London ০৫:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই আন্দোলনে শহীদ জসীম উদ্দিনের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক:

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ জসীম উদ্দিনের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর আদাবর থানার শেখেরটেক ৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় তিনি আত্মহত্যা করেন।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর পাংগাশিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে ওই তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে তিনি নিজেই বাদী হয়ে দুমকি থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকেই তিনি মারাত্মক মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। লজ্জা, চাপ ও বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। সর্বশেষ এসব চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন।

নিহত তরুণীর মামা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ করে আমার গ্রামের বাড়ি থেকে ফোন করে বলে আমার ভাগনি মারা গেছে। আমি দৌড়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগনির মরদেহ হাসপাতালে পড়ে আছে।

তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমার বোন স্বামীহারা হন। এখন মেয়েকে হারালো।

‎প্রতিবেশী জামিলা খাতুন জানান, সন্ধ্যার পর মা-মেয়ে মিলে কাপড় কিনে বাসায় আসে। রাতে ছোট মেয়েকে নিয়ে মাদরাসায় যাওয়ার পর বড় মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে লঞ্চে করে তাদের পটুয়াখালী গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল।

‎এ বিষয়ে জানতে চাইলে আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া জাগো নিউজকে জানান, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

নিহত তরুণীর বাবা জসীম উদ্দিন ছাত্র আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাকে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:২৩:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
১৩
Translate »

জুলাই আন্দোলনে শহীদ জসীম উদ্দিনের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

আপডেট : ০২:২৩:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ জসীম উদ্দিনের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর আদাবর থানার শেখেরটেক ৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় তিনি আত্মহত্যা করেন।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর পাংগাশিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে ওই তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে তিনি নিজেই বাদী হয়ে দুমকি থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকেই তিনি মারাত্মক মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। লজ্জা, চাপ ও বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। সর্বশেষ এসব চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন।

নিহত তরুণীর মামা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ করে আমার গ্রামের বাড়ি থেকে ফোন করে বলে আমার ভাগনি মারা গেছে। আমি দৌড়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগনির মরদেহ হাসপাতালে পড়ে আছে।

তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমার বোন স্বামীহারা হন। এখন মেয়েকে হারালো।

‎প্রতিবেশী জামিলা খাতুন জানান, সন্ধ্যার পর মা-মেয়ে মিলে কাপড় কিনে বাসায় আসে। রাতে ছোট মেয়েকে নিয়ে মাদরাসায় যাওয়ার পর বড় মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে লঞ্চে করে তাদের পটুয়াখালী গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল।

‎এ বিষয়ে জানতে চাইলে আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া জাগো নিউজকে জানান, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

নিহত তরুণীর বাবা জসীম উদ্দিন ছাত্র আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাকে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।