London ০৭:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছিলেন জয়বাংলা ক্লাবের সভাপতি, হয়েছেন বৈষম্যবিরোধীর যুগ্ম আহ্বায়ক

অনলাইন ডেস্ক

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে হয়েছিলেন ‘জয় বাংলা ক্লাব’-এর সভাপতি। পাশাপাশি ফেয়ার মাইন্ড সমাজসেবা সংগঠনের নামে একটি ব্যানারে করতেন বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ বাণিজ্য। পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মহিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আক্তার রেখার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতি রাকিব মুসুল্লির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। 

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাভার উপজেলা কমিটিতে নাম থাকায় আবারও সমালোচনায় এসেছে রাকিব মুসুল্লি। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কলাপাড়া উপজেলার নেতাকর্মীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথাও জানান তারা।

রাকিব মুসুল্লির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় ফেয়ার মাইন্ড স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে চাঁদাবাজির অভিযোগসহ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক এই সংগঠনের নামে অর্থ দিতে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে। টাকা দিতে অস্বীকার করলেই বিভিন্নভাবে তাদের হয়রানির শিকার হতে হতো বলেও জানিয়েছেন অনেকে।

জানা যায়, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর মতো তিনিও এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। ৫ তারিখের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং পরে ঢাকার সাভারে আশ্রয় নেন। সাভারে গিয়ে রাকিব মুসুল্লি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং সংগঠনটির সাভার উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে জায়গা করে নেন।

এই ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলছেন—দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তি কীভাবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বস্থানীয় পদ পেতে পারেন?

এ বিষয়ে রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক ও সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৃহত্তর উত্তরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু সালেহ অমি বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমরা ছাত্র জনতা জীবন দিয়ে এ দেশটাকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করেছি। সেখানে একজন দোসর কীভাবে একটা উপজেলার দায়িত্ব পায়? আমরা কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের ৩৬ ঘণ্টার সময় দিয়েছি—এর মধ্যে তাকে কমিটি থেকে অপসারণ করে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা খোঁজ নিচ্ছি। যদি প্রমাণিত হয় যে তিনি ফ্যাসিস্টের দোসর, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাভার উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায়িত্বশীলরা এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:৩০:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
Translate »

ছিলেন জয়বাংলা ক্লাবের সভাপতি, হয়েছেন বৈষম্যবিরোধীর যুগ্ম আহ্বায়ক

আপডেট : ০৪:৩০:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে হয়েছিলেন ‘জয় বাংলা ক্লাব’-এর সভাপতি। পাশাপাশি ফেয়ার মাইন্ড সমাজসেবা সংগঠনের নামে একটি ব্যানারে করতেন বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ বাণিজ্য। পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মহিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আক্তার রেখার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতি রাকিব মুসুল্লির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। 

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাভার উপজেলা কমিটিতে নাম থাকায় আবারও সমালোচনায় এসেছে রাকিব মুসুল্লি। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কলাপাড়া উপজেলার নেতাকর্মীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথাও জানান তারা।

রাকিব মুসুল্লির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় ফেয়ার মাইন্ড স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে চাঁদাবাজির অভিযোগসহ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক এই সংগঠনের নামে অর্থ দিতে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে। টাকা দিতে অস্বীকার করলেই বিভিন্নভাবে তাদের হয়রানির শিকার হতে হতো বলেও জানিয়েছেন অনেকে।

জানা যায়, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর মতো তিনিও এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। ৫ তারিখের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং পরে ঢাকার সাভারে আশ্রয় নেন। সাভারে গিয়ে রাকিব মুসুল্লি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং সংগঠনটির সাভার উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে জায়গা করে নেন।

এই ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলছেন—দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তি কীভাবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বস্থানীয় পদ পেতে পারেন?

এ বিষয়ে রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক ও সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৃহত্তর উত্তরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু সালেহ অমি বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমরা ছাত্র জনতা জীবন দিয়ে এ দেশটাকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করেছি। সেখানে একজন দোসর কীভাবে একটা উপজেলার দায়িত্ব পায়? আমরা কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের ৩৬ ঘণ্টার সময় দিয়েছি—এর মধ্যে তাকে কমিটি থেকে অপসারণ করে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা খোঁজ নিচ্ছি। যদি প্রমাণিত হয় যে তিনি ফ্যাসিস্টের দোসর, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাভার উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায়িত্বশীলরা এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।