভির প্রতিনিধি একেএম রাকিব হোসাইন জানান, ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ধারণ করার সময় সাংবাদিক মাহমুদ হাসানের মোবাইল ছিনিয়ে নেয় তহশিলদার জাহিদুল ইসলাম। পরে দালালদের ডেকে এনে অফিসের গেট তালাবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। পুরো ঘটনাই ভিডিও চিত্রে ধারণ করা হয়েছে।
ভূমি কর্মকর্তার দালাল চক্রের অন্যতম সদস্য আল-আমীনের কাছে বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করা হলেও তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অন্তত সাত-আটজন দালালের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করেন এই কর্মকর্তা। ঘুষ না দিলে সেবা প্রত্যাশীদের দিনের পর দিন অফিসে ঘুরতে হয়।
এ বিষয়ে মো. জাহিদুল ইসলামের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ মেলেনি।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হাওলাদার বলেন, সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব দাশ পুরকায়স্থ বলেন, ওনারা আমার কাছে এখনো অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি আমি শুনেছি। ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছি।