London ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
মেডিকেল ক্যাম্প–রক্তদানে ব্যতিক্রমী আয়োজন, পালিত হলো প্রেসক্লাব আলফাডাঙ্গার ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিনব্যাপী সেবামূলক কার্যক্রমে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন ভাই আজাদসহ দুই স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা কালিয়াকৈরে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকচালক নিহত রাজশাহীতে চলছে ট্রাফিক সপ্তাহ ২০২৫ কালিয়াকৈর ৫ নং ওয়ার্ড পৌর বি এন পির নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা ও মতবিনিময় বিক্ষোভ সমাবেশে ক্ষোভের বিস্ফোরণ: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক রায়ের প্রতিবাদে লন্ডনে প্রবাসীদের গণজমায়েত রাজশাহীতে চলছে উদ্যোক্তা মেলা গাজীপুর-১ আসন কালিয়াকৈরে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে নানিয়ারচর জোন (১৭ই বেংগল) এর উদ্যোগে বিনামূল্যে শীতবস্ত্র বিতরণ সিরাজগঞ্জ সততা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে নবনির্বাচিত পরিচালক হাজী মোঃ আব্দুস সাত্তারকে সংবর্ধনা

সেই কথিত যুবদল নেতা আবার চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক। নীরব পুলিশ!

মোঃতারিকুল ইসলাম,ফরিদপুর প্রতিনিধি:

কথিত যুবদল নেতা শাহেদ

গোপালপুর বাজারে আবারও আলোচনায় কথিত যুবদল নেতা শাহেদ। পারিবারিক বিরোধের মীমাংসার নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বাজারজুড়ে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছেন জুয়েল মোল্লার ছেলে এই যুবক, যিনি নিজেকে গোপালপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে থাকেন—যদিওএর আগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুবদলের সভাপতি জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে কোনো কমিটিই নেই।

কথিত যুবদল নেতা শাহেদ

ঘটনার সূত্রপাত ১৫ জুন রাত ১০টার দিকে। ফয়সাল নামের এক মুরগি ব্যবসায়ীর পারিবারিক বিরোধের জেরে শাহেদ ও তার প্রায় ১০ জন সহযোগী ফয়সালের দোকানে এসে তাকে বাইরে যেতে বলেন। ফয়সাল দোকানেই অবস্থান করলে তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, মীমাংসা না করলে “খবর আছে”।

পরদিন ১৬ জুন সকাল ১০টার দিকে আবারও দোকানে গিয়ে ফয়সালকে না পেয়ে তার বাবা মুল্লুক চান ওরফে মুন্নুর কাছে শাহেদ বলেন, “চাচা, কিছু টাকা দেন, সব ঠিক হয়ে যাবে, না হলে ঝামেলা হবে।” বিকেলে আবার আসে, ফেরার পর টাকা না পেয়ে মুল্লুক চানকে ধাক্কা মেরে ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা নিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার। চিৎকার শুনে বাজারের লোকজন ছুটে এসে শাহেদকে আটক করে, তবে তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

পরিস্থিতি থমকে যায়নি এখানেই। ফয়সাল ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাইলে, পুলিশের আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান আলফাডাঙ্গা পৌর যুবদলের সভাপতি মিজান ও তার লোকজন। পরে পুলিশ এলে মিজানের ‘ম্যানেজিং’ এ শাহেদকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ফয়সাল বলেন, “আমার পারিবারিক সমস্যাকে ঘিরে জোর করে টাকা দাবি করেছে। দোকানে না থাকায় বাবাকে হুমকি দিয়ে দোকানে এসে আমার বাবাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বাক্স থেকে টাকা নিয়েছে। আমরা থানায় জানিয়েছি কিন্তু প্রতিকার পাচ্ছি না।”

শুধু এই ঘটনাই নয়, এর আগে ৯ জুন কামারগ্রামের মুদি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের দোকানে গিয়ে সিগারেট না থাকায় পিস্তল ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে শাহেদ। ড্রয়ার ভেঙে টাকা নিয়ে চলে যায়। ফয়সালের মতো রফিকুলও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

পাশাপাশি ঈদের সময় বাড়ি বেড়াতে আসা এক গার্মেন্টস কর্মী কাওসার খানকেও রাস্তা আটকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে শাহেদের বিরুদ্ধে।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, কাপড় ব্যবসায়ী জয়, কাঁচামালের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর খান এবং টিটিসি মোড়ের কাবুলের দোকানেও একই ধরণের হুমকি-চাঁদাবাজি চালিয়েছে শাহেদ। তারা বলেন,অন্য ব্যাবসায়ীরা থানায় অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ আমারা আর কি করবো।

অভিযুক্ত শাহেদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করলে তার সাথে যোগাযোগ করা যায় নাই,তার মুঠোফোন কল করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পৌর যুবদলের সভাপতি মিজান বলেন, “শাহেদ আমার লোক ওর মা নেই এ কারনে আমি ওকে দেখে শুনে রাখি এক দুইশো টাকা তা দিয়ে চলে। কামারগ্রাম আমার পৌরসভার বাইরে।” তবে তাকে নিজ হাতে পুলিশি উপস্থিতিতে ছাড়িয়ে নেওয়ার প্রশ্নে কোনো স্পষ্ট উত্তর দেননি তিনি।বলেন এ গুলা নিয়ে গেম চলছে।

আলফাডাঙ্গা থানার ওসি শাহজালাল আলম বলেন“আমি ৯৯৯থেকে ফোন পেয়ে ফোর্স পাঠাই,তারা গেলে স্থানীয়রা মিমাংসা করে দিবে বিধায় আমাদের টিম চলে আসে তবে আমি জানতামনা যে এই সেই শাহেদ,আমার অফিসার এসে ও বলে নাই যে এই সেই শাহেদ এখন জানলাম খোজ খবর নিয়ে দেখছি।”

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে এমন হুমকি-চাঁদাবাজির ঘটনায় আতঙ্কে আগেভাগেই দোকান বন্ধ করতে হয়। অভিযোগ করার পরেও পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় শাহেদ দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

 

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:০৬:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
১৫৩
Translate »

সেই কথিত যুবদল নেতা আবার চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক। নীরব পুলিশ!

আপডেট : ০৩:০৬:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

গোপালপুর বাজারে আবারও আলোচনায় কথিত যুবদল নেতা শাহেদ। পারিবারিক বিরোধের মীমাংসার নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বাজারজুড়ে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছেন জুয়েল মোল্লার ছেলে এই যুবক, যিনি নিজেকে গোপালপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে থাকেন—যদিওএর আগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুবদলের সভাপতি জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে কোনো কমিটিই নেই।

কথিত যুবদল নেতা শাহেদ

ঘটনার সূত্রপাত ১৫ জুন রাত ১০টার দিকে। ফয়সাল নামের এক মুরগি ব্যবসায়ীর পারিবারিক বিরোধের জেরে শাহেদ ও তার প্রায় ১০ জন সহযোগী ফয়সালের দোকানে এসে তাকে বাইরে যেতে বলেন। ফয়সাল দোকানেই অবস্থান করলে তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, মীমাংসা না করলে “খবর আছে”।

পরদিন ১৬ জুন সকাল ১০টার দিকে আবারও দোকানে গিয়ে ফয়সালকে না পেয়ে তার বাবা মুল্লুক চান ওরফে মুন্নুর কাছে শাহেদ বলেন, “চাচা, কিছু টাকা দেন, সব ঠিক হয়ে যাবে, না হলে ঝামেলা হবে।” বিকেলে আবার আসে, ফেরার পর টাকা না পেয়ে মুল্লুক চানকে ধাক্কা মেরে ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা নিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার। চিৎকার শুনে বাজারের লোকজন ছুটে এসে শাহেদকে আটক করে, তবে তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

পরিস্থিতি থমকে যায়নি এখানেই। ফয়সাল ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাইলে, পুলিশের আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান আলফাডাঙ্গা পৌর যুবদলের সভাপতি মিজান ও তার লোকজন। পরে পুলিশ এলে মিজানের ‘ম্যানেজিং’ এ শাহেদকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ফয়সাল বলেন, “আমার পারিবারিক সমস্যাকে ঘিরে জোর করে টাকা দাবি করেছে। দোকানে না থাকায় বাবাকে হুমকি দিয়ে দোকানে এসে আমার বাবাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বাক্স থেকে টাকা নিয়েছে। আমরা থানায় জানিয়েছি কিন্তু প্রতিকার পাচ্ছি না।”

শুধু এই ঘটনাই নয়, এর আগে ৯ জুন কামারগ্রামের মুদি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের দোকানে গিয়ে সিগারেট না থাকায় পিস্তল ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে শাহেদ। ড্রয়ার ভেঙে টাকা নিয়ে চলে যায়। ফয়সালের মতো রফিকুলও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

পাশাপাশি ঈদের সময় বাড়ি বেড়াতে আসা এক গার্মেন্টস কর্মী কাওসার খানকেও রাস্তা আটকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে শাহেদের বিরুদ্ধে।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, কাপড় ব্যবসায়ী জয়, কাঁচামালের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর খান এবং টিটিসি মোড়ের কাবুলের দোকানেও একই ধরণের হুমকি-চাঁদাবাজি চালিয়েছে শাহেদ। তারা বলেন,অন্য ব্যাবসায়ীরা থানায় অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ আমারা আর কি করবো।

অভিযুক্ত শাহেদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করলে তার সাথে যোগাযোগ করা যায় নাই,তার মুঠোফোন কল করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পৌর যুবদলের সভাপতি মিজান বলেন, “শাহেদ আমার লোক ওর মা নেই এ কারনে আমি ওকে দেখে শুনে রাখি এক দুইশো টাকা তা দিয়ে চলে। কামারগ্রাম আমার পৌরসভার বাইরে।” তবে তাকে নিজ হাতে পুলিশি উপস্থিতিতে ছাড়িয়ে নেওয়ার প্রশ্নে কোনো স্পষ্ট উত্তর দেননি তিনি।বলেন এ গুলা নিয়ে গেম চলছে।

আলফাডাঙ্গা থানার ওসি শাহজালাল আলম বলেন“আমি ৯৯৯থেকে ফোন পেয়ে ফোর্স পাঠাই,তারা গেলে স্থানীয়রা মিমাংসা করে দিবে বিধায় আমাদের টিম চলে আসে তবে আমি জানতামনা যে এই সেই শাহেদ,আমার অফিসার এসে ও বলে নাই যে এই সেই শাহেদ এখন জানলাম খোজ খবর নিয়ে দেখছি।”

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে এমন হুমকি-চাঁদাবাজির ঘটনায় আতঙ্কে আগেভাগেই দোকান বন্ধ করতে হয়। অভিযোগ করার পরেও পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় শাহেদ দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।