London ১০:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এবার আজ থেকে সংস্কার নিয়ে ঐকমত্যের দরবার

অনলাইন ডেস্ক

রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত কমিশনগুলোর নানা সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করতে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংলাপ শুরু হবে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিস থেকে জানানো হয়েছে।

সংলাপে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান ‍উপদেষ্টা ও ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি মুহাম্মদ ইউনূস। এরই মধ্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোকে।

সংলাপে ছয় কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হবে বলে আগেই জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের যেসব প্রতিবেদন এসেছে, সেগুলো নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের সংলাপ হবে।’

গত বুধবার সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সহসভাপতি হিসেবে আছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

কমিশনের সদস্য হিসেবে আছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংস্কার কমিশনগুলোর বিভিন্ন সুপারিশ বিবেচনা ও জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তির সঙ্গে আলোচনা করবে এই কমিশন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে কাজ শুরু করতে যাওয়া এই কমিশনের মেয়াদ ছয় মাস। কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দেবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্র সংস্কার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেন অন্তর্বর্তী সরকার।

অক্টোবরে গঠিত এসব কমিশনের মধ্যে ১৫ জানুয়ারি প্রাথমিক প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দেয় চারটি সংস্কার কমিশন।

এরপর সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কারে কমিশনগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ৮ ফেব্রুয়ারি।

প্রাথমিক প্রতিবেদন হাতে পেয়ে ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, আলোচনার রসদ আপনারা (সংস্কার কমিশন) তৈরি করে দিয়েছেন। সে আলোচনার পরবর্তী অধ্যায়টা কী হবে- সেটাও আমরা জেনে রাখি- একটা মতৈক্য প্রতিষ্ঠা হবে। সবাই একমত হবে না। কিছু অংশে একদম একমত হবেন।

যে আলোচনা হবে, সে আলোচনার নেতৃত্ব দেবেন আপনারা (সংস্কার কমিশন) মতৈক্য প্রতিষ্ঠার জন্য। যেহেতু আপনারাই তাদের পক্ষ থেকে স্বপ্ন দেখেছেন, কীভাবে তাদের স্বপ্ন আপনাদের স্বপ্ন একাকার হয়ে যাবে, তার মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের একটা চার্টার তৈরি হবে।

সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের কাজ শুরুর আগে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এসে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করা। যেটায় অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সম্মত হবে যে ভবিষ্যতে তারা এ কাজগুলো করবে। আশা করি, সে জায়গায় যাওয়া সম্ভব হবে।

কতটুকু সংস্কার হবে তা রাজনৈতিক দলগুলোর উপর নির্ভর করবে মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, আমরা বড় ধরনের কাঠামোগত সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছি। এগুলোর ক্ষেত্রে প্রথমে দরকার জাতীয় ঐকমত্য। সেটা রাজনৈতিক দলগুলো যেহেতু নির্বাচন করবেন, দেশ চালাবেন তাদের মধ্যে ঐকমত্য জরুরি। আগে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনো ঘোষণা না হলেও প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে বলেছেন, এ বছর ডিসেম্বরেও সেটা হতে পারে। আর নির্বাচন কমিশনও ডিসেম্বর মাথায় রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি সেরে রাখার কথা বলেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:১৩:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
১৭
Translate »

এবার আজ থেকে সংস্কার নিয়ে ঐকমত্যের দরবার

আপডেট : ০৪:১৩:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত কমিশনগুলোর নানা সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করতে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংলাপ শুরু হবে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিস থেকে জানানো হয়েছে।

সংলাপে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান ‍উপদেষ্টা ও ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি মুহাম্মদ ইউনূস। এরই মধ্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোকে।

সংলাপে ছয় কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হবে বলে আগেই জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের যেসব প্রতিবেদন এসেছে, সেগুলো নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের সংলাপ হবে।’

গত বুধবার সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সহসভাপতি হিসেবে আছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

কমিশনের সদস্য হিসেবে আছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংস্কার কমিশনগুলোর বিভিন্ন সুপারিশ বিবেচনা ও জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তির সঙ্গে আলোচনা করবে এই কমিশন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে কাজ শুরু করতে যাওয়া এই কমিশনের মেয়াদ ছয় মাস। কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দেবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্র সংস্কার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেন অন্তর্বর্তী সরকার।

অক্টোবরে গঠিত এসব কমিশনের মধ্যে ১৫ জানুয়ারি প্রাথমিক প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দেয় চারটি সংস্কার কমিশন।

এরপর সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কারে কমিশনগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ৮ ফেব্রুয়ারি।

প্রাথমিক প্রতিবেদন হাতে পেয়ে ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, আলোচনার রসদ আপনারা (সংস্কার কমিশন) তৈরি করে দিয়েছেন। সে আলোচনার পরবর্তী অধ্যায়টা কী হবে- সেটাও আমরা জেনে রাখি- একটা মতৈক্য প্রতিষ্ঠা হবে। সবাই একমত হবে না। কিছু অংশে একদম একমত হবেন।

যে আলোচনা হবে, সে আলোচনার নেতৃত্ব দেবেন আপনারা (সংস্কার কমিশন) মতৈক্য প্রতিষ্ঠার জন্য। যেহেতু আপনারাই তাদের পক্ষ থেকে স্বপ্ন দেখেছেন, কীভাবে তাদের স্বপ্ন আপনাদের স্বপ্ন একাকার হয়ে যাবে, তার মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের একটা চার্টার তৈরি হবে।

সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের কাজ শুরুর আগে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এসে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করা। যেটায় অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সম্মত হবে যে ভবিষ্যতে তারা এ কাজগুলো করবে। আশা করি, সে জায়গায় যাওয়া সম্ভব হবে।

কতটুকু সংস্কার হবে তা রাজনৈতিক দলগুলোর উপর নির্ভর করবে মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, আমরা বড় ধরনের কাঠামোগত সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছি। এগুলোর ক্ষেত্রে প্রথমে দরকার জাতীয় ঐকমত্য। সেটা রাজনৈতিক দলগুলো যেহেতু নির্বাচন করবেন, দেশ চালাবেন তাদের মধ্যে ঐকমত্য জরুরি। আগে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনো ঘোষণা না হলেও প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে বলেছেন, এ বছর ডিসেম্বরেও সেটা হতে পারে। আর নির্বাচন কমিশনও ডিসেম্বর মাথায় রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি সেরে রাখার কথা বলেছে।