London ০৯:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে ফিল্মি স্টাইলে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা-ভাংচুর, লুটপাট, আটক ১

অনলাইন ডেস্ক

নোয়াখালী সদরে দিনে দুপুরে এক প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা বসতঘরে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেই থামেনি। যাওয়ার সময় ঘরের সব আসবাবপত্র পুকুরে এবং সড়কের ওপর ফেলে দেয়।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলায় কাদির হানিফ ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে একজনকে আটক করে। এ সময় বাকিরা পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, কৃষ্ণরামপুর গ্রামের মৃত হামিদ উল্যার ছেলে সৌদি প্রবাসী নুরুল আফসার সুমন (৪৫) এবং একই এলাকার শাহ্ আলমের দুই ছেলে আলমগীর (৩৫) ও জাহাঙ্গীরের (৩৭) সাথে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে একাধিবার সালিশ বৈঠকও হয়। এরমধ্যে গত কয়েকদিন আগে আলমগীর একটি মামলায় জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে এসে সুমনকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন। শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে আলমগীর ও জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ৬/৭টি মাইক্রোবাসযোগে অর্ধশতাধিক ভাড়াটে সন্ত্রাসী অতর্কিতে এসে সুমনের বাড়িতে হানা দেয়। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা বসতঘরের গেইট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে সুমনের স্ত্রী, শ্বাশুড়িসহ পরিবারের অন্যান্য নারী সদস্যদের পিটিয়ে আহত করে। এ সময় প্রাণভয়ে তারা ঘর থেকে বেরিয়ে যান। পরে সন্ত্রাসীরা ঘরের প্রতিটি কক্ষে প্রবেশ করে সবকিছু ভেঙ্গে তছনছ করে দেয় এবং নগদ টাকা, স্বার্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল লুটে করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা ঘরের খাট, লেপ তোষক, সোফা, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, হাড়িপাতিলসহ সবকিছু ঘর থেকে বের করে পাশের পুকুরে এবং সড়কে ফেলে দিয়ে যায়।

প্রবাসী নুরুল আফসার সুমন অভিযোগ করে বলেন, আলমগীর একজন সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসী কাজে জড়িত সে জেল খাটে। জেল থেকে বের হয়ে সে আমাকে বার বার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে রেখেছিলাম। কিন্ত তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখেনি বলেই আজ আমাদের সবকিছু শেষ করে দিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। তিনি আরো বলেন, আমার ২২ বছরের প্রবাস জীবনের সকল আয় উপার্জন আজ শেষ হয়ে গেছে। সন্ত্রসীরা ৩৬ ভরি স্বর্ণ, ৭ লাখ টাকাসহ মূল্যবান জিনিষপত্র, চেকবই সবকিছু নিয়ে গেছে এবং ধ্বংস করে দিয়ে গেছে।

সিনেমার কায়দায় এমন সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ক্ষুদ্ধ ও বিষ্মিত স্থানীয় লোকজন। সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি ও ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরকে পাওয়া যায়নি।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে। এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হচ্ছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার দুপুরের দিকে আসামিকে বিচারিক আদালতে হাজির করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৮:০০:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
Translate »

নোয়াখালীতে ফিল্মি স্টাইলে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা-ভাংচুর, লুটপাট, আটক ১

আপডেট : ০৮:০০:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫

নোয়াখালী সদরে দিনে দুপুরে এক প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা বসতঘরে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেই থামেনি। যাওয়ার সময় ঘরের সব আসবাবপত্র পুকুরে এবং সড়কের ওপর ফেলে দেয়।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলায় কাদির হানিফ ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে একজনকে আটক করে। এ সময় বাকিরা পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, কৃষ্ণরামপুর গ্রামের মৃত হামিদ উল্যার ছেলে সৌদি প্রবাসী নুরুল আফসার সুমন (৪৫) এবং একই এলাকার শাহ্ আলমের দুই ছেলে আলমগীর (৩৫) ও জাহাঙ্গীরের (৩৭) সাথে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে একাধিবার সালিশ বৈঠকও হয়। এরমধ্যে গত কয়েকদিন আগে আলমগীর একটি মামলায় জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে এসে সুমনকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন। শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে আলমগীর ও জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ৬/৭টি মাইক্রোবাসযোগে অর্ধশতাধিক ভাড়াটে সন্ত্রাসী অতর্কিতে এসে সুমনের বাড়িতে হানা দেয়। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা বসতঘরের গেইট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে সুমনের স্ত্রী, শ্বাশুড়িসহ পরিবারের অন্যান্য নারী সদস্যদের পিটিয়ে আহত করে। এ সময় প্রাণভয়ে তারা ঘর থেকে বেরিয়ে যান। পরে সন্ত্রাসীরা ঘরের প্রতিটি কক্ষে প্রবেশ করে সবকিছু ভেঙ্গে তছনছ করে দেয় এবং নগদ টাকা, স্বার্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল লুটে করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা ঘরের খাট, লেপ তোষক, সোফা, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, হাড়িপাতিলসহ সবকিছু ঘর থেকে বের করে পাশের পুকুরে এবং সড়কে ফেলে দিয়ে যায়।

প্রবাসী নুরুল আফসার সুমন অভিযোগ করে বলেন, আলমগীর একজন সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসী কাজে জড়িত সে জেল খাটে। জেল থেকে বের হয়ে সে আমাকে বার বার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে রেখেছিলাম। কিন্ত তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখেনি বলেই আজ আমাদের সবকিছু শেষ করে দিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। তিনি আরো বলেন, আমার ২২ বছরের প্রবাস জীবনের সকল আয় উপার্জন আজ শেষ হয়ে গেছে। সন্ত্রসীরা ৩৬ ভরি স্বর্ণ, ৭ লাখ টাকাসহ মূল্যবান জিনিষপত্র, চেকবই সবকিছু নিয়ে গেছে এবং ধ্বংস করে দিয়ে গেছে।

সিনেমার কায়দায় এমন সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ক্ষুদ্ধ ও বিষ্মিত স্থানীয় লোকজন। সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি ও ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরকে পাওয়া যায়নি।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে। এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হচ্ছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার দুপুরের দিকে আসামিকে বিচারিক আদালতে হাজির করা হবে।