London ০১:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
হামজার ছোঁয়ায় ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের দারুণ জয় এই রাতে আলো ছিল, জয় ছিল, আর ছিল একজন হামজা চৌধুরী ইতালিতে সাংগঠনিক কাজে‌ বিশেষ অবদান রাখায় ইকবাল বেপারী‌কে সংবর্ধনা দিলো‌ প্রগতি ব্যবসায়ী সমিতি পটুয়াখালীতে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষনে বিনামূল্যে ৪৭ মেট্রিক টন লবন বিতরণ পটুয়াখালীতে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন পশুর হাট রাজশাহীতে প্রতারণা করে ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ ব্যারিস্টার কায়সার কামালের ঈদ উপহার পেলো দুর্গাপুরের চার শহীদের পরিবার সিরাজগঞ্জে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী‌কে খুনের অ‌ভি‌যোগ-আটক ১ জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ইতালির পিসাকানে স্কুলে টেস্ট দ্যা ওয়ার্ল্ড নামে অনুষ্ঠিত বহুজাতিক সংস্কৃতির মিলনমেলা

গাজা সংহতি হরতাল ও কসবার প্রতিবাদী গণজাগরণ: ন্যায়ের আহ্বান

মো: বিল্লাল সরকার, জেলা প্রতিনিধি  ব্রাম্মনবাড়ীয়া

 

আজ, ৭ এপ্রিল, বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ গাজার চলমান মানবিক সংকটের প্রতিবাদে এক সমন্বিত সাধারণ হরতালে অংশ নেবে। লন্ডনের রাস্তাগুলো থেকে জাকার্তার জনপথ পর্যন্ত, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সরকারি কর্মচারী ও শ্রমিকরা তাদের শ্রমবঞ্চিত রাখবে—এক শক্তিশালী বৈশ্বিক সংহতির প্রদর্শনী। সকল স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে; তাদের শূন্য প্রাঙ্গণ হবে আমাদের অটল সংকল্পের সাক্ষ্য: যখন নিরীহ নাগরিকরা অমীমাংসিত দুর্দশার মুখোমুখি, তখন কোনও শ্রেণিকক্ষ, কোনও কার্যালয়, কোনও কারখানা স্বাভাবিক থাকতে পারে না।

কসবা উপজেলায়, এই ঐক্যের চেতনা পরিণত হলো বিশাল এক প্রতিবাদ সমাবেশে, যা “ইসলামী তৌহিদী জনতা”র পতাকাতলে সব দল এবং শ্রেণী-স্তর অতিক্রম করে সংগঠিত হয়। ভোরবেলা, হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমায় তোফাজ্জল আলী ডিগ্রী কলেজের প্রশস্ত মাঠে। ব্যানার উঁচু করে এবং এককণ্ঠে উচ্চারিত স্লোগান—“তাত্ক্ষণিক যুদ্ধবিরতি!” এবং “মানবতার আগে রাজনীতি!”—সংকীর্ণ গলি পেরিয়ে পুরাতন বাজার পর্যন্ত মিছিল চলে, অবশেষে কসবা মুক্তিযুদ্ধ চত্বরে সমাপ্ত হয়।

দীর্ঘক্ষণ নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণের বিরুদ্ধে বক্তারা তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, গাজার সাধারণ মানুষ—মাতারা তাদের সন্তানকে আলিঙ্গন করে, পরিবারগুলো গৃহবিচ্ছিন্ন—এর ওপর চলমান আক্রমণ শুধুমাত্র ভূ-রাজনৈতিক নয়, বরং নৈতিক সংকট। তারা দাবি করেন অবিলম্বে ও যাচাইযোগ্য যুদ্ধবিরতি, নির্বিঘ্ন মানবিক সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক আইনের পূর্ণ সম্মান।

আজকের হরতালের অংশ হিসেবে কসবার প্রতিটি শিক্ষা ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিস্তব্ধ ছিল। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সংহতির অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন; দোকানপাট স্বেচ্ছায় বন্ধ হয়; পেশাজীবীরা আকস্মিক মোমবাতি প্রজ্জ্বলন মিছিল আয়োজন করেন—নিরাশার অন্ধকারে আশা ও প্রতিরোধের আলোকস্তম্ভ হিসেবে।

তবে আমাদের অঙ্গীকার সূর্যাস্তের পরেই শেষ হবে না। আয়োজকরা ঘোষণা করেছেন এক সপ্তাহব্যাপী পাঠচক্র, বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে চিঠি লেখার কর্মসূচি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির অভিযান, যাতে গাজার যন্ত্রণা বিশ্বমঞ্চে অম্লান থাকে। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন—পরের শুক্রবার আরও বৃহত্তর, আরও দৃঢ়সংকল্পের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুনর্মিলিত হবেন।

এই বৈশ্বিক মানবিক চেতনার মুহূর্তে, কসবার মানুষেরা প্রমাণ করেছেন—অন্যায় যেখানে-ই ঘটে, ন্যায় সেখানে-ই হুমকির মুখে। আমরা পৃথক রাষ্ট্র বা দলের স্লোগান নয়, বরং এক মানব পরিবার হিসেবে আমাদের কণ্ঠ উঁচু করছি।

গাজা, তুমি একা নও—আমাদের হৃদয়, আমাদের কণ্ঠস্বর এবং আমাদের কর্মই তোমার পাশে থাকবে শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:৪০:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
২৮
Translate »

গাজা সংহতি হরতাল ও কসবার প্রতিবাদী গণজাগরণ: ন্যায়ের আহ্বান

আপডেট : ১১:৪০:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

 

আজ, ৭ এপ্রিল, বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ গাজার চলমান মানবিক সংকটের প্রতিবাদে এক সমন্বিত সাধারণ হরতালে অংশ নেবে। লন্ডনের রাস্তাগুলো থেকে জাকার্তার জনপথ পর্যন্ত, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সরকারি কর্মচারী ও শ্রমিকরা তাদের শ্রমবঞ্চিত রাখবে—এক শক্তিশালী বৈশ্বিক সংহতির প্রদর্শনী। সকল স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে; তাদের শূন্য প্রাঙ্গণ হবে আমাদের অটল সংকল্পের সাক্ষ্য: যখন নিরীহ নাগরিকরা অমীমাংসিত দুর্দশার মুখোমুখি, তখন কোনও শ্রেণিকক্ষ, কোনও কার্যালয়, কোনও কারখানা স্বাভাবিক থাকতে পারে না।

কসবা উপজেলায়, এই ঐক্যের চেতনা পরিণত হলো বিশাল এক প্রতিবাদ সমাবেশে, যা “ইসলামী তৌহিদী জনতা”র পতাকাতলে সব দল এবং শ্রেণী-স্তর অতিক্রম করে সংগঠিত হয়। ভোরবেলা, হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমায় তোফাজ্জল আলী ডিগ্রী কলেজের প্রশস্ত মাঠে। ব্যানার উঁচু করে এবং এককণ্ঠে উচ্চারিত স্লোগান—“তাত্ক্ষণিক যুদ্ধবিরতি!” এবং “মানবতার আগে রাজনীতি!”—সংকীর্ণ গলি পেরিয়ে পুরাতন বাজার পর্যন্ত মিছিল চলে, অবশেষে কসবা মুক্তিযুদ্ধ চত্বরে সমাপ্ত হয়।

দীর্ঘক্ষণ নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণের বিরুদ্ধে বক্তারা তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, গাজার সাধারণ মানুষ—মাতারা তাদের সন্তানকে আলিঙ্গন করে, পরিবারগুলো গৃহবিচ্ছিন্ন—এর ওপর চলমান আক্রমণ শুধুমাত্র ভূ-রাজনৈতিক নয়, বরং নৈতিক সংকট। তারা দাবি করেন অবিলম্বে ও যাচাইযোগ্য যুদ্ধবিরতি, নির্বিঘ্ন মানবিক সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক আইনের পূর্ণ সম্মান।

আজকের হরতালের অংশ হিসেবে কসবার প্রতিটি শিক্ষা ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিস্তব্ধ ছিল। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সংহতির অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন; দোকানপাট স্বেচ্ছায় বন্ধ হয়; পেশাজীবীরা আকস্মিক মোমবাতি প্রজ্জ্বলন মিছিল আয়োজন করেন—নিরাশার অন্ধকারে আশা ও প্রতিরোধের আলোকস্তম্ভ হিসেবে।

তবে আমাদের অঙ্গীকার সূর্যাস্তের পরেই শেষ হবে না। আয়োজকরা ঘোষণা করেছেন এক সপ্তাহব্যাপী পাঠচক্র, বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে চিঠি লেখার কর্মসূচি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির অভিযান, যাতে গাজার যন্ত্রণা বিশ্বমঞ্চে অম্লান থাকে। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন—পরের শুক্রবার আরও বৃহত্তর, আরও দৃঢ়সংকল্পের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুনর্মিলিত হবেন।

এই বৈশ্বিক মানবিক চেতনার মুহূর্তে, কসবার মানুষেরা প্রমাণ করেছেন—অন্যায় যেখানে-ই ঘটে, ন্যায় সেখানে-ই হুমকির মুখে। আমরা পৃথক রাষ্ট্র বা দলের স্লোগান নয়, বরং এক মানব পরিবার হিসেবে আমাদের কণ্ঠ উঁচু করছি।

গাজা, তুমি একা নও—আমাদের হৃদয়, আমাদের কণ্ঠস্বর এবং আমাদের কর্মই তোমার পাশে থাকবে শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত।