London ০৩:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ১০ গুণীজন মেডিকেলে ভর্তির টাকা এখনো জোগাড় হয়নি ইমার যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেশার কুকারে রান্না করলেন সাবেক সৈনিক খোলাবাজার থেকে ১০ হাজার বিনামূল্যের পাঠ্যবই জব্দ, গ্রেপ্তার ২ শেরপুরে মাধ্যমিকের ৯ হাজার সরকারি বই জব্দ! আটক ১ মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ডাক্তারী লেখা পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রান্তি ও পরিবার খাগড়াছড়িতে একক আধিপত্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার, গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ নোয়াখালীতে শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ে ছাই ১১ দোকান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নত হচ্ছে : ইসি মাছউদ

মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ডাক্তারী লেখা পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রান্তি ও পরিবার

মোঃতারিকুল ইসলাম,ফরিদপুর প্রতিনিধি

 

ফরিদপুর জেলার হাটগোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০১৭ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে পিএসসি পাশ করে , কানাইপুরের বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাশ,২০২৪ সালে ফরিদপুর সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করেন।এরপর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে চলতি শিক্ষাবর্ষে চান্স পেয়েছেন।এ বছর অনুষ্ঠিত এমবিবিএস ভর্তি পরিক্ষায় মেধা তালিকায় প্রান্তির অবস্থান ২৭৮২ তম।তবে সামনে কিভাবে মেডিকেলে ভর্তি হবে,লেখাপড়ার খরচ চলাবে কিভাবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে প্রান্তি বিশ্বাস ও তার পরিবারকে।

সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড হাটগোবিন্দপুর গ্রামের উত্তর পাড়া রমেন কুমার বিশ্বাস ও চঞ্চলা রানী বিশ্বাস দম্পতির মেয়ে প্রান্তি বিশ্বাস (১৮)।

সরজমিন ঘুরে জানা গেছে, প্রান্তি বিশ্বাস দুই ভাই-বোনের মধ্যে ছোট। তার বড় ভাই রাহুল বিশ্বাস একটি বেসরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ডিপ্লোমা পাস করে এখনও বেকারত্ব জীবন যাপন করছেন। প্রান্তির বাবা দিনমজুরের( কাঠ মিস্ত্রি) কাজ করেন। মা চঞ্চলা বিশ্বাস বাড়িতে মুড়ি ভেজে শহরের বিভিন্ন দোকানে দোকানে বিক্রি করেন। আর এ দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার ও লেখা পড়ার খরচ।

প্রান্তি বিশ্বাস বলেন, মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেতে ফরিদপুরের একটি কোচিং সেন্টারে কোচিং করেছি। সৃষ্টিকর্তা আমার দিনরাত শ্রমের ফলাফল দিয়েছেন। প্রথমে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। টাকা পয়সার অভাবে ঢাকায় পড়তে পারি নাই। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ডাক্তার হওয়ার জন্য মেডিকেলের প্রস্তুতিই নিয়েছিলাম। ভগবাণ আমার ইচ্ছা পুরন করেছে।আমি সকলের কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করি, ইন্টারমিডিয়েট লেবেলে আমার লেখা পড়ার সমস্ত খরর বহন করেছে কানাইপুরের বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক চঞ্চল দত্ত,স্যার এখন পর্যন্ত আমার লেখা পড়া খরচ চালিয়ে যাচ্ছে।স্কুলের সকল স্যারদের সহযোগিতা না থাকলে আমসর স্বপ্ন পূরন হতো না।আমি যেন আমার ও পরিবারের স্বপ্ন পুরণ করতে পারি।

আরো বলেন, আমি ডাক্তারী পড়বো, ডাক্তার হবো,ডাক্তাী হয়ে আমার মতো মেধাবীদের পাশে দাঁড়াব। আমার মতো যারা অসহায় থাকবে চেষ্টা করবো তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।তাদেরকে ফ্রী চিকিৎসা দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করবো।

প্রান্তির মা চঞ্চলা রানী বিশ্বাস বলেন, মেয়ের মুখে যখন শুনলাম মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ হইছে ডাক্তার হবে তখনকার আনন্দ আর বলে বোঝানো যাবেনা। তবে এখন নতুন চিন্তা মেয়ের ভর্তিসহ পড়ালেখার খরচ জোগানের চিন্তা। কিভাবে কি করব কিছুই বুঝতে পারছিনা।তবে মেয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও তার স্বপ্ন পূরণের দুচোখে অন্ধকার দেখছি।

 

 

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১০:০০:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
Translate »

মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ডাক্তারী লেখা পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রান্তি ও পরিবার

আপডেট : ১০:০০:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

 

ফরিদপুর জেলার হাটগোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০১৭ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে পিএসসি পাশ করে , কানাইপুরের বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাশ,২০২৪ সালে ফরিদপুর সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করেন।এরপর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে চলতি শিক্ষাবর্ষে চান্স পেয়েছেন।এ বছর অনুষ্ঠিত এমবিবিএস ভর্তি পরিক্ষায় মেধা তালিকায় প্রান্তির অবস্থান ২৭৮২ তম।তবে সামনে কিভাবে মেডিকেলে ভর্তি হবে,লেখাপড়ার খরচ চলাবে কিভাবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে প্রান্তি বিশ্বাস ও তার পরিবারকে।

সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড হাটগোবিন্দপুর গ্রামের উত্তর পাড়া রমেন কুমার বিশ্বাস ও চঞ্চলা রানী বিশ্বাস দম্পতির মেয়ে প্রান্তি বিশ্বাস (১৮)।

সরজমিন ঘুরে জানা গেছে, প্রান্তি বিশ্বাস দুই ভাই-বোনের মধ্যে ছোট। তার বড় ভাই রাহুল বিশ্বাস একটি বেসরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ডিপ্লোমা পাস করে এখনও বেকারত্ব জীবন যাপন করছেন। প্রান্তির বাবা দিনমজুরের( কাঠ মিস্ত্রি) কাজ করেন। মা চঞ্চলা বিশ্বাস বাড়িতে মুড়ি ভেজে শহরের বিভিন্ন দোকানে দোকানে বিক্রি করেন। আর এ দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার ও লেখা পড়ার খরচ।

প্রান্তি বিশ্বাস বলেন, মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেতে ফরিদপুরের একটি কোচিং সেন্টারে কোচিং করেছি। সৃষ্টিকর্তা আমার দিনরাত শ্রমের ফলাফল দিয়েছেন। প্রথমে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। টাকা পয়সার অভাবে ঢাকায় পড়তে পারি নাই। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ডাক্তার হওয়ার জন্য মেডিকেলের প্রস্তুতিই নিয়েছিলাম। ভগবাণ আমার ইচ্ছা পুরন করেছে।আমি সকলের কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করি, ইন্টারমিডিয়েট লেবেলে আমার লেখা পড়ার সমস্ত খরর বহন করেছে কানাইপুরের বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক চঞ্চল দত্ত,স্যার এখন পর্যন্ত আমার লেখা পড়া খরচ চালিয়ে যাচ্ছে।স্কুলের সকল স্যারদের সহযোগিতা না থাকলে আমসর স্বপ্ন পূরন হতো না।আমি যেন আমার ও পরিবারের স্বপ্ন পুরণ করতে পারি।

আরো বলেন, আমি ডাক্তারী পড়বো, ডাক্তার হবো,ডাক্তাী হয়ে আমার মতো মেধাবীদের পাশে দাঁড়াব। আমার মতো যারা অসহায় থাকবে চেষ্টা করবো তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।তাদেরকে ফ্রী চিকিৎসা দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করবো।

প্রান্তির মা চঞ্চলা রানী বিশ্বাস বলেন, মেয়ের মুখে যখন শুনলাম মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ হইছে ডাক্তার হবে তখনকার আনন্দ আর বলে বোঝানো যাবেনা। তবে এখন নতুন চিন্তা মেয়ের ভর্তিসহ পড়ালেখার খরচ জোগানের চিন্তা। কিভাবে কি করব কিছুই বুঝতে পারছিনা।তবে মেয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও তার স্বপ্ন পূরণের দুচোখে অন্ধকার দেখছি।