London ০২:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
সহায়-সম্বলহীন শুক্কুরী বেগমকে ঘর উপহার দিলেন তারেক রহমান পটুয়াখালীতে মার্কিন নাগরিককে গণধর্ষণ মামলার ০৩ আসামি গ্রেফতার র‌্যাব-১২ এর অভিযানে বিপুল গাঁজা উদ্ধার, গ্রেফতার ১ কালিয়াকৈরে প্রথম বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন, দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় সংগ্রামী জীবনের প্রতিচ্ছবি: উল্লাপাড়ায় আলোচনায় ডিআইজি (অব.) খান সাঈদ হাসান রাজশাহীতে ৯ টা মামলার চার্জশিট দাখিল গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের বিশেষ আলোচনা: ‘আর্থিক স্বাধীনতা ছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্ভব নয়’ — কামাল আহমদ তরুণদের ক্ষমতায়নে ১৩.৭ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করেছে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল: সমাপ্ত হলো সামার ফেয়ার ৯ দিন ধরে নিখোঁজ সামিরা,এলাকার বাসির মানব বন্ধনে প্রশাসনের গাফলতির অভিযোগ পটুয়াখালীতে নদী থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার

সংগ্রামী জীবনের প্রতিচ্ছবি: উল্লাপাড়ায় আলোচনায় ডিআইজি (অব.) খান সাঈদ হাসান

ওয়াসিম সেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী উত্তাপ শুরু হয়েছে। এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন পুলিশ বাহিনীর সাবেক ডিআইজি (অব.) খান সাঈদ হাসান জ্যোতি। তাঁর সংগ্রামী জীবনী, সততা ও ত্যাগের ইতিহাস তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে অনন্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।

শৈশবেই হারান তাঁর বাবাকে—১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর হাতে। ব্যক্তিগত এই বেদনাকে শক্তিতে রূপান্তর করে তিনি একের পর এক সাফল্য অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি শেষে ১৯৮৫ সালের ৭ম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেন।

পুলিশ জীবনে পেয়েছেন বেস্ট অফিসার ট্রফি (সোর্ড অব অনার), পিপিএম পদক এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বিশেষ অবদানের জন্য জাতিসংঘের স্বীকৃতি।

ব্যক্তিজীবনে জ্যোতির দুই ছেলে ও এক মেয়ের সফল সন্তানদের গর্বিত পিতা তিনি। বড় পুত্র-দম্পতি চিকিৎসক, তারা অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত। কন্যা-দম্পতি ইঞ্জিনিয়ার, সিঙ্গাপুরে কর্মরত। অপরপুত্র ব্যারিস্টার, ঢাকা হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিয়মিত নামাজ-রোজা পালন করছেন।

২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করে ওএসডি করে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজানো সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর তাকেও আসামি করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, তাকে গুম বা ক্রসফায়ারে হত্যার পরিকল্পনাও হয়েছিল। ফলে দীর্ঘ ৮ বছর আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হন।

২০১৯ সালে আদালতে আত্মসমর্পণের পর ২০২২ সালে মুক্তি পান। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। বর্তমানে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উল্লাপাড়া আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী।

খান সাঈদ হাসান বলেন, “আমার জীবনটা কখনো স্বাভাবিক ছিল না। সংগ্রাম, ত্যাগ আর প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ এখানে দাঁড়িয়েছি। এখন জনগণের সেবা করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। উল্লাপাড়ার মানুষের অধিকার রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করতে চাই।

উল্লাপাড়া জনপদে তাঁর প্রতি সাধারণ মানুষের প্রবল উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বড়হর খামারপাড়া গ্রামের আব্দুল করিম বলেন, “তিনি আমাদের গ্রামের গর্ব। এমপি হলে এলাকায় উন্নয়ন হবে এবং সৎ নেতৃত্ব ফিরে আসবে।

বাজারের ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম বলেন, “তিনি নির্ভীক মানুষ। জনপ্রশাসনে থেকেও সততার সঙ্গে কাজ করেছেন। রাজনীতিতেও সেই সততার প্রতিফলন চাই।

স্থানীয় শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, “নারী শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নে তিনি যদি কাজ করেন, তবে উল্লাপাড়ার ভবিষ্যৎ বদলে যাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাঁর সততা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, সরকারি সেবার অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের ইতিহাস তাঁকে জনমনে সহানুভূতি ও জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। বিএনপির আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় তরুণ ও শিক্ষিত ভোটাররাও তাঁকে নিয়ে আগ্রহী।

গ্রাম-গঞ্জ থেকে শহর পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কাছে তিনি আজ এক সংগ্রামী প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:০৬:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Translate »

সংগ্রামী জীবনের প্রতিচ্ছবি: উল্লাপাড়ায় আলোচনায় ডিআইজি (অব.) খান সাঈদ হাসান

আপডেট : ০২:০৬:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী উত্তাপ শুরু হয়েছে। এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন পুলিশ বাহিনীর সাবেক ডিআইজি (অব.) খান সাঈদ হাসান জ্যোতি। তাঁর সংগ্রামী জীবনী, সততা ও ত্যাগের ইতিহাস তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে অনন্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।

শৈশবেই হারান তাঁর বাবাকে—১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর হাতে। ব্যক্তিগত এই বেদনাকে শক্তিতে রূপান্তর করে তিনি একের পর এক সাফল্য অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি শেষে ১৯৮৫ সালের ৭ম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেন।

পুলিশ জীবনে পেয়েছেন বেস্ট অফিসার ট্রফি (সোর্ড অব অনার), পিপিএম পদক এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বিশেষ অবদানের জন্য জাতিসংঘের স্বীকৃতি।

ব্যক্তিজীবনে জ্যোতির দুই ছেলে ও এক মেয়ের সফল সন্তানদের গর্বিত পিতা তিনি। বড় পুত্র-দম্পতি চিকিৎসক, তারা অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত। কন্যা-দম্পতি ইঞ্জিনিয়ার, সিঙ্গাপুরে কর্মরত। অপরপুত্র ব্যারিস্টার, ঢাকা হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিয়মিত নামাজ-রোজা পালন করছেন।

২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করে ওএসডি করে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজানো সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর তাকেও আসামি করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, তাকে গুম বা ক্রসফায়ারে হত্যার পরিকল্পনাও হয়েছিল। ফলে দীর্ঘ ৮ বছর আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হন।

২০১৯ সালে আদালতে আত্মসমর্পণের পর ২০২২ সালে মুক্তি পান। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। বর্তমানে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উল্লাপাড়া আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী।

খান সাঈদ হাসান বলেন, “আমার জীবনটা কখনো স্বাভাবিক ছিল না। সংগ্রাম, ত্যাগ আর প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ এখানে দাঁড়িয়েছি। এখন জনগণের সেবা করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। উল্লাপাড়ার মানুষের অধিকার রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করতে চাই।

উল্লাপাড়া জনপদে তাঁর প্রতি সাধারণ মানুষের প্রবল উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বড়হর খামারপাড়া গ্রামের আব্দুল করিম বলেন, “তিনি আমাদের গ্রামের গর্ব। এমপি হলে এলাকায় উন্নয়ন হবে এবং সৎ নেতৃত্ব ফিরে আসবে।

বাজারের ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম বলেন, “তিনি নির্ভীক মানুষ। জনপ্রশাসনে থেকেও সততার সঙ্গে কাজ করেছেন। রাজনীতিতেও সেই সততার প্রতিফলন চাই।

স্থানীয় শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, “নারী শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নে তিনি যদি কাজ করেন, তবে উল্লাপাড়ার ভবিষ্যৎ বদলে যাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাঁর সততা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, সরকারি সেবার অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের ইতিহাস তাঁকে জনমনে সহানুভূতি ও জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। বিএনপির আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় তরুণ ও শিক্ষিত ভোটাররাও তাঁকে নিয়ে আগ্রহী।

গ্রাম-গঞ্জ থেকে শহর পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কাছে তিনি আজ এক সংগ্রামী প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।