London ০৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ায় গাঁজা না দেয়ায় ড্রাইভারকে হত্যা দাফনের ৩৮ দিন পর মরদেহ উত্তোলন

রাকিবুল ইসলাম,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দাফনের ৩৮ দিন পর তরিকুল শেখ (৩২) নামের এক ট্রাকচালকের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার উত্তর কয়া বাইতুল মামুর কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়।
তরিকুল শেখ ওই এলাকার ছাবদুল শেখের ছেলে।

মরদেহ উত্তোলনের সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন, কুষ্টিয়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান, নিহতের স্বজন ও কয়েক শত উৎসুক জনতা উপস্থিত ছিলেন।
কুষ্টিয়া, ট্রাকচালক, মরদেহদাফনের ৩৮ দিন পর কবর থেকে ট্রাকচালকের মরদেহ উত্তোলন

পুলিশ জানায়, তরিকুল শেখ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ট্রাকচালক ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তরিকুল ট্রাক চালিয়ে মোংলা বন্দরে থেকে পঞ্চগড় যাচ্ছিলেন। পথে কুষ্টিয়া বাইপাস সড়কের জগতি এলাকায় পৌঁছালে তার কাছে গাঁজা (মাদকদ্রব্য) চান গাড়ির হেলপার আল আমিন শেখ (২৭)। সে সময় গাঁজা না দিলে লোহার গ্রিসগান দিয়ে তরিকুলের মাথা, গলা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করে হেলপার আল আমিন। হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আল আমিন সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজায় এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হিসেবে ওই দিন ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহটি দাফন করা হয়।

পুলিশ আরও জানায়, ঘটনার দুদিন পর গত ১৬ ডিসেম্বর হেলপার আল আমিনকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাকচালক তরিকুলকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে।

এ ঘটনায় ১৬ ডিসেম্বর তরিকুলের চাচা মো. আব্দুল্লাহ (৫৩) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় হেলপার আল আমিনকে আসামি করা হয়। ১৭ ডিসেম্বর পুলিশ কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন। আদালত ২২ ডিসেম্বর মরদেহটি উত্তোলনের অনুমতি দেন। প্রক্রিয়া শেষে বুধবার মরদেহটি উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, তারিকুলের কাছে ৫০ হাজার টাকা চান হেলপার আলামিন। টাকা না পেয়ে তরিকুলকে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিল। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, মাদকদ্রব্য (গাঁজা) চেয়ে না পাওয়ার কারণে চালককে হত্যা করেছিল হেলপার আল আমিন। আদালতের জবানবন্দিতে আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। বর্তমানে আসামি কারাগারে রয়েছেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন জানান, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:০০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
Translate »

কুষ্টিয়ায় গাঁজা না দেয়ায় ড্রাইভারকে হত্যা দাফনের ৩৮ দিন পর মরদেহ উত্তোলন

আপডেট : ১২:০০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দাফনের ৩৮ দিন পর তরিকুল শেখ (৩২) নামের এক ট্রাকচালকের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার উত্তর কয়া বাইতুল মামুর কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়।
তরিকুল শেখ ওই এলাকার ছাবদুল শেখের ছেলে।

মরদেহ উত্তোলনের সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন, কুষ্টিয়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান, নিহতের স্বজন ও কয়েক শত উৎসুক জনতা উপস্থিত ছিলেন।
কুষ্টিয়া, ট্রাকচালক, মরদেহদাফনের ৩৮ দিন পর কবর থেকে ট্রাকচালকের মরদেহ উত্তোলন

পুলিশ জানায়, তরিকুল শেখ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ট্রাকচালক ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তরিকুল ট্রাক চালিয়ে মোংলা বন্দরে থেকে পঞ্চগড় যাচ্ছিলেন। পথে কুষ্টিয়া বাইপাস সড়কের জগতি এলাকায় পৌঁছালে তার কাছে গাঁজা (মাদকদ্রব্য) চান গাড়ির হেলপার আল আমিন শেখ (২৭)। সে সময় গাঁজা না দিলে লোহার গ্রিসগান দিয়ে তরিকুলের মাথা, গলা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করে হেলপার আল আমিন। হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আল আমিন সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজায় এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হিসেবে ওই দিন ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহটি দাফন করা হয়।

পুলিশ আরও জানায়, ঘটনার দুদিন পর গত ১৬ ডিসেম্বর হেলপার আল আমিনকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাকচালক তরিকুলকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে।

এ ঘটনায় ১৬ ডিসেম্বর তরিকুলের চাচা মো. আব্দুল্লাহ (৫৩) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় হেলপার আল আমিনকে আসামি করা হয়। ১৭ ডিসেম্বর পুলিশ কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন। আদালত ২২ ডিসেম্বর মরদেহটি উত্তোলনের অনুমতি দেন। প্রক্রিয়া শেষে বুধবার মরদেহটি উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, তারিকুলের কাছে ৫০ হাজার টাকা চান হেলপার আলামিন। টাকা না পেয়ে তরিকুলকে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিল। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, মাদকদ্রব্য (গাঁজা) চেয়ে না পাওয়ার কারণে চালককে হত্যা করেছিল হেলপার আল আমিন। আদালতের জবানবন্দিতে আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। বর্তমানে আসামি কারাগারে রয়েছেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন জানান, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।