London ০২:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির শোক স্মরণে সিরাজগঞ্জে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর দোয়া মাহফিল রাজশাহীতে নাবিল গ্রুপকে ২ লাখ টাকা জরিমানা কিন্ডারগার্টেনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখায় গাইবান্ধায় প্রতিবাদ ও মানববন্ধন পটুয়াখালীতে চলতি বছরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা চরমে সিরাজগঞ্জে যমুনা শিশুপার্কের যাত্রা: খুশির নতুন ঠিকানা শিশুদের জন্য পাইকেরছড়া মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা ইজি ডেলিভারি সেবা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ গ্রেটার কামাল বাজার ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকে এর চ‍্যারিটি ব‍্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট-২০২৫ সম্পন্ন সুন্দরগঞ্জের ধর্মপুর কলেজে উপাধ্যক্ষ ও দুই প্রভাষক নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রাইসা মনির মৃত দেহর খোজ মিললো সিএমএইচয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গোবিন্দগঞ্জে আবারও ২ জন সক্রিয় হ্যাকার গ্রেফতার

যে কারণে খেজুর গাছ শুধু শীতকালেই রস দেয়

অনলাইন ডেস্ক

শীত যত বাড়ছে খেজুরের রসের চাহিদাও তত বাড়ছে। গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে এই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস। তাই তীব্র শীত উপেক্ষা করে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য সময় পার করছেন নওগাঁর গাছিরা।

সুস্বাদু এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। ফলে কাজের চাপে দম নেওয়ার সময় পান না তারা। খেজুর ও রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এখানকার গাছিরা। গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করা হয়।

খেজুর গাছ মূলের মাধ্যমে পানি শোষণ করে। এই পানি পাতায় পৌঁছে গেলে পাতায় সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে খাদ্য হিসাবে গ্লুকোজ তৈরি হয়। গ্লুকোজ পরে সুক্রোজ বা চিনিতে রূপান্তরিত হয়। গাছের বৃদ্ধি ও বেঁচে থাকার জন্য এই চিনি খরচ হয়ে যায়।

খরচ হওয়ার পর যদি চিনি বেঁচে যায়, তাহলে চিনিগুলো স্টার্চ নামক অদ্রবণীয় জটিল শর্করা হিসেবে জমা থাকে। বর্ষাকালে মাটিতে প্রচুর পানি থাকে, তাই মূলের মাধ্যমে প্রচুর পানি শোষণ করে পাতায় প্রচুর খাদ্য তৈরি হয়। শীতকালে মাটিতে পানি কম থাকে, তাই পানির অভাবে পাতায় কম খাদ্য তৈরি হয়। শীতকালে স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য খেজুর গাছ অতিরিক্ত খাদ্য মজুদ করে রাখে।

তাপমাত্রা কমতে শুরু করলে মূল থেকে পানির শোষণ কম হতে থাকে। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সংকেত খেজুর গাছের কোষে এক ধরনের এনজাইম ক্ষরণ হতে থাকে এই এনজাইমের প্রভাবে জমিয়ে রাখা স্টার্চ ভেঙ্গে আবার চিনিতে পরিণত হয়। মূল থেকে উঠে আসা পানির সাথে এই চিনি মিশে একটি মিষ্টি সরবত তৈরি হয়। এটাই হলো খেজুরের রস। যেহেতু মূল থেকে উঠা পানি উপরের দিকে ধাবিত হয়, তাই রস উপরের অংশে থাকা কোনো ক্ষত দিয়ে বের হয়। যেটা আহরণকারীরা গাছের ডগার ঠিক নিচের অংশে কেটে বের করে।

শীতকালে গাছের প্রস্বেদন কম হয়, তাই গাছ থেকে খুব কম পরিমাণ পানি বাষ্পাকারে বের হয়। গাছে ক্ষত থাকলে সেই ক্ষত দিয়ে চিনি মিশ্রিত রস বের হয়। রস যত বের হবে, তত ব্যাপন চাপ ঘাটতি সৃষ্টি হয়, এই চাপ ঘাটতির কারণে একটি চোষণ শক্তির উদ্ভব হয়। চোষণ শক্তির প্রভাবে মাটি থেকে পানি শোষিত হয় এবং শীতকালজুড়ে রস বের হতে থাকে।

খেজুর গাছ কমপক্ষে ৫ বছরের না হলে রস উৎপাদন করতে পারে না। একটি পূর্ণ বয়স্ক খেজুর গাছ শীত মৌসুমে ১৫০-১৬০ লিটার রস উৎপাদন করতে পারে। গাছের গোড়ায় যদি ছিদ্র করা হয়, তাহলে রস আহরণ করা যাবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:৪০:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
৫১
Translate »

যে কারণে খেজুর গাছ শুধু শীতকালেই রস দেয়

আপডেট : ১২:৪০:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

শীত যত বাড়ছে খেজুরের রসের চাহিদাও তত বাড়ছে। গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে এই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস। তাই তীব্র শীত উপেক্ষা করে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য সময় পার করছেন নওগাঁর গাছিরা।

সুস্বাদু এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। ফলে কাজের চাপে দম নেওয়ার সময় পান না তারা। খেজুর ও রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এখানকার গাছিরা। গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করা হয়।

খেজুর গাছ মূলের মাধ্যমে পানি শোষণ করে। এই পানি পাতায় পৌঁছে গেলে পাতায় সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে খাদ্য হিসাবে গ্লুকোজ তৈরি হয়। গ্লুকোজ পরে সুক্রোজ বা চিনিতে রূপান্তরিত হয়। গাছের বৃদ্ধি ও বেঁচে থাকার জন্য এই চিনি খরচ হয়ে যায়।

খরচ হওয়ার পর যদি চিনি বেঁচে যায়, তাহলে চিনিগুলো স্টার্চ নামক অদ্রবণীয় জটিল শর্করা হিসেবে জমা থাকে। বর্ষাকালে মাটিতে প্রচুর পানি থাকে, তাই মূলের মাধ্যমে প্রচুর পানি শোষণ করে পাতায় প্রচুর খাদ্য তৈরি হয়। শীতকালে মাটিতে পানি কম থাকে, তাই পানির অভাবে পাতায় কম খাদ্য তৈরি হয়। শীতকালে স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য খেজুর গাছ অতিরিক্ত খাদ্য মজুদ করে রাখে।

তাপমাত্রা কমতে শুরু করলে মূল থেকে পানির শোষণ কম হতে থাকে। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সংকেত খেজুর গাছের কোষে এক ধরনের এনজাইম ক্ষরণ হতে থাকে এই এনজাইমের প্রভাবে জমিয়ে রাখা স্টার্চ ভেঙ্গে আবার চিনিতে পরিণত হয়। মূল থেকে উঠে আসা পানির সাথে এই চিনি মিশে একটি মিষ্টি সরবত তৈরি হয়। এটাই হলো খেজুরের রস। যেহেতু মূল থেকে উঠা পানি উপরের দিকে ধাবিত হয়, তাই রস উপরের অংশে থাকা কোনো ক্ষত দিয়ে বের হয়। যেটা আহরণকারীরা গাছের ডগার ঠিক নিচের অংশে কেটে বের করে।

শীতকালে গাছের প্রস্বেদন কম হয়, তাই গাছ থেকে খুব কম পরিমাণ পানি বাষ্পাকারে বের হয়। গাছে ক্ষত থাকলে সেই ক্ষত দিয়ে চিনি মিশ্রিত রস বের হয়। রস যত বের হবে, তত ব্যাপন চাপ ঘাটতি সৃষ্টি হয়, এই চাপ ঘাটতির কারণে একটি চোষণ শক্তির উদ্ভব হয়। চোষণ শক্তির প্রভাবে মাটি থেকে পানি শোষিত হয় এবং শীতকালজুড়ে রস বের হতে থাকে।

খেজুর গাছ কমপক্ষে ৫ বছরের না হলে রস উৎপাদন করতে পারে না। একটি পূর্ণ বয়স্ক খেজুর গাছ শীত মৌসুমে ১৫০-১৬০ লিটার রস উৎপাদন করতে পারে। গাছের গোড়ায় যদি ছিদ্র করা হয়, তাহলে রস আহরণ করা যাবে না।