London ০৩:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
রাজশাহীতে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার মদনে ৬০০ পিস ইয়াবাসহ পুলিশের জালে ধরা পাঁচ মাদক কারবারি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার পাবনার যুবদল ও কৃষকদল নেতা বহিষ্কার পাবনার ফরিদপুরে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী মা-মেয়ে নিহত, আহত বাবা রাজশাহীতে নতুন জাতের আম কটিমন দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়বে বিএনপি,দুর্গাপুরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় নেতৃবৃন্দ কালিয়াকৈরে বনের জমিতে অবৈধ ঘরবাড়ি উচ্ছেদ অভিযান বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে লালবাগ থানা ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি টি.আর বরাদ্দে দুর্নীতি: কাগজে কাজ শেষ, মাঠে রাস্তা নেই দুর্গাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১জন

৮০ জন চিকিৎসকের ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় আলাদা শিফা ও রিফা

৮০ জন চিকিৎসকের ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়েছে পেটে এবং বুকে জোড়া লাগানো যমজ দুই বোন শিফা ও রিফাকে।  

সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে শিশু দু’টিকে সফলভাবে আলাদা করার কথা জানায়।বাদশা ও মাহমুদা দম্পতির সন্তান ১৫ মাসের রিফা এবং শিফার বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলায়। এই দম্পতির ছয় বছরের আরও এক মেয়ে আছে। বাদশা ঢাকার বড়বাগ এলাকার একটি মেসে থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করেন।

হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাহনুর ইসলাম জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর রিফা ও শিফাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়। বিভিন্ন বিভাগের ৮০ জন চিকিৎসক প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে এই অস্ত্রোপচার করেন।

অধ্যাপক সাহনুর বলেন, ‘চলতি মাসের ১৪ জুন মাহমুদা বুক পেট জোড়া লাগানো শিশু দু’টিকে নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২১ জুন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক মাস পর তাদের আসতে বলা হয়। এক মাস পর তাদের চিকিৎসা দিয়ে আরও এক মাস পর দেখা করতে বলা হয়।’

ডা. সাহনুর আরও বলেন, ‘গত ৭ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করার পর দুই বোনকে আইসিইউতে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর রিফাকে ও ৯ সেপ্টেম্বর শিফাকে ভেন্টিলেটর মুক্ত করা হয়। এর মধ্যে রিফা সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলেও শিফা অসুস্থ ছিল। তার হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। তাকে হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে শিফার পিত্তনালির সংযোগ খুলে যাওয়ায় আবার অস্ত্রোপচার করা হয়। শিফা বর্তমানে আইসিইউতে আছে।’

জানা যায়, শিফা ও রিফার চিকিৎসার খরচ বহন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সমাজসেবা দপ্তর, আকিজ গ্রুপ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, বিএসএমএমইউ, বারডেমের ট্রান্সফিউশান মেডিসিন বিভাগ, ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগ এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক ও তার মা-বাবা।

ডা. সাহনুর বলেন, ‘কখনো কখনো জোড়া লাগানো যমজদের দু’জনের কাউকে রক্ষা করা যায় না। কখনো একজনকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।

রিফা ও শিফার বাবা বাদশা বলেন, ‘ওরা যখন মায়ের গর্ভে ছিল তখন চিকিৎসক জানান, তাদের যমজ সন্তান হবে। কিন্তু জন্মের সময় জানা যায় শিশু দু’টি একে অপরের সঙ্গে জোড়া লাগানো।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:৫২:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
১১২
Translate »

৮০ জন চিকিৎসকের ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় আলাদা শিফা ও রিফা

আপডেট : ১১:৫২:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

৮০ জন চিকিৎসকের ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়েছে পেটে এবং বুকে জোড়া লাগানো যমজ দুই বোন শিফা ও রিফাকে।  

সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে শিশু দু’টিকে সফলভাবে আলাদা করার কথা জানায়।বাদশা ও মাহমুদা দম্পতির সন্তান ১৫ মাসের রিফা এবং শিফার বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলায়। এই দম্পতির ছয় বছরের আরও এক মেয়ে আছে। বাদশা ঢাকার বড়বাগ এলাকার একটি মেসে থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করেন।

হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাহনুর ইসলাম জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর রিফা ও শিফাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়। বিভিন্ন বিভাগের ৮০ জন চিকিৎসক প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে এই অস্ত্রোপচার করেন।

অধ্যাপক সাহনুর বলেন, ‘চলতি মাসের ১৪ জুন মাহমুদা বুক পেট জোড়া লাগানো শিশু দু’টিকে নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২১ জুন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক মাস পর তাদের আসতে বলা হয়। এক মাস পর তাদের চিকিৎসা দিয়ে আরও এক মাস পর দেখা করতে বলা হয়।’

ডা. সাহনুর আরও বলেন, ‘গত ৭ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করার পর দুই বোনকে আইসিইউতে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর রিফাকে ও ৯ সেপ্টেম্বর শিফাকে ভেন্টিলেটর মুক্ত করা হয়। এর মধ্যে রিফা সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলেও শিফা অসুস্থ ছিল। তার হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। তাকে হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে শিফার পিত্তনালির সংযোগ খুলে যাওয়ায় আবার অস্ত্রোপচার করা হয়। শিফা বর্তমানে আইসিইউতে আছে।’

জানা যায়, শিফা ও রিফার চিকিৎসার খরচ বহন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সমাজসেবা দপ্তর, আকিজ গ্রুপ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, বিএসএমএমইউ, বারডেমের ট্রান্সফিউশান মেডিসিন বিভাগ, ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগ এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক ও তার মা-বাবা।

ডা. সাহনুর বলেন, ‘কখনো কখনো জোড়া লাগানো যমজদের দু’জনের কাউকে রক্ষা করা যায় না। কখনো একজনকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।

রিফা ও শিফার বাবা বাদশা বলেন, ‘ওরা যখন মায়ের গর্ভে ছিল তখন চিকিৎসক জানান, তাদের যমজ সন্তান হবে। কিন্তু জন্মের সময় জানা যায় শিশু দু’টি একে অপরের সঙ্গে জোড়া লাগানো।’