হাউস অফ কমন্স-এ গ্লোউমেন সিআইসি-এর আয়োজনে রাউন্ডটেবিল অনুষ্ঠিত
গত ১৭ই ডিসেম্বর, গ্লোউমেন সিআইসি-এর উদ্যোগে লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী হাউস অফ কমন্স-এ এক গুরুত্বপূর্ণ রাউন্ডটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল “ওমেন, কনফ্লিক্ট অ্যান্ড জেন্ডার-বেসড ভায়োলেন্স: দ্য কোয়েস্ট ফর জাস্টিস অ্যান্ড সিকিউরিটি।” অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন গ্লোউমেন সিআইসি-এর সিইও স্নিগ্ধা মিস্টি, যিনি নারীর অধিকার রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বার্কিং অ্যান্ড ডেগেনহ্যামের এমপি মিস মার্গারেট মুলানে। তিনি তাঁর বক্তব্যে জেন্ডার-বেসড ভায়োলেন্স বন্ধে ব্রিটেনের লেবার সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর কথা তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, এই ইস্যুকে আরও গুরুত্ব দিয়ে লেবার পার্টির কাউন্সিলে জোরালো প্রস্তাব উত্থাপন করবেন এবং নারীর সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সান্ডারল্যান্ড ইউনিভার্সিটির খ্যাতনামা প্রফেসর ড. বিলান, ড. ম্যারেক এবং ড. মেরি। তাঁরা গবেষণালব্ধ তথ্যের মাধ্যমে যুদ্ধকালীন সময়ে নারীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ এবং তার ফলশ্রুতিতে সামাজিক ও মানসিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোর সাবেক সেনাপ্রধান মিস্টার মুসি তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, কীভাবে যুদ্ধকালীন সময়ে নারীরা চরম নির্যাতনের শিকার হন এবং এই বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণী স্তরে উপস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মঙ্গোলিয়া দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিস মুগী নারীদের প্রতি সংঘটিত বৈষম্যমূলক আচরণ এবং বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে জেন্ডার-বেসড ভায়োলেন্স-এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বার্কিং অ্যান্ড ডেগেনহ্যাম, নিউহ্যাম এবং টাওয়ার হ্যামলেটস-এর বিভিন্ন কাউন্সিলররা তাঁদের নিজ নিজ এলাকার পরিস্থিতি এবং স্থানীয় নারীদের চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে কথা বলেন।
এই রাউন্ডটেবিলে বিভিন্ন নারীবিষয়ক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং ব্রিটেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা তাঁদের অভিজ্ঞতা ও মতামত শেয়ার করে আলোচনা সমৃদ্ধ করেন। বক্তারা যুদ্ধকালীন গণহত্যা, জেন্ডার-বৈষম্য এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে করণীয় নিয়ে মতামত দেন।
অনুষ্ঠানের আলোচনায় নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব বিশেষভাবে উঠে আসে। বক্তারা বলেন, কেবল আইনী কাঠামো নয়, বরং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারীদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জেন্ডার-বেসড ভায়োলেন্স প্রতিরোধ সম্ভব।
গ্লোউমেন সিআইসি-এর এই রাউন্ডটেবিল আলোচনাটি নারীর প্রতি সহিংসতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এটি ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে এই ইস্যুকে তুলে ধরার পথ খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।