London ১১:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ কোন পথে’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত নেত্রকোনা সীমান্তে টংক আন্দোলনের নেত্রী রাশি মণি’র হাজংয়ের ৭৯তম প্রয়াণ দিবস পালিত ফরিদপুরে রিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে চালককে হত্যা বিয়ে করলেন সারজিস আলম টিকটকে আসক্ত মেয়েকে গুলি করে হত্যা উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ প্লে-অফেই রিয়াল-সিটি লড়াই, বাকি ম্যাচে কে কার প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ কোনো প্রোগ্রাম করার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের মঞ্চে কোমর ধরে তরুণীকে কাছে টেনে ফ্লার্টিং শাহরুখের! ভিডিও ভাইরাল ১৪ সেকেন্ডের দুষ্টু ভঙ্গির ভিডিওতে ঝড় তুললেন পরীমণি!

স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে যা করতে হবে 

দেশে স্তন ক্যানসার বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। স্তন ক্যানসার সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা এবং সামাজিক স্টিগ্মা, ট্যাবু ইত্যাদি দূর করে এর লক্ষণ, শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে হবে। সামাজিক রক্ষণশীলতার কারণে বাংলাদেশে নারী বা পুরুষ যে কেউই প্রকাশ্যে স্তনবিষয়ক কোনো আলোচনা করতে অস্বস্তি বোধ করে। একইভাবে নারীদের স্তনে কোনো পরিবর্তন বা প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলেও তাঁরা তা গোপন রাখেন। ফলে অনেক দেরিতে রোগটি শনাক্ত হয়। 

তাই স্তন ক্যানসারকে লজ্জা পাওয়া বা গোপন রোগ হিসেবে চিন্তা করার অবকাশ নেই। জীবনের দামে লজ্জার দাম পরিশোধ করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। স্তন ক্যানসার শনাক্তকরণে সমাজের সবাই সচেতন হলে স্তন ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রাথমিক পর্যায়ে দ্রুত শনাক্ত করা গেলে এই রোগ ক্ষেত্রবিশেষে পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য এবং এর মাধ্যমে স্তন ক্যানসারজনিত মৃত্যুহার কমিয়ে আনা সম্ভব। 

শনাক্তকরণের উপায়

● স্তনের স্ব-পরীক্ষা: চিকিৎসকেরা ২০ বছর বয়স থেকে বাড়িতে বসে নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এর মাধ্যমে স্তনে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা বা পরিবর্তন থাকলে তা বোঝা যায়। 

● চিকিৎসকের সাহায্য: একজন চিকিৎসক বা অন্য কোনো পেশাদার স্বাস্থ্যসেবীর মাধ্যমে স্তনের পরীক্ষা করানো উচিত। রক্তচাপ মাপার মতোই এই পরীক্ষাকে একটি রুটিন পরীক্ষায় পরিণত করা উচিত। 

● ম্যামোগ্রাফি: ম্যামোগ্রাফি হলো স্তনের একধরনের কম মাত্রার এক্স-রে। ম্যামোগ্রাফি স্তন টিস্যুর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভর বা মাইক্রোক্যালসিফিকেশন পরীক্ষা করে স্তন ক্যানসারের প্রাথমিক শনাক্তকরণ নিশ্চিত করা হয়। ঝুঁকির মাত্রার ওপর নির্ভর করে ম্যামোগ্রামের সঙ্গে স্তনের এমআরআইও করা যেতে পারে।

রোডম্যাপ কেমন হওয়া উচিত

● ২৯ থেকে ৩৯ বছর বয়সী নারীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে প্রতি ১-৩ বছর অন্তর একটি ক্লিনিক্যাল স্তন পরীক্ষা করানো। 

● ৪০ বছর বয়সের পর নারীদের প্রতিবছর একজন পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে স্তন পরীক্ষা করানো।

● ২০ বছরের বেশি বয়সী নারীরা প্রতি মাসে একবার নিয়মিতভাবে স্তনের স্ব-পরীক্ষা (সেলফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশন) করতে পারেন। এই পদ্ধতি কারও কাছে শিখে নিতে পারেন বা ইউটিউবে দেখে নিতে পারেন। 

● ৪০ বছর বা তার বেশি বয়সী নারীদের প্রতিবছর একটি ম্যামোগ্রাম করা উচিত। যত দিন তাঁরা সুস্থ থাকেন, তত দিন এই রুটিন চালিয়ে যাওয়া উচিত। তবে স্তনের স্ব-পরীক্ষা করার সময় একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে দিয়ে দেখিয়ে নেবেন, তাঁদের স্ব-পরীক্ষার কৌশল সঠিক কি না। স্তন ক্যানসারের জন্য উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা নারীদের প্রতিবছর একটি এমআরআই এবং ম্যামোগ্রাম করা উচিত।

আগামীকাল পড়ুন: অল্প বয়সে কি পারকিনসন্স হয়  

অধ্যাপক ডা. মো. সেতাবুর রহমান ব্রেস্ট, খাদ্যনালি ও কলোরেক্টাল সার্জন, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, ল্যাবএইড ক্যানসার স্পেশালিস্ট হাসপাতাল, ঢাকা

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:৪৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪
৩৯
Translate »

স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে যা করতে হবে 

আপডেট : ০৪:৪৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

দেশে স্তন ক্যানসার বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। স্তন ক্যানসার সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা এবং সামাজিক স্টিগ্মা, ট্যাবু ইত্যাদি দূর করে এর লক্ষণ, শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে হবে। সামাজিক রক্ষণশীলতার কারণে বাংলাদেশে নারী বা পুরুষ যে কেউই প্রকাশ্যে স্তনবিষয়ক কোনো আলোচনা করতে অস্বস্তি বোধ করে। একইভাবে নারীদের স্তনে কোনো পরিবর্তন বা প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলেও তাঁরা তা গোপন রাখেন। ফলে অনেক দেরিতে রোগটি শনাক্ত হয়। 

তাই স্তন ক্যানসারকে লজ্জা পাওয়া বা গোপন রোগ হিসেবে চিন্তা করার অবকাশ নেই। জীবনের দামে লজ্জার দাম পরিশোধ করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। স্তন ক্যানসার শনাক্তকরণে সমাজের সবাই সচেতন হলে স্তন ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রাথমিক পর্যায়ে দ্রুত শনাক্ত করা গেলে এই রোগ ক্ষেত্রবিশেষে পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য এবং এর মাধ্যমে স্তন ক্যানসারজনিত মৃত্যুহার কমিয়ে আনা সম্ভব। 

শনাক্তকরণের উপায়

● স্তনের স্ব-পরীক্ষা: চিকিৎসকেরা ২০ বছর বয়স থেকে বাড়িতে বসে নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এর মাধ্যমে স্তনে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা বা পরিবর্তন থাকলে তা বোঝা যায়। 

● চিকিৎসকের সাহায্য: একজন চিকিৎসক বা অন্য কোনো পেশাদার স্বাস্থ্যসেবীর মাধ্যমে স্তনের পরীক্ষা করানো উচিত। রক্তচাপ মাপার মতোই এই পরীক্ষাকে একটি রুটিন পরীক্ষায় পরিণত করা উচিত। 

● ম্যামোগ্রাফি: ম্যামোগ্রাফি হলো স্তনের একধরনের কম মাত্রার এক্স-রে। ম্যামোগ্রাফি স্তন টিস্যুর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভর বা মাইক্রোক্যালসিফিকেশন পরীক্ষা করে স্তন ক্যানসারের প্রাথমিক শনাক্তকরণ নিশ্চিত করা হয়। ঝুঁকির মাত্রার ওপর নির্ভর করে ম্যামোগ্রামের সঙ্গে স্তনের এমআরআইও করা যেতে পারে।

রোডম্যাপ কেমন হওয়া উচিত

● ২৯ থেকে ৩৯ বছর বয়সী নারীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে প্রতি ১-৩ বছর অন্তর একটি ক্লিনিক্যাল স্তন পরীক্ষা করানো। 

● ৪০ বছর বয়সের পর নারীদের প্রতিবছর একজন পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে স্তন পরীক্ষা করানো।

● ২০ বছরের বেশি বয়সী নারীরা প্রতি মাসে একবার নিয়মিতভাবে স্তনের স্ব-পরীক্ষা (সেলফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশন) করতে পারেন। এই পদ্ধতি কারও কাছে শিখে নিতে পারেন বা ইউটিউবে দেখে নিতে পারেন। 

● ৪০ বছর বা তার বেশি বয়সী নারীদের প্রতিবছর একটি ম্যামোগ্রাম করা উচিত। যত দিন তাঁরা সুস্থ থাকেন, তত দিন এই রুটিন চালিয়ে যাওয়া উচিত। তবে স্তনের স্ব-পরীক্ষা করার সময় একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে দিয়ে দেখিয়ে নেবেন, তাঁদের স্ব-পরীক্ষার কৌশল সঠিক কি না। স্তন ক্যানসারের জন্য উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা নারীদের প্রতিবছর একটি এমআরআই এবং ম্যামোগ্রাম করা উচিত।

আগামীকাল পড়ুন: অল্প বয়সে কি পারকিনসন্স হয়  

অধ্যাপক ডা. মো. সেতাবুর রহমান ব্রেস্ট, খাদ্যনালি ও কলোরেক্টাল সার্জন, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, ল্যাবএইড ক্যানসার স্পেশালিস্ট হাসপাতাল, ঢাকা