আলফাডাঙ্গায় বিএনপি নেতার নেতৃত্বে প্রকাশ্যে তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন, এলাকায় চরম উত্তেজনা

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চরবেলবানা গ্রামে তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে প্রকাশ্যে তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা খোকন মোল্যার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ওবায়দুর শেখ ও আকিবুল ইসলাম ধান কেটে তা বাড়িতে আনছিলেন। পথে তারা চুন্নু মোল্যার পাটক্ষেতের আইল ব্যবহার করলে কিছু পাটগাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চুন্নু মোল্যা তার চাচাতো ভাই, বিএনপি নেতা খোকন মোল্যাকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। সেখানে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন চুন্নু মোল্যা। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
তবে পরিস্থিতি এখানেই থেমে থাকেনি। ঘটনার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই, দুপুর ১টার দিকে, বিএনপি নেতা খোকন মোল্যার নেতৃত্বে পাঁচ-ছয়জনের একটি দল চরবেলবানা গ্রামের ইউপি সদস্য সোনা মিয়ার বাড়ির উত্তর পাশে পৌঁছে প্রতিপক্ষ ওবায়দুর শেখ, তার ভাই আকিবুল শেখ এবং চাচাতো ভাই শফিকুল ইসলামের ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেলে প্রকাশ্যে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তেই তিনটি মোটরসাইকেল দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে।
ক্ষতিগ্রস্ত আকিবুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “এক বছর আগে কিস্তি তুলে ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা দিয়ে একটা ডিসকভার বাইক কিনেছিলাম। রবিবারই ৭৫ হাজার টাকার কিস্তি পরিশোধ করেছি। সেই কষ্টের বাইকটা চোখের সামনে জ্বালিয়ে দিলো ওরা। শুধু আমারটাই না, আমার ভাই ও চাচাতো ভাইয়ের বাইকও পুড়িয়েছে।”
অভিযুক্ত খোকন মোল্যা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কারও বাইকে আগুন দেইনি। এসব রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।”
তবে এলাকাবাসীর অনেকেই জানিয়েছেন, আগুন দেওয়ার সময় খোকন মোল্যা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং দলবলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। এ ঘটনায় পুরো গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
আলফাডাঙ্গা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম বলেন, “পুড়ে যাওয়া তিনটি মোটরসাইকেল আলামত হিসেবে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তদন্ত চলছে, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয় হবে।